সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। শনিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তাকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
লাইলা পারভীন সেঁজুতি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মিঠাবাড়ী গ্রামের স ম আলাউদ্দীন এর মেয়ে। লায়লা পারভীন সেঁজুতি, যার পরিচয় একজন শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে। যিনি ইতোমধ্যে জীবন যুদ্ধের অর্ধেক সময় পার করে এসেছেন শিক্ষকতা ও মাঠের রাজনীতি করে। শুরু থেকে তৃণমূল মানুষের সাথে মিশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে তিনি গভীরভাবে জড়িয়ে আছেন। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক।
জীবনের উত্থান-পতন খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করার সুযোগ হয়েছে তার। তবে বড় বড় বিপদ, দু:খ, দুর্দশা আর হতাশা তাকে আটকে রাখতে পারেনি। সবকিছু উপেক্ষা করে তিনি দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আজ এসে দাঁড়িয়েছেন যোগ্য স্থানে। তার পিতা স. ম আলাউদ্দীনের এক যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে তিনি ফিরেছেন তার দেশের অবহেলিত দক্ষিণ জনপদে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন পেয়ে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে শপথ নিয়েছেন। দেশের আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ স্থান জাতীয় সংসদে তার জায়গা হয়েছে। তিনি এখন কথা বলবেন-এদেশের উপকূলীয় নারীদের পাশাপাশি মানুষের দু:খ, দুর্দশা নিয়ে। তিনি স্বপ্ন দেখবেন তার পিতার অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করার।
তার পিতা স ম আলাউদ্দীন ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সাতক্ষীরা অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়েছেন তিনি। নিজের জমি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন নগরঘাটার ইউনিয়নের কাপাসডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু পেশা ভিত্তিক মাধমিক বিদ্যালয়। একই সাথে আলাউদ্দীন দৈনিক পত্রদূত নামের একটি পত্রিকায় সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন।
নিজ পত্রিকা অফিসে কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাতে সন্ত্রাসীরা স ম আলাউদ্দীনকে গুলি করে হত্যা করে। আলাউদ্দীন হত্যা কান্ডে গোটা সাতক্ষীরা সে সময় সাধারন মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে সময় আলাউদ্দীন হত্যার তিব্র নিন্দা ও দোষীদের বিচারের আওয়াতায় আনতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সে সময় পিতার হত্যার বিচারের দাবীতে কিশোরী সেঁজুতি সেময় রাজ পথে সংগ্রাম শুরু করেন। জড়িয়ে পড়ে পিতার আদর্শের সংগঠন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। একই সাতে লেখাপড়া শেষ করে তার পিতার প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধু পেশাবিত্তিক মাধমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন।
তার মৃত্যুর পর পত্রিকাটি বন্ধের উদ্দেশ্যে নানা ষড়যন্ত্র হলেও সেটি সফল হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে সেঁজুতির সহযোদ্ধা সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং সেঁজুতির সম্পাদনায় নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে পত্রিকাটি আজও সাতক্ষীরার মানুষের প্রাণের পত্রিকা হিসেবে নিয়মিত প্রাকাশিত হয়ে আসছে।
লাইলা পারভীন সেঁজুতি শপথ নিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেন নি। তিনি নিজের অবস্থান তুলে ধরে বলেছেন সাতক্ষীরার নারীদের কল্যানে তিনি অবদান রাখবেন। তিনি সাতক্ষীরার জনপদকে তার পিতার মতো করেই আগলে রাখার কথা পু:ব্যক্ত করেন। স ম আলাউদ্ধীনের কন্যা লাইলাপারবীন সেঁজুতি কে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে মূল্যায়ন করায় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগসহ সাধারন মানুষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।