By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: মাছের জেলা ‘সাতক্ষীরা’
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > মাছের জেলা ‘সাতক্ষীরা’
তাজা খবরসাতক্ষীরা

মাছের জেলা ‘সাতক্ষীরা’

Last updated: 2025/12/01 at 3:46 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : মাছের জেলা। গলদা ও বাগদা চিংড়ি থেকে শুরু করে ভেটকি, পারশে, টেংরা, রুই ও কার্প জাতীয় মাছসহ এমন কোন মাছ নেই-যা পাওয়া যায় না। খাল-বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড়সহ প্লাবণ ভূমিতে হয় মাছ চাষ। জেলার চাহিদা মিটিয়েও প্রতিবছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাখে সহায়ক ভূমিকা।
বলছি, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার কথা। এ জেলার বিখ্যাত অনেক কিছুর মধ্যে ‘চিংড়ি’ অন্যতম। তবে, শুধু যে চিংড়ি মাছ তা নয়, প্রতিনিয়ত রপ্তানিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে ভেটকি, পারশে, টেংরা, রুই ও কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২০ লাখ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম হিসেবে মাছের বার্ষিক চাহিদা ৩৫ হাজার ২শ’ ৪১ মেট্রিক টন মাছ। সেখানে জেলায় বার্ষিক উৎপাদন ১ লাখ ৩ হাজার একশত ৫৩ মেট্রিক টন মাছ। এ হিসেবে সাতক্ষীরা থেকে প্রতিবছর ৬৭ হাজার ৯শ’ ১২ মেট্রিক টন মাছ বিদেশে রপ্তানিসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে প্রায় এক হাজার ৫শ’ কোটি টাকা। মৎস্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে লক্ষাধিক মানুষ। যদিও চলতি বছর জেলার বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১৬ হাজার ৯শ ৪০ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে জেলার ৫০ হাজার ১৮টি পুকুরে ২০ হাজার ১০০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছ, ১৫ হাজার ৭শ’ ৭ মেট্রিক টন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, ১৬ হাজার ৭শ’ ৬৫ মেট্রিক টন রুই জাতীয় মাছ, ধান ক্ষেতে এক হাজার ২শ’ ৮০ মেট্রিক টন সাদা মাছ, লবণাক্ত পানিতে ১৬ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন সাদা মাছ, এক হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন চাকা, চ্যামা ও হরিণাসহ অন্যান্য মাছ, ৪৩টি নদীতে ৮৪০ মেট্রিক টন, ৪শ’ ৬টি খালে এক হাজার ২শ’ ১৩ মেট্রিক টন, ৪টি বিলে ৪৮ মেট্রিক টন, ৪টি বাওড়ে ১৯২ মেট্রিক টন ও ৮টি প্লাবণ ভূমিতে ৪২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়।
জেলায় এসব মাছ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে গড়ে উঠেছে ২৮টি হ্যাচারি, ২৬৭টি নার্সারি, ৬টি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, ৩২টি আড়ৎ, ৩১৫টি ডিপো, ৪৪টি বরফ কল, ১৫টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও ৫৮টি পাইকারী মৎস্য বিপণন কেন্দ্র।
তবে, মৎস্য খাতে চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদানে জনবল বাড়ানো, চাষীদের প্রশিক্ষণ ও এ খাতে খামারীদের ভর্তুকি প্রদান করে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম বলেন, “কৃষিখাতে পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে এক/দু’জন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে। কিন্তু মৎস্যখাতে এ ধরনের কাউকে কাছে পাওয়া যায় না।” এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
অন্যদিকে আশাশুনির শোভনালী গ্রামের মৎস্য চাষী উদয় মন্ডল বলেন, “আমরা যারা মাছ চাষ করি তাদের ভতুর্কি দেওয়া হয় না। যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তার মূল্য দিতে হয় বাণিজ্যিক রেটে। সব সময় আমরা বৈষম্যের শিকার হই।”
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, “মৎস্য উৎপাদনে সাতক্ষীরা একটি সম্ভাবনাময় জেলা। মৎস্য খাতে চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদানে জনবল বাড়ানো, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ এ খাতে খামারীদের ভর্তুকি প্রদান করে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের জেলা ও উপজেলা অফিসে চার/পাঁচজন ছাড়া কোন জনবল নেই। অনেক সময় বিভিন্ন পরীক্ষা, মোবাইল কোর্টসহ অন্যান্য সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সেবা ও পরামর্শ পেতে মৎস্যচাষীদের বেগ পেতে হয়।”
এছাড়া কৃষিখাতের মতো মৎস্যখাতে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়টি ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
মাছের জেলা। গলদা ও বাগদা চিংড়ি থেকে শুরু করে ভেটকি, পারশে, টেংরা, রুই ও কার্প জাতীয় মাছসহ এমন কোনো মাছ নেই- যা পাওয়া যায় না।

খাল-বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড় এমনকি প্লাবনভূমিতেও হয় মাছের চাষ। জেলার চাহিদা মিটিয়েও প্রতি বছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাখে সহায়ক ভূমিকা।

জেলাটি হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এ জেলার বিখ্যাত অনেক কিছুর মধ্যে চিংড়ি অন্যতম। তবে, শুধু চিংড়ি নয়, প্রতিনিয়ত বিদেশে রফতানিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে ভেটকি, পারশে, টেংরা, রুই ও কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২০ লাখ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫০ গ্রাম হিসেবে মাছের বার্ষিক চাহিদা ৩৫ হাজার ২৪১ মেট্রিক টন। সেখানে জেলায় বছরে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ এক লাখ তিন হাজার ১৫৩ মেট্রিক টন।

এ হিসেবে সাতক্ষীরা থেকে প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিভিন্ন দেশে  ৬৭ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন মাছ পাঠানো হয়। যা থেকে আয় হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। মৎস্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন লক্ষাধিক মানুষ।

চলতি বছর জেলার বার্ষিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন মাছ।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে জেলার ৪৯ হাজার ১৬৩টি ঘেরে ২০ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন বাগদা ও ১১ হাজার ৫২২টি ঘেরে পাঁচ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। যা চলতি বছর ২৯ হাজার ৫শ’ ৯০ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া ২০১৪ সালে জেলার ৫০ হাজার ১৮টি পুকুরে ২০ হাজার ১০০ মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ, ১৫ হাজার ৭০৭ মেট্রিকটন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, ১৬ হাজার ৭৬৫ মেট্রিকটন রুই জাতীয় মাছ, ধানখেতে এক হাজার ২৮০ মেট্রিকটন সাদা মাছ, লবণাক্ত পানিতে ১৬ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন সাদা মাছ, এক হাজার ৮০০ মেট্রিকটন চাকা, চ্যামা ও হরিণাসহ অন্যান্য মাছ, ৪৩টি নদীতে ৮৪০ মেট্রিকটন, ৪০৬টি খালে এক হাজার ২১৩ মেট্রিকটন, চারটি বিলে ৪৮ মেট্রিকটন, চারটি বাওড়ে ১৯২ মেট্রিকটন ও আটটি প্লাবনভূমিতে ৪২ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদিত হয়।

জেলায় এসব মাছ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে গড়ে উঠেছে ২৮টি হ্যাচারি, ২৬৭টি নার্সারি, ছয়টি মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র, ৩২টি আড়ত, ৩১৫টি ডিপো, ৪৪টি বরফ কল, ১৫টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও ৫৮টি পাইকারি মৎস্য বিপণন কেন্দ্র।

তবে, মৎস্য খাতে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদানে জনবল বাড়ানো, চাষিদের প্রশিক্ষণ ও এ খাতে খামারিদের ভর্তুকি দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের আসাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কৃষিখাতে পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে এক থেকে দুইজন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। কিন্তু মৎস্যখাতে এ ধরনের কাউকে কাছে পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

আশাশুনির শোভনালী গ্রামের মৎস্যচাষি উদয় মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যারা মাছ চাষ করি, তাদের ভর্তুকি দেওয়া হয় না। যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি, তার মূল্য দিতে হয় বাণিজ্যিক রেটে। সব সময় আমরা বৈষম্যের শিকার হই।

জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে জনবল রয়েছে চার থেকে পাঁচজন করে। অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন পরীক্ষা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সেবা ও পরামর্শ পেতে মৎস্য চাষিদের বেগ পেতে হয়।

তিনি বলেন, মৎস্য উৎপাদনে সাতক্ষীরা একটি সম্ভাবনাময় জেলা। মৎস্যচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সেবা দিতে জনবল বাড়ানো জরুরি। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে এ খাতে ভর্তুকি বাড়ালে মৎস্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।

কৃষিখাতের মতো মৎস্যখাতে ভর্তুকি দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় সাদা মাছ চাষে বিপ্লব ঘটেছে। অর্থনীতিতে সুবাতাস বইছে। আর এ সাদা প্রজাতির মাছ চাষ মিঠা পানি প্রবাহ হতে বিস্তৃত ঘটে লবণাক্ত চিংড়ী ঘেরকে উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হতো।
সাতক্ষীরায় চিংড়ী শিল্পের জন্য বিশেষ সুনাম এবং সুখ্যাতি থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাতক্ষীরায় সাদা মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারের চাহিদা পূরণ করছে। রুই, মৃগেল, কাতলা, ট্যাবলেট, সিলভারকার্প, মিনার কার্পসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ কয়েক বছর পূর্বেও বসতবাড়ি সংলগ্ন পুকুরে পারিবারিক প্রয়োজনে, আতিথেয়তার কল্যাণে চাষ করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে সাদা মাছ চাষের ক্ষেত্র এতটুকু বিস্তৃত ঘটেছে যে এবং অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে যে কারণে দিনে দিনে এই চাষে অধিকতর আগ্রহী হচ্ছে চাষীরা। সাতক্ষীরায় চাষ মাছ উৎপাদনের প্রাথমিক মাধ্যম রেনু পোনাও উৎপাদন হচ্ছে। বছর কয়েক পূর্বে জেলার কলারোয়া উপজেলা দৃশ্যত সাদা মাছের রেনু উৎপাদন করা হতো এবং উক্ত রেনু সাতক্ষীলার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হতো, কিন্তু বর্তমান সময়ে জেলার কলারোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার চাষীরা রেনু উৎপাদন করত এবং উক্ত রেনু সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে জেলার কলারোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার চাষীরা রেনু উৎপাদন করছে। যে কারণে সাদা মাছ চাষে খরচ কম হচ্ছে এবং উৎপাদন অধিক হচ্ছে। এক বিঘা, দুই বিঘা হতে শুরু করে দশ বিঘা পর্যন্ত ঘেরে ও জলাশয়ে রেনু পোনা অবমুক্ত করার পর চালাই (চাষীদের ভাষায়) হাল দশটা, পনেরটা কেজি তারপর বড় মাছ উৎপাদন কারী তথা চাষীরা সংগ্রহ পরবর্তী জলাশয়, পুকুর ও চিংড়ী ঘেরে অবমুক্ত করে তিন/ চার মাষের ব্যবধানে কেজি বা তারও বেশি ওজন হয়। সাতক্ষীরায় সাদা মাছ চাষে বিশষ বিপ্লব ঘটার অন্যতম কারণ জেলার হাজার হাজার লবণাক্ত চিংড়ী ঘেরগুলো সাদা মাছ উৎপাদনের মহাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সাধারণত লবনণাক্ত পানিতে রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলবারকাপসহ এই প্রকৃতির মাছ উৎপাদনের সুযোগ থাকে না, লবণাক্ততার কল্যাণে মৃত্যু বরণ করে।
কিন্তু তারপরও লবণাক্ত চিংড়ী ঘেরে সাদা মাছের সোনা ফলছে এভাবেই আষাঢ় শ্রাবণ মাসের বৃষ্টির পানির কল্যাণে ঘেরের লবণাক্ত পানি দুধ লবণ হয় অর্থাৎ সহনীয় লবণাক্ততায় পরিণত হয় যা অতি সহজেই সাদা প্রকৃতির মাছ নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারে। তিন/চার মাসের মধ্যে উক্ত মাছ ধরার ও বাজারজাত করণের সুযোগ সৃষ্টি করে। উৎপাদিত মাছের পাশাপাশি প্রকৃতিগত ভাবে অথবা একটি দুইটি বীজ বা মা মাছ ছাড়লে সেই থেকে অজস্র মাছের সৃষ্টি হয় এবং উৎপাদন ও অর্থনৈতিক মুল্য অধিকতর হয়। বিশেষ করে তেলাপিয়া, টেংরা, পারশে, খরখুল্লা, ভেটকি নাইলোটিকা প্রভৃতি। এ সকল মাছ সামান্য অবমুক্ত অথবা লবণাক্ত পানির জোয়ারের সাথে ঘেরের অভ্যন্তরে ডিম অনুপ্রবেশ করে। ইতিপূর্বে চিংড়ীর কল্যাণে জাতীয় অর্থনীতি সুসংহত হতো, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হতো স্থানীয় অর্থনীতিতে সুবাতাস বইতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো সাদা মাছের কল্যাণে সাতক্ষীরার অর্থনীতি সুসংহত হচ্ছে। স্থানীয় অর্থনীতিতে সুবাতাস বইছে। যার প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতে বইছে। সাতক্ষীরার বিপুল সংখ্যক মানুষ সাদা মাছ চাষে ও সাদা প্রজাতির মাছ ব্যবসায় নিয়োজিত। সাদা মাছের ব্যবসার ক্ষেত্র এতটুকু সম্প্রসারিত হয়েছে যে জেলার বিভিন্ন হাট বাজার মৎস্য সেট এমনকি ঘেরগুলো হতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ গাড়িতে জীবন্ত মাছ সংগ্রহ করে তা বৈধ পথে প্রতিবেশি দেশের বাজারে জীবিত অবস্থায় পৌঁছানো হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সাতক্ষীরার সাদা মাছ চাহিদা মেটাচ্ছে। বিশেষ ভাবে আলোচিত, আলোকিত হচ্ছে সাতক্ষীরা।
পাবদা মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছে সাতক্ষীরার মৎস্য চাষীরা। মাত্র ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে বিক্রির উপযুক্ত হওয়ায় বছরে দুই বার চাষ করা যায় এ মাছ।
বিদেশেও চাহিদা রয়েছে এ মাছের। এছাড়া খরচের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় অন্য মাছ চাষের তুলনায় লাভও বেশি এ মাছ চাষে। ফলে এ মাছ চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে সাতক্ষীরার মৎস্য চাষী।
মৎস্য চাষীরা জানান, অল্প সময়ে অধিক উৎপাদন হওয়ায় পাবদা মাছ চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের। একটি নির্দিষ্ট জমিতে সাদা মাছ চাষ করে যে উৎপাদন পাওয়া যায় সেই একই পরিমান জমিতে পাবদা মাছ চাষ করলে সাদা মাছের তিনগুনেরও বেশি মাছ উৎপাদন পাওয়া যায়। তবে ভালো উৎপাদন পেতে হলে সাদা মাছের তুলনায় পাবদা মাছের একটু বাড়তি পরিচর্যা করতে হয়। এছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাবদার সাথে সাদা মাছের মিশ্র চাষের ফলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান এখানকার মৎস্য চাষীরা। অন্য মাছের তুলনায় পাবদা মাছের উৎপাদন বেশি আবার একই জমিতে বছরে দুই বার চাষ করা যায় বলে এ মাছ চাষ করে কৃষকরা লাভবানও হচ্ছেন। শুধু দেশের বাজারেই নয় বিদেশেও এর চাহিদা রয়েছে ফলে চিংড়ির পাশাপাশি পাবদা মাছ রপ্তানী করে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধিতেও এটি গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের নাজমুল হুদা জানান, তিনি ২০১৮ সালে লেখাপড়া ছেড়ে মৎস্য ব্যবসা শুরু করেন। ৬ বিঘা জমিতে পাবদা মাছ চাষ শুরু করে এখন ৪টি খামারের মালিক তিনি। এ তরুণ উদ্যোক্তা পাবদা মাছ চাষ করে এখন সাড়া ফেলেছেন। তার সফলতা দেখে অনেকেই মৎস্য উদ্যোক্তা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। সারা দেশে সরবরাহের পাশাপাশি ভারতের বাজারও দখল করেছে তার খামারের পাবদা মাছ। খেতে সুস্বাধু হওয়ায় দেশসহ বিদেশেও চাহিদা রয়েছে এ মাছের। আকার ভেদে পাবদা মাছ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি আরো জানান। আর তাই চাকুরির পিছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি।
একই গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মাও. রেজাউল ইসলাম জানান, ১০ বিঘা জমিতে পাবদা চাষে তার মোট খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ লক্ষ টাকা। ৪ থেকে ৫ মাস পর এখান থেকে তার পাবদা মাছ বিক্রি হবে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা হিসেবে মৎস্য সম্পদে একটি উদ্বৃত্ত জেলা। এ জেলায় ১ লক্ষ ৪৯ হাজার মেট্রিকটন চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদন হয়। এখানে চিংড়ি মাছের পাশাপাশি সাদা মাছের উৎপাদনও লক্ষনীয়। প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ সাতক্ষীরা জেলায় উৎপাদন হচ্ছে। এখানে পাবদা ও তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, ইদানিং সাতক্ষীরা সদর, তালা ও কলারোয়া উপজেলায় পাবদা মাছ বেশী উৎপাদন হচ্ছে কারণ এটা বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে এটি বেশী যাচ্ছে। রপ্তানী হওয়ার কারনে চাষীরা ও ভালো দাম পাচ্ছেন। প্রতি কেজি ৩’শ থেকে সাড়ে ৩ ’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীরা খুব স্বল্প সময়ে ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে লাভ তারা তাদের ঘরে তুলতে পারছেন। আর তাই লাভজনক হওয়ায় পাবদা মাছের চাষ সাতক্ষীরায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশে রপ্তানী যোগ্য হওয়ায় মৎস্য অফিস থেকে চাষীদের পাবদা চাষে উদ্বুদ্ধসহ তাদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে আরো জানান এ মৎস্য কর্মকর্তা।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চিংড়ির সুনাম ছিল একসময়। কিন্তু করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে বিশ্বে বাংলাদেশের চিংড়ি বাজার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল। তবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাতক্ষীরায় গলদা চিংড়ি চাষ রফতানি বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। চলতি মৌসুমে এ জেলা উৎপাদিত গলদা চিংড়িতে ৭৭০ কোটি টাকা রফতানি আয় করেছে। একই সঙ্গে উৎপাদনও বেড়েছে গত মৌসুমের তুলনায় এক হাজার টন। আগামীতে রফতানি ও উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি মাছ চাষ করা হয়। এসব চিংড়ি হচ্ছে বাগদা, গলদা, হরিণা, চাকা ও চেমনি প্রভৃতি। তবে বাগদায় ভাইরাস বা অন্যান্য সংক্রামক বেশি থাকায় এ জেলায় গলদা চিংড়ি চাষে চাষীদের আগ্রহ বেশি। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারেও রয়েছে গলদা চিংড়ির ব্যাপক চাহিদা। চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর পরিমাণ ঘেরে গলদা চিংড়ি চাষ হয়, যা গত মৌসুমের তুলনায় দুই হাজার হেক্টর বেশি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রইচপুর গ্রামের গলদা চিংড়ি চাষী গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি এক দশক ধরে মিঠাপানির সাদা মাছের পাশাপাশি গলদা চিংড়ি উৎপাদন করেন। চলতি মৌসুমে ৩০ বিঘা জমির ঘেরে গলদা উৎপাদন করেন। জমির লিজ, রেণু পোনা ক্রয়, খাদ্য ও শ্রমিকের মজুরির টাকা উঠিয়েও ৮ লাখ টাকা লাভ হয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘‌গত মৌসুমেও একই পরিমাণ ঘেরে গলদা চিংড়ি চাষ করে ৬ লাখ টাকা লাভ হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘‌বাগদা চিংড়ির তুলনায় গলদা চিংড়ি উৎপাদনে ঝুঁকি কম। তাছাড়া এর গ্রোথ বেশি, দামও ভালো পাওয়া যায়। যে কারণে আগামীতে আরো বড় পরিসরে গলদা চাষ করব।’
তবে চাষীরা গলদা চিংড়ি উৎপাদনে তাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরেছেন। তারা জানান, গলদার রেণু পোনা সংগ্রহে অনেক জটিলতা রয়েছে। নদী বা সুন্দরবন থেকে পোনা আহরণ নিষিদ্ধ। তাছাড়া কিছু পোনা অবৈধ উপায়ে ভারত থেকে আসে। এছাড়া সামান্য কিছু পোনা আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। এসব মিলিয়ে চাহিদার তুলনায় গলদা রেণু পোনা অপ্রতুল। এ সংকট সমাধানে চাষীরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ চিংড়ি চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাতক্ষীরার বিশিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী আবুল কালাম বাবলা জানান, রফতানিতে বাগদার পাশাপাশি গলদা চিংড়িতেও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে সাতক্ষীরায়। তবে গলদার রেণু পোনা সংগ্রহে অনেক জটিলতা রয়েছে। গলদা উৎপাদন বাড়াতে হলে এর রেণু পোনা উৎপাদনে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আগামীতে পোনা সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর পরিমাণ ঘেরে গলদা চিংড়ি চাষ হয়, যা গত মৌসুমের তুলনায় দুই হাজার হেক্টর বেশি।
তিনি আরো জানান, ‌এ পরিমাণ ঘেরে গলদা উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার টন। যার আনুমানিক রফতানি বাজারমূল্য ৭৭০ কোটি টাকা। গত মৌসুমে জেলায় গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয় ১০ হাজার টন। সে তুলনায় চলতি মৌসুমে গলদা চিংড়ি উৎপাদন বেড়েছে এক হাজার টন।
সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ি দেশের রফতানি আয়ের অন্যতম খাত। কম খরচে অধিক লাভ, পোনা ও লোনাপানির সহজলভ্যতা ও বিদেশে বাজার সৃষ্টি হওয়ায় আশির দশক থেকে উপকূলীয় জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর ও নড়াইলে ব্যাপক শুরু হয় চিংড়ি চাষ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, এর মধ্যে কেবল সাতক্ষীরায় ৬০ ভাগ চিংড়ি উৎপাদন হতো।
জলাবায়ুর পরিবর্তনের ফলে চিংড়ি ঘেরে ভাইরাসসহ নানা রোগে প্রায় এক দশক চিংড়ি উৎপাদন নিম্নমুখী। করোনা মহামারী ও বিশ্ব মন্দার প্রভাবেও লোকসান গুনতে হচ্ছে খাতসংশ্লিষ্টদের। এছাড়া লোনাপানির আগ্রাসনে জেলার জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে অনেকে চিংড়ি চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় জেলার চাষীদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে মিঠাপানির মাছ।
চিংড়ির তুলনামূলক ঝুঁকি কম থাকায় সাতক্ষীরায় মিঠাপানির মাছ চাষ বাড়ছে। অনেক চিংড়ি চাষী মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। জেলায় বর্তমানে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা, কালিবাউস, ব্লাককার্প, বাটা, মনোসেক্স ও জাপানি রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মিঠাপানির মাছ চাষ হচ্ছে। ফলে বছরে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হচ্ছে। মৎস্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, জেলার কমপক্ষে পাঁচ লাখ মানুষের সরাসরি জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে সাদা বা মিঠাপানির মাছ উৎপাদন করে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ৬০ হাজার হেক্টর পরিমাণ জমির ৬৩ হাজার ২০০টি ঘেরে মিঠাপানির মাছ চাষ হচ্ছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৩০ হাজার টন। ২০০ টাকা কেজি দরে গড় দেশীয় বাজার মূল্য ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
গত বছর একই পরিমাণ ঘেরে মিঠাপানির  মাছ উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার টন। যার বাজার মূল্য ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দুই-তিন বছরের ব্যবধানে জেলায় মিঠাপানির মাছ উৎপাদন বেড়েছে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ।
সাতক্ষীরার সদর উপজেলার জেয়ালা গ্রামের মৎস্যচাষী আব্দুল গফুর জানান, ১২ বছর ধরে চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ চাষ করে আসছেন, কিন্তু চিংড়ি চাষে অব্যাহতভাবে লোকসান করার পর গত সাত-আট বছর ৮০ বিঘা পরিমাণ জমির ঘেরে মিঠাপানির মাছ চাষ করছেন। উন্নত জাতের রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভার কার্প, বাটাসহ অন্যান্য প্রজাতির সাদা মাছ উৎপাদন করেন তার ঘেরে। জমির লিজ মূল্য, মাছের পোনা ক্রয়, খাদ্য, শ্রমিকের বেতনসহ অন্য খরচ উঠিয়েও বছরে ২৫-৩০ লাখ টাকা লাভ হয় তার। এখন আর লোনাপানির চিংড়ি চাষ করেন না এ মৎস্য চাষী।
একই উপজেলার চুপড়িয়া এলাকার চাষী তানজির আহমেদ জানান, চার-পাঁচ বছর যাবত ৪৫ বিঘা পরিমাণ জমির ঘেরে বিভিন্ন ধরনের মিঠাপানির মাছ চাষ করেন। এর মধ্যে রয়েছে রুই, কাতল, পাবদা, পাঙাশ, কালিবাউস ও অন্য কার্পজাতীয় মাছ। গত মৌসুমেও একই পরিমাণ ঘেরে মিঠাপানির মাছ চাষ করেন। সব খরচ তুলে তার ১২ লাখ টাকা লাভ হয়। ফলে আগামীতে আরো বড় পরিসরে মিঠাপানির মাছের ঘের করবেন।
মিঠাপানির এসব মাছ কিনতে জেলার আড়তগুলোয় আসছেন অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ীরা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা মৎস্য আড়ত জেলার মধ্যে বৃহত্তম। এছাড়া সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার আড়ত, দেবহাটার গাজীরহাট আড়ত, আশাশুনি উপজেলার মহেশ্বরকাঠি আড়ত, খুলনা-বাইপাস সড়কের পাশে বকচরাসহ জেলার প্রায় ২৫০টি মৎস্য আড়ত ভোর থেকেই বেচাকেনা জমে ওঠে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রব জানান, জেলায় মিঠাপানির মাছ উৎপাদন বেড়েছে। জেলার প্রায় ২৫০ মৎস্য আড়তে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মিঠাপানির মাছ বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, চিংড়ি উৎপাদনে মৎস্যচাষীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিন্তু মিঠাপানির মাছ চাষে তেমন ঝুঁকি থাকছে না। ফলে দিন দিন বাড়ছে মিঠাপানির মাছ চাষ ও বাজার।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, জেলায় কার্পজাতীয় মিঠাপানির মাছের উৎপাদন ও বাজার প্রসার হচ্ছে। বিশেষ করে করোনার পর থেকে মিঠাপানির মাছ উৎপাদন বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির চাহিদার পাশাপাশি দাম কমে যাওয়ায় চাষীরা মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ছেন। তিনি আরো জানান, জেলায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মিঠাপানির মাছের দেশীয় বাজার তৈরি হয়েছে। এসব মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন বাড়াতে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চাষীদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি সহযোগিতা করা হচ্ছে। বর্তমানে এ জেলায় বছরে ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হচ্ছে। যার গড় দেশীয় বাজারমূল্য ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

জন্মভূমি ডেস্ক December 2, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article উপকূলের মানুষ বহুমাত্রিক ‌ঝুঁকি থেকে স্থায়ী সমাধান ‌ চায়
Next Article দশমিনায় আমন ধানের বাম্পার ফলন

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
বরিশাল

মঠবাড়িয়ায় অবৈধ জাল পেতে মাছ ধরায় দুই জেলের অর্থদণ্ড

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 minutes ago
খুলনা

ডুমুরিয়ায় বিলুপ্তির পথে গরু দিয়ে হালচাষ

By জন্মভূমি ডেস্ক 13 minutes ago
জাতীয়

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত ৩

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জাতীয়তাজা খবর

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার, বসেছে ব্যারিকেড

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা ‌পাউবোর কর্মকর্তা আ’ লীগ ক্যাডার ইমরানের খুঁটির জোর কোথায়?

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলের মানুষ বহুমাত্রিক ‌ঝুঁকি থেকে স্থায়ী সমাধান ‌ চায়

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?