যশোর অফিস : যশোরের আদালত পাড়ার চিহ্নিত প্রতারক কখনো আইনজীবী আবার কখনো আইনজীবী সহকারী পরিচয়দানকারী মেহেদী হাসান জিল্লু এবার একজন আইনজীবীর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, টাকা না দেয়ায় ওই আইনজীবীর চেম্বারেই তাকে মারপিটও করেছেন জিল্লুসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
পরে সাধারণ আইনজীবীরা এসে জিল্লুকে ধরে জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জিল্লুকে আটকও করে। পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সমাঝোতার পর মুচলেকা নিয়ে জিল্লুকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। যা নিয়ে আদালত পাড়ায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। জিল্লুর বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ থাকার পরও কেনো তাকে ছেড়ে দেয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দকেও দোষারোপ করছেন তারা। যদিও সমিতির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সকলের সামনে ওই আইনজীবীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়া ও আদালত পাড়ায় না আসার শর্তে প্রথমবারের মত ক্ষমা করা হয়েছে জিল্লুকে। পরবর্তীতে এ ধরনের অপরাধ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী এড. বনি আমিন জানান,সকালে তিনি তার শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের ঈদগাহের সামনে অবস্থিত চেম্বারে বসে কাজ করছিলেন। এ সময় জিল্লু এক মক্কেলের পক্ষ নিয়ে কয়েকজনসহ তার চেম্বারে আসেন। এক পর্যায়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তার কাছে। গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করা হয় তাকে। পরে আকস্মিকভাকে তাকে মারপিট শুরু করে জিল্লু। পরে আইনজীবীরা পুলিশকে খবর দেন এবং জিল্লুকে ধরে সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিছু সময় পর জিল্লু ও তার পরিবার এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু মোর্তজা ছোট তার চেম্বারে আসেন। জিল্লু ক্ষমা চান। পরে সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জিল্লুকে মুক্তি দেয়া হয়।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, খড়কির পীরবাড়ি এলাকার জিল্লু অবৈধভাবে লিগ্যাল সলিউশন ল ফার্ম নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন। প্রথমে তিনি মুজিব সড়কের মতি সপিং মলে অফিস নেন। সেখানে প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে পরবর্তীতে পিটিআইতে অফিস খুলে বসেন। সেখানে সাধারণ মানুষকে আইনি সেবার নামে নানা প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তাদের মধ্যে একজন শহরের রেলগেট চোরমারা দিঘীর পাড় এলাকার ওয়াসিম আনছারী। তিনি অভিযোগ করেন, জিল্লু তাকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে আইনি সেবার কথা বলে অফিসে নিয়ে যান। পরে তার জমিজমা সংক্রান্ত একটি মামলার দায়িত্ব নেন জিল্লু। পরে কাজ না করে দলিলপত্র আটকে রেখে টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে একাধিকবার জিল্লুকে কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।