রঞ্জন কুমার মল্লিক, মাদারীপুর : রমজান মাস শুরুর সাথে সাথে মাদারীপুরে তরমুজ, আনারসসহ মৌসুমী ফলের চাহিদা বেড়েছে। সেইসাথে বেড়েছে দামও। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতা। আমদানি কম আর পরিবহনের জ¦ালানী খরচ বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি আড়ৎদারদের। সিন্ডিকেটকারীদের কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রনে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার কথা জানায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের মোস্তফাপুরের ফলের আড়ত। সারি সারিভাবে রাখা তরমুজ, ফুটি, আনারসসহ মৌসুমী ফল। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয় কেনাবেচা। বরিশাল, যশোর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা আসেন এখানে ফল কিনতে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল থাকায় দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয় এই আড়ৎ। রমজান মাসে ফলের বেশ কদরও রয়েছে। কিন্তু ফলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ পাইকাররা। আমদানি কম আর পরিবহনে জ¦ালানী খরচ বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি আড়ৎদারদের।
জানা যায়, প্রকারভেদে তরমুজ প্রতিপিস ২৫০-৪৫০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আনারস প্রতিপিস ২৫-৫০ টাকা, ৪০-৯০টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস ফুটি। পেয়ারার কেজি ৩০-৬০ টাকা, বড়ই’র কেজি ২৫-৪০ টাকা। মোস্তফাপুরের অর্ধশত আড়তে প্রতিদিন কোটি টাকার ফল কেনাবেচা হয়। চাষিদের শতকরা ৬ টাকা ও পাইকারদের শতকরা দুইটাকা খাজনা দিতে হয় আড়াতদারের। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কোলঘেঁসে গড়ে উঠেছে মোস্তফাপুর ফলের আড়ৎ। দুর্ঘটনা রোধে আড়তের পাশে সার্বক্ষনিক ট্রাফিক ব্যবস্থা রাখার জোড় দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারী, পাইকার ও আড়তদাররা।
শরীয়তপুর থেকে ফল কিনতে আসা ব্যবসায়ী জামাল মাদবর বলেন, দাম বেশি হওয়ায় লাভ হচ্ছে না। ক্রেতাদের বেশি দামে ফল কিনতে এসে তর্কেবিতর্কে ছড়ায়। দাম কম হলে আমরাও বিক্রি করে প্রশান্তি পাই। কিন্তু রমজানের শুরুতেই এমন দাম হওয়ায় দিশেহারা ব্যবসায়িরা।
কাজীরহাট থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত সরবারহ রয়েছে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছি না। বেশি দামে কিনে, বেশি দামে বিক্রিও করা যায় না। আড়তে ফলের দাম একটু কম হলে ভাল হতো।
স্থানীয় আড়তদার কবির মাতুব্বর বলেন, বর্তমানে মৌসুমি ফলের সরবারহ কিছুটা কম। চাহিদা রয়েছে বাজারে। পরিবহন খরচ বেশি, জমিতে কিছু ফসল নষ্ট হওয়ায় দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। বর্তমানে মাদারীপুরের মস্তফাপুরে ৫৫ টি ফলের আড়ত রয়েছে। প্রতিটি আড়তে প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার ফল বেচাকেনা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর-এর মাদারীপুরের সহকারি পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বাজারে প্রতিনিয়তই ভোক্তা অধিকার কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছে। যদি কেউ সিন্ডিকেট করে বাজারে ফলের দাম বৃদ্ধি করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মাদারীপুরে রমজানে ফলের আড়তে বেড়েছে কেনাবেচা

Leave a comment