তালা প্রতিনিধি : কখনও পিবিআই কর্মকর্তা কখনও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এভাবে নানা প্রতারনার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সবুজ চৌধুরী (৩৮) নামে এক প্রতারক। তার এই প্রতারণার শিকার হয়ে ইতিমধ্যে বিচার চেয়ে আদালতের দারস্থ হয়েছে তালার সেলিম সরদার নামে এক ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত সবুজ চৌধুরীর খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মালতিয়া গ্রামের মৃত দেব শেখর রায় চৌধুরীর ছেলে।
ভুক্তভোগী তালা উপজেলার কাশিয়াডাঙা এলাকার বাসিন্দা সেলিম সরদার জানান, বছর খানেক আগে তার সাথে ভুয়া পিবিআই কর্মকর্তা পরিচয়ে সখত্যা গড়ে তোলে সবুজ। এরপর তার পারিবার জমি-জায়গার সমস্যাসহ একটি মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা বলে সাড়ে ৩লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপরে টাকা নিয়ে নানা তালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বিষয়টি বুঝতে পেরে চলতি বছরের ২ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা (যার নং- ৬০/২৩) করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় দীর্ঘ ২মাস কারাভোগ শেষে জামিনে মুক্তি পায় সে। পরে মামুন নামে এক বন্ধুর কাছে চীফ-জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের পরিচয় দিয়ে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপরে প্রতরণার বিষয়টি তিনিও বুঝতে পারেন। বর্তমানে প্রতারক সবুজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানায় অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
কেশবপুর এলাকার মামুন নামে ভুক্তভোগী জানান, মাস তিনেক আগে তার সাথে সবুজের। প্রথম সাক্ষাতে সবুজ নিজেতে চীফ-জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট পরিচয় দেয়। এরপরে প্রতরাণার ফাঁদ পেতে মামুনের ব্যক্তিগত মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া কথা তার কাছ থেকে তিন কিস্তিতে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপরে তিনি প্রতারক সবুজ চৌধুরি পরিচয়টি নিশ্চিত হন। বর্তমানে তিনিও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরার কাটিয়া এলাকার রেখা বৈরাগী নামে এক স্কুল শিক্ষিকা জানান, নয় মাস আগে তার সাথে পরিচয় হয় সবুজ চৌধুরীর। এরপর চাকরির পদোন্নতির কথা বলে তার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে কথা মত কাজ না করায় প্রতারক সবুজের কাছে টাকা ফেরত চাইলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোয় হুমকি দেয়। এ ঘটনায় তিনি জেলা পুলিশ সুপারসহ সংক্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সবুজ চৌধুরী জানান, আমি কোন সরকারী চাকুরী করিনা। তবে সেলিমের সাথে পরিচয় হওয়ার সুবাদে একটি ঘটনা অনাকাংখিতভাবে ঘটে গেছে। এজন্য তিনি জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মামলা চলমান রয়েছে বিষয়টিও তিনি অপকটে স্বীকার করেন। এছাড়া বিভিন্ন পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশালে এড়িয়ে গিয়ে তিনি মুঠোফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।