মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের(এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নওয়াপাড়া-সুন্দলীর প্রায় পাঁচ কি:মি: দৈর্ঘ্যরে পাকা সড়কটি পুন:নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের খোয়া, বালু ও পাথর ব্যবহার করে বক্স(ম্যাকাডাম) ও কার্পেটিং সার্ফেস তৈরীর অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে নির্ধারিত পরিমানের পরিবর্তে স্বল্প পরিমান বিটুমিনের ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও নকসা বহির্ভূতভাবে বেজ ছাড়াই আরসিসি গাইডপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। ফলে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। যে কারনে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে উন্নতমানের সামগ্রি ব্যবহার করে পুনরায় সড়ক নির্মানের তাগিদ দিয়ে দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে চিঠি ইস্যু করেছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)এর মাধ্যমে চলতি অর্থবছরে পাঁচ কোটি ৫২ লাখ ৩১৩ টাকা বরাদ্দে মনিরামপুর ভায়া নওয়াপাড়া সুন্দলী পাকা সড়কের প্রায় পাঁচ কি:মি:( চার হাজার ৭৬৫ মিটার) দৈর্ঘ্যের পুন:নির্মানের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। মনিরামপুর পৌরশহরের ঢাকুরিয়া মোড় থেকে শুরু হয়ে হরিদাসকাটি ঋষিপল্লীর পূর্বপাশ পর্যন্ত তিন গ্রুপের কাজটি পান চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার মেসার্স জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স লি:, যশোরের চৌগাছা উপজেলার মেসার্স ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আসিফ এন্টারপ্রাইজ নামে তিন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সে মোতাবেক ওয়ার্কঅর্ডারের পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজ শুরু করে গত এক সপ্তাহ আগে সমাপ্তি করেন।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে তিন গ্রুপের মধ্যে এক নম্বর গ্রুপ মেসার্স জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স এবং তিন নম্বর গ্রুপ মেসার্স আসিফ এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে কাজদুইটি কিনে বাস্তবায়ন করছেন যশোরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বনান্তর এন্টরপ্রাইজ। ইতিমধ্যে সড়কের দুপাশ সম্প্রসারিত করে মাটি কেটে খোয়া ও বালু ব্যবহার করে বক্স বা ম্যাকাডাম তৈরী এবং পাথর দিয়ে কার্পেটিং সার্ফেস তৈরীর পর পিচ(বিটুমিন) করা হয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের খোয়া,বালু, পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে এ নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও নকসা বহির্ভূতভাবে(বেজ ছাড়াই) সড়কের মোড়ে মোড়ে আরসিসি গাইডপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। ফলে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহার করায় এবং স্বল্প পরিমান বিটুমিন দেওয়ায় ইতিমধ্যে সড়কের পিচ(কার্পেটিং) উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী কয়েকবার প্রতিবাদ করেছেন।কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত না করে ওই নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে সড়ক নির্মান করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে কাজ করার শরিফ ব্রিক ফিল্ডের পূর্বপাশে কয়েকস্থানে পিচ(কার্পেটিং) উঠে গেছে। আবার একই দৃশ্য চোখেপড়ে হোগলাডাঙ্গা মোড়ে। হোগলাডাঙ্গা মাদ্রাসার সামনে দেখাযায় সড়কের মাঝখান ডেবে গেছে। এ সময় কৃষক আইয়ুব আলী অভিযোগ করে বলেন, নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে নির্মান করায় যা হবার তাই হয়েছে। আবদুল হামিদ নামে এক যুবক জানান, যথাযথভাবে দেখভাল না করায় ঠিকাদার নয়ছয় করেছে। হরিদাসকাটি ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সঠিকভাবে নির্মানের জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অথবা দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কোন কর্নপাত করেননি।
এ কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপসহকারি প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে বলেন, স্থানীয়রা যে অভিযোগ করছেন তা সব সঠিক নয়। তবে কিছু গড়িমশি হয়েছে। সে জন্য ঠিকাদারকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, বেজ ছাড়াই গাইডপোষ্ট নির্মান করা এবং কার্পেটিংয়ের সারফেস সঠিকভাবে সম্পন্ন না করায় ইতিমধ্যে দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকাউল্লাহ এন্ড ব্রাদার্স ও মেসার্স আসিফ এন্টারপ্রাইজের বিল প্রদান বন্ধ রেখে দ্রুত সঠিকভাবে কাজ সম্পন্নের তাগিদ দিয়ে গত ১৪ মে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
মনিরামপুরে সড়ক নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ
Leave a comment