মিজানুর রহমান, মোরেলগঞ্জ : উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ‘ঘূর্ণিঝড়’ মিধিলির প্রভাবে চলতি আমন মৌসুমের ১০ হাজার একর প্রায় ৩০ হাজার বিঘার আমন ফসলের ধান এখন পানির নিচে হেলে রয়েছে। দুশ্চিন্তায় সাধারণ কৃষক। ঝড়ের দুই দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও ফসলি জমির মাঠের পানি নামছেনা। কয়েক হাজার মেট্রিক টন আমন ধানের ক্ষতির আশংকায় কৃষক।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি অনতিবিলম্বে সুইচ গেটগুলো খুলে দেওয়া, কচুরিপানা ও পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়া পানি নিস্কাশনের ছোট বড় খাল, নালায় পানি চলাচলের ব্যবস্থা করার। আবার প্রভাবশালীরা খাল আটকিকে রাস্তা নির্মানকৃত বাধগুলো অপসারন করার জোর দাবি তুলেছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রত্যন্ত গ্রামে শুক্রবার গভীর রাত থেকে প্রবল বর্ষণ ও ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির পানি জমে ফসলী মাঠে আমন ধানের হেলে পড়ে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গত ১দিন ধরে পানি পানি জমে থাকার কারনে হাজার হাজার কৃষক দুশ্চিন্তায় পড়েছে। হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের চর হোগলাবুনিয়া, বড় বাদুরা, ছোট বাদুরা, গুয়াবাড়িয়া গ্রাম সহ জিউধরা ইউনিয়নের কালিবাড়ি, একরামখালী, আড়ংঘাটা বহরবুনিয়ার ফুলহাতা, নারিকেলবাড়িয়া, ছাপড়াখালীর গ্রামের শত শত কৃষক দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
কথা হয় বারইখালীর ৮নং বাসিন্দাদের সাথে তারা জানান,খালে বাধ দিয়ে ফুসলি জমির মারত্মক ক্ষতি সাধন করছে। শত শত বিঘা জমি অনাবাদী রয়েগেছে, এখন আমন ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে আছে।পয়নিষ্কাশনের অভাবে আমদের এবছর অনাহারী থাকতে হবে মনে হয়। এছাড়া চরহোগলাবুনিয়া গ্রামের কৃষক মোশারেফ চৌকিদার ১০বিঘা, রেজাউল হাওলাদার ৫বিঘা জমিতে, কুদ্দুস ঘরামীর ৬বিঘা, হাগলাবুনিয়া গ্রামের সলেমান শিকদার ১০বিঘা, বাদশা চৌকিদার ৭বিঘা, শহিদুল হাওলাদার ৪বিঘা জমিতে এবারে আমনের চাষাবাদ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ এসব কৃষকেরা বলেন, আমন ধান ভালো হয়েছিলো কাম হবে কি? প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা ঝড়ে অধিকাংশ ফসলের ধান একদিকে ফেলে দিয়েছে অন্যদিকে পানির চাপে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশুর গো-খাদ্য খড়কুটাও এ বছর বাহির থেকে কিনে খাওয়াতে হবে।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে এ উপজেলায় এবারে ২৬ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করেছে কৃষক এরমধ্যে আগাম উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-২৩,১১ সাড়ে ৫হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২শ হেক্টর ধান কর্তন করে ঘরে তুলেছে কৃষক।
এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়’ মিধিলির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ আমনের মাঠ বনগ্রাম, হোগলাপাশা ও বলইবুনিয়া ৩টি ইউনিয়ন শনিবার তিনি নিজে পরিদর্শন করেছেন। তবে ১০ হাজার একর ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে ধান হেলে পড়েছে। সম্পুর্ন বিনষ্ট নয় ইতিমধ্যে ফসলি মাঠে জমে থাকা পানি নিস্কাশনের জন্য ¯সুইচগেট গুলো খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মোরেলগঞ্জে হাজার হাজার বিঘা আমন ধান পানির নিচে
Leave a comment