হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল : রূপা পথে পথে ঘুরছেন বাবার সন্ধানে। রূপা নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ছোট কালিয়া এলাকায় নানার বাড়িতে থাকেন। তাঁর বাবার নাম নুর ইসলাম মোল্লা।
তার বয়স যখন চার বছর। সেই সময় তার বাবা একদিন সবজি বিক্রি করতে খুলনায় যান। এরপর আর ফেরেননি। তাঁর কোনো ছবি নেই। চেহারাও পরিষ্কার মনে নাই। বাবার কথা যখন কেউ জিজ্ঞেস করে কলিজা ছিঁড়ে যায়। শ্বশুর বাড়িতে বাবার প্রসঙ্গ উঠলেই কটু কথা শোনায়। অথচ বাবা তাদের সাথেই ছিলেন। নানা বাড়ি এলাকায় থেকে ব্যবসা করতেন। কত মানুষ চেনে তাঁকে। সব সময় তার কথা মনে পড়ে। নানা কারণে তাঁর খোঁজ করা হয়নি। ইদানিং খুব বেশি মনে পড়ে বাবার কথা। তাই বাবাকে খুঁজতে চাটমোহরে গিয়েছেন রূপা। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রূপা খাতুন (২৫)।
জানা গেছে, প্রায় ৪০ বছর আগে তার বাবা নুর ইসলাম মোল্লা চাটমোহর থেকে কালিয়ার শুক্তগ্রামে আসেন। সেখানে গফফার আলী নামে এক ব্যক্তির আশ্রয়ে ছিলেন। পরে ছোট কালিয়া গ্রামের আলতাফ মোল্লার মেয়ে রহিমা বেগমকে (রূপার মা) বিয়ে করেন। বিয়ের পর আলতাফ মোল্লার বাড়িতে স্ত্রীসহ বসবাস করছিলেন। কালিয়ায় সবজী বিক্রির দোকান দেন। বড় কালিয়া এলাকায় ৬ শতাংশ জমিও কেনেন। নুর ইসলাম মোল্লা এবং রহিমা বেগমের সংসারে রূপা খাতুন এবং নুরজাহান নামে দুই সন্তানের জন্ম হয়। ভালই কাটছিল তাদের দিন। চৌদ্দ থেকে পনেরো বছর বসবাসের পর রূপার তখন চার বছর বয়স। একদিন পাতা কপি বিক্রি করতে খুলনায় যান নুর ইসলাম মোল্লা। এরপর আর ফেরেননি। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেও রূপার মা ও মামারা তাঁর সন্ধান পাননি।
অভিমানে রহিমা বেগম স্বামীকে খুঁজতে যাননি চাটমোহরে। শুধু এটুকু শুনেছেন নুর ইসলাম মোল্লার বাড়ি চাটমোহরের দিয়ারা নামের কোনো গ্রামে। রহিমা বেগম তার মেয়ে রূপা ও নুরজাহানকে নিয়ে ভাইয়ের আশ্রয়ে রয়েছেন। দুই মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। রূপা বলেন, তার বাবার বয়স এখন ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হবে। পাঁচ ফিট ছয় ইঞ্চি লম্বা। মুখে হালকা চাপ দাড়ি ছিল। বাবার কোন ছবি নেই তাদের কাছে। তার বাবা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন চাটমোহরে তাদের বাড়ি। এটা সত্য না মিথ্যা তা তার জানা নেই। তিনি বেঁচে আছেন না কি মরে গেছেন তাও জানেন না। শুনেছেন তার দাদার নাম আব্দুল মোল্লা। বাবাকে খুঁজে না পেলে জীবনে তার অনেক বড় কষ্ট থেকে যাবে। তাই রূপা তার বাবাকে খুঁজে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাবার সন্ধানে পথে পথে ঘুরছেন রূপা
Leave a comment