By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: রাজনীতিবিদদের পেশা এবং তাদের আচরণ মানবিক চায়‌ দেশের মানুষ
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > রাজনীতিবিদদের পেশা এবং তাদের আচরণ মানবিক চায়‌ দেশের মানুষ
তাজা খবরসাতক্ষীরা

রাজনীতিবিদদের পেশা এবং তাদের আচরণ মানবিক চায়‌ দেশের মানুষ

Last updated: 2025/12/01 at 3:20 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 1 day ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : রাজনীতি কি এবং কেন করতে হয়? আমাদের দেশের রাজনীতির যে ধারা চলছে, এ প্রেক্ষাপটে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। রাজনীতির সংজ্ঞা ব্যাপক এবং বিশ্লেষণ সাপেক্ষ ব্যাপার। এর যেমন পুস্তকীয় সঙ্গা রয়েছে, তেমনি অতি সরল সঙ্গাও রয়েছে। পুস্তকীয় ভাষায় রাজনীতির মূল কথা হচ্ছে, একটি রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, তার সাংবিধানিক কাঠামো কী হবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে অনেক জটিল বিষয়-আসয় থাকে। সেগুলো সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সহজ নয়। এগুলো গবেষণার বিষয়। এ জন্য রাষ্ট্র বিজ্ঞান নামে পড়ালেখার আলাদা বিষয় রয়েছে। তবে রাজনীতি বলতে সাধারণ মানুষ যা বোঝে তা হচ্ছে, এটি তাদের এবং সকলের কল্যাণের নীতি। তারা বোঝে, এর মাধ্যমে রাষ্ট্র তাদের কল্যাণে কাজ করে এবং সবসময়ই করবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের মান-সম্মান এবং ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রেও রাজনীতি কাজ করবে। আমাদের দেশের রাজনীতি এবং এর ধারা কেমন তা সাধারণ মানুষ কম-বেশি জানে। স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তারা বোঝে, রাজনীতি তাদের কল্যাণে খুব কমই ব্যবহৃত হয়। এটা মূলত তাদের জন্যই যারা দল গঠন করে এ নীতি অবলম্বনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে এবং থাকতে চায়। ক্ষমতায় যাওয়া এবং থাকার জন্য তারা এর নানারকম কলা কৌশল অবলম্বন করে। যদিও প্রত্যেকটি দলেরই লক্ষ্য রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করা, তবে এর প্রকৃত প্রতিফলন খুব কম দেখা যায়। মুখে মুখে তারা সভা-সমাবেশ করে জনগণের কল্যাণ করার অজস্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতার বাইরে তারাও ক্ষমতায় গিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কী করবে তার অসংখ্য ফিরিস্তি তুলে ধরে। আর যারা ক্ষমতায় থাকে তারা দেশ ও জনগণের জন্য কী করছে, তারও অসংখ্য উদাহরণ তুলে ধরে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকে সমালোচনা করে প্রত্যাখ্যান করে, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরাও বিরোধী দলের রাজনীতিকে উড়িয়ে দেয়। রাজনীতিতে পারস্পরিক এই বিরোধিতা স্বাভাবিক হলেও আমাদের দেশে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। এখানে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল একে অপরকে শত্রুজ্ঞান করে। একে অপরকে দ্ইু চোখে দেখতে পারে না।
দুই.
রাজনীতি সাধারণত ক্ষমতামুখী। এর লক্ষ্যই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করা। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দেশের রাজনীতিতে এ ধারাটি ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয় না। এখানে রাজনীতি বলতে একে অপরকে মেরে কেটে কিংবা রাজনীতির নানা অপকৌশলের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়াই মূল লক্ষ্য হয়ে উঠে। রাজনৈতিক দলগুলো মুখে মুখে জনগণের অধিকার কিংবা সেবা করার রাজনীতির কথা বললেও তাদের মানসিকতার নেপথ্যে থাকে ক্ষমতা ভোগ করা। দলগুলোর নেতা-কর্মীদের মানসিকতাই এমন যে, ক্ষমতায় যেতে পারলে তাদের জীবন বদলে যাবে। বাস্তবে তাই হচ্ছে। দেখা গেছে, যে দলই ক্ষমতায় যায়, তার অনেক নেতা-কর্মী রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে ওঠে। বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়ে যায়। আমরা যদি বর্তমানের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে কী অগাধ ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন! দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরুর পর ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতার যে ধন-সম্পদের হিসাব প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না রাজনীতি এবং এর ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তারা এই বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। একেকজন রাজনৈতিক সংগঠনের পোস্ট-পদবির ক্ষমতা ব্যবহার করে, কেউ ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অথচ রাজনীতি শুরুর প্রাক্কালে তাদের অনেকে অত্যন্ত দীনহীন অবস্থায় ছিলেন। কালক্রমে রাজনৈতিক অপব্যবহার এবং দুর্বৃত্তায়ণের মাধ্যমে তারা এই সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অথচ স্বাভাবিকভাবে তাদের রাজনীতি হওয়ার কথা ছিল জনকল্যাণমুখী। তা না করে নিজেদের আখের গোছানোতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। জনকল্যাণের পরিবর্তে উল্টো জনগণের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, হুমকি-ধমকি, ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করে। জনগণ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের রাজনীতি কি এমন হওয়ার কথা? এখন ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই রাজনীতির মূল লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে জনসাধারণের পকেট থেকে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়েছে। তা নাহলে, ক্ষমতাসীন দলের যেসব নেতা ইতোমধ্যে ধরা পড়েছে এবং তাদের যে সম্পদের পরিমাণ, তা কি বৈধ পথে হয়েছে? অনেকে বলছেন, যারা ধরা পড়েছেন, তারা রাজনৈতিক এই দুর্বৃত্তায়ণের ক্ষুদ্রাংশ মাত্র। এর বাইরে আরও অসংখ্য নেতা-কর্মী রয়েছে। প্রত্যেক এলাকার জনগণ তাদের ক্ষমতাসীন দলের এসব নেতা-কর্মী সম্পর্কে ভাল করেই জানে। যে জনকল্যাণের রাজনীতির জন্য এসব নেতা-কর্মীর দল ক্ষমতাসীন হয়েছে, তারা কি তা কখনো উপলব্ধি করেন বা করছেন? অবশ্য এসব নেতা-কর্মীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের দেশের রাজনীতিই এমন যে, একজন সাধারণ মানুষও জানে, ক্ষমতায় যাওয়া মানেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের অবস্থার পরিবর্তন হওয়া। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একেকজনের কোটিপতি হওয়া। সুদীর্ঘকাল ধরেই সাধারণ মানুষ দেশে রাজনীতির এই অপসংস্কৃতি দেখে আসছে। তারা মেনেই নিয়েছে, এটাই আমাদের রাজনীতি। একেক দল ক্ষমতাসীন হবে, আর তাদের লোকজনের অবস্থার পরিবর্তন হবে-আমাদের কিছু হবে না। তারা খেয়ে-পরে কিছু থাকলে, তা তাদের কপালে জুটলেও জুটতে পারে। ফলে সাধারণ মানুষ রাজনীতি থেকে তেমন কিছু আসা করে না। তারা নিজেরাই নিজেদের জীবনযাপন উন্নত করতে সংগ্রাম করে যায়। এতে সরকারের যতটুকু অবদান থাকার কথা তার ছিঁটেফোটা হয়তো যুক্ত হয়। তবে যেভাবে যুক্ত হলে জীবনযাপন আরও সহজ হয়ে যেত, সেভাবে যুক্ত হয় না। সরকারের বেশিরভাগ সুবিধা সরকারি দলের লোকজনরাই পেয়ে থাকে। তারা এতটাই সুবিধা পায় যে, অর্থ রাখা বা খরচ করার জায়গা খুঁজে পায় না। ফলে বিচিত্র উপায়ে অর্থ খরচের পথ খুঁজে। এই যে অর্থ খরচের জন্য ক্যাসিনোতে জুয়া খেলা এবং রাতের মধ্যে লাখ লাখ টাকা উড়িয়ে দেয়া-এটা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা ছিল। এই খেলায় বেশিরভাগই রাজনীতির সাথে যুক্ত কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত। তার অর্থ হচ্ছে, রাজনীতির অপব্যবহারের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তারা আমোদ-ফূর্তি করতেন। এমনকি ক্যাসিনো খেলার জন্য সপ্তাহন্তে বিদেশেও চলে যেতেন।
তিন.
একজন রাজনীতিবিদের পেশা কি? কে রাজনীতি করেন এবং এতে যুক্ত হন? এ প্রশ্নের উত্তরে বল যায়, রাজনীতিবিদদের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। যে কেউ যে কোনো পেশায় থেকে তার পছন্দের রাজনৈতিক দলের নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী রাজনীতিতে যুক্ত হন। তাল লক্ষ্য থাকে, এই নীতি ও আদর্শের অনুসারি হয়ে জনসেবা করা। এর মাধ্যমে অর্থকড়ি রোজগারের সুযোগ নেই। জনসেবায় বা পরের তরে নিজেকে উৎসর্গ করাই রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। হ্যাঁ, এর মাধ্যমে উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ হচ্ছে, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী-এমপি হওয়া। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া। এতে রাষ্ট্রের বিধান অনুযায়ী একজন মন্ত্রী কিংবা এমপি সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদ কালে বেতন-ভাতা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া। একজন রাজনীতিবিদ বা নিঃস্বার্থ জনসেবকের জন্য এ সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট। এদের বাইরে যারা রাজনীতিতে জড়িয়ে থাকেন, তাদেরকে জনসেবামূলক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয়। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালনা করার জন্য দলের সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন দাতা সংস্থার অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে খরচ মিটানো হয়। সাদা দৃষ্টিতে রাজনীতির মূল ধারাটাই এমন হওয়ার কথা। আমাদের দেশে রাজনীতির স্বাভাবিক এই ধারা বলতে কিছু নেই। এখানে রাজনীতি যারা করেন এবং যুক্ত হন, তাদের লক্ষ্যই থাকে রাজনীতি মানেই ক্ষমতাবান হওয়া এবং ক্ষমতা ব্যবহার করে বিত্তশালী হওয়া। বিশেষ করে যারা ক্ষমতায় থাকে, তাদের এ লক্ষ্য পূরণ সহজেই হয়। বিরোধী দলে যারা থাকে, তাদের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে কামাই রোজগার করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের অনেকেই আশায় থাকে, ক্ষমতায় গেলে তারাও বিত্তবান হতে পারবে। অর্থাৎ আমাদের দেশের রাজনৈতিক ধারাকে এমন করে ফেলা হয়েছে যে, রাজনীতি মানেই ক্ষমতাবান হওয়া এবং এর মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। এই ধারার ফলে আদর্শ রাজনীতি বা জনকল্যাণমুখী রাজনীতি তিরোহিত হয়ে গেছে। রাজনীতিকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার নীতিতে পরিণত করা হয়েছে। ফলে এতে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ধনী ব্যক্তিরাও যুক্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। ভাবা যায়, আমাদের দেশের সংসদে জনপ্রতিনিধিদের শতকরা পঞ্চাশ ভাগের বেশি ব্যবসায়ী! এদের বেশিরভাগই অর্থ শক্তির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন! অর্থাৎ তাদের নেপথ্যের লক্ষ্যই হচ্ছে, তাদের বিপুল অর্থ-বিত্তকে ক্ষমতার ব্যবহারের মাধ্যমে আরও বৃদ্ধি করা। আবার নির্বাচিতদের অনেকের নির্বাচিত হওয়ার আগে যে সহায়-সম্পদ ছিল তার দ্বিগুণ-তিনগুণ বা তারও বেশি অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। অনেকে শিল্পপতি হয়েছেন। মন্ত্রী-এমপিরা সরকারি যে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পান, তার মাধ্যমে শিল্পপতি হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাদের লক্ষ্যও তা হওয়ার কথা নয়। অথচ আমরা দেখছি, ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা-কর্মী এমনকি এমপি কোটিপতি হয়েছেন। তার নজির পাওয়া যায়, সম্প্রতি সংসদ সদস্যসহ অনেকের ব্যাংক হিসাব তলব ও বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেয়া থেকে। তারা যদি সৎ হতেন এবং সততার সাথে অর্থ-বিত্তের মালিক হতেন, তাহলে কি তাদের ব্যাংক হিসাব তলব বা দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো? এ থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, তারা রাজনীতি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ভাবা যায়, একজন রাজনীতিবিদ যার তেমন কিছুই ছিল না, অথচ এমপি হয়েই শিল্পপতি হয়ে গেছেন। তার এলাকার মানুষের তেমন কোনো উন্নতি না হলেও তার ঠিকই উন্নতি হয়েছে। তার রাজনৈতিক লক্ষ্য যে, জনসেবা ছিল না, কেবল নিজের উন্নতি ছিল-এ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিগত এক দশকে ক্ষমতাসীন দল এবং তার জোটের অনেক নেতা-কর্মী, মন্ত্রী-এমপি জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। আমরা দেখেছি, ক্ষমতাসীন জোটের এক বাম নেতা মন্ত্রী হয়েছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার পর পত্র-পত্রিকায় তার অতি সাধারণ জীবনযাপনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। এমনকি তার সংসার চালাতেও রীতিমতো হিমশিম খেতে হতো। তিনি যে এলাকায় থাকতেন সে এলাকার দোকানপাট থেকে চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য পণ্য বাকিতে নিতেন। বাসার আসবাবপত্রের অবস্থা ছিল অত্যন্ত করুণ। এমন সাদাসিধা জীবন এবং তার সততারও দারুণ প্রশংসিত হয়। দেখা গেল তিনি যখন মন্ত্রী হলেন, ধীরে ধীরে তার অবস্থার পরিবর্তন হয়ে গেল। অনেকটা কোটিপতি হয়ে গেলেন। তিনি যে বাম রাজনীতি এবং মেহনতি মানুষের রাজনীতি করতেন, সেই মেহনতি মানুষের উন্নতি না হলেও তার নিজের ব্যাপক উন্নতি হয়। অবশ্য এ সরকারের পরবর্তী মেয়াদে মন্ত্রীসভায় তার জায়গা হয়নি। এভাবে দেখা যায়, ক্ষমতাসীন জোটের বাম নেতৃবৃন্দের কেউ কেউ মন্ত্রী হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কারো কারো নাম ক্যাসিনোকান্ডের সাথেও জড়িয়েছে। অর্থাৎ ক্ষমতার মোহ এবং এর আকর্ষণের কাছে আমাদের দেশের অনেক রাজনীতিকের সততা বিলীন হয়ে গেছে। বিরোধী দলেও যে এ ধারা রয়েছে, তাও আমরা দেখেছি। অথচ বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রেসিডেন্ট বিশ্ব শাসন করে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়ে সাধারণ জীবনযাপন করেন। কেউ কেউ বিদায় নেয়ার পরপরই চাকরি খোঁজা শুরু করেন। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বারাক ওবামাকে জীবিকার জন্য চাকরি খুঁজতে দেখা গেছে। তার আগের প্রেসিডেন্টরা বিভিন্ন সংস্থার দূত হিসেবে কাজ করেছেন। বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্ট বা রাজনীতিকদের পক্ষে কি তাদের ব্যক্তিগত ধন সম্পদ অর্জন করা কঠিন ছিল? মোটেই না। তারা ইচ্ছা করলে তা করতে পারতেন। তারা সত্যিকার অর্থেই দেশ ও জনগণের সেবার মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করেছেন। বলা বাহুল্য, আমাদের মতো উন্নয়নকামী দেশের উন্নতির জন্য এ ধরনের সৎ রাজনীতি ও রাজনীতিক সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল।
চার.
রাজনীতিকদের তো এমন হওয়ার কথা, যারা নিঃস্বার্থ হয়ে এবং নিজেকে বিলিয়ে জনসেবা করবেন। তিনি হবেন কষ্টি পাথরের মতো। যে কষ্টি পাথরের ছোঁয়ায় সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। একজন রাজনীতিকের লক্ষ্যই তো মানুষের সেবা করে ভালবাসা অর্জন করা। এটাই তার বড় সম্পদ। দুঃখের বিষয়, আমাদের অধিকাংশ রাজনীতিক এ সম্পদ অর্জনের চেয়ে আর্থিক সম্পদ অর্জনকেই রাজনীতির মূল লক্ষ্য করে নিয়েছেন। তারা মানুষের ভালবাসা চান না। ভালবাসা দিয়ে মন ও পেট ভরাতে চান না। অথচ রাজনীতির নিগূঢ় তাৎপর্যই হচ্ছে, জনসেবা ও মানুষের ভালবাসা অর্জনের মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করা। আমাদের দেশে যে রাজনীতির এমন ধারক-বাহক ছিলেন না, তা নয়। অনেকেই ছিলেন। তাদের সেই সৎ রাজনীতির পথ ধরে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল কার্যক্রম চালালেও, তাদের সৎ রাজনীতির মধ্যে থাকতে পারেনি। তারা এমন ধারণা তৈরি করেছেন যে, রাজনীতি মানে জনসেবা নয়, ক্ষমতা ভোগ করা। মানুষের উন্নয়ন নয়, নিজেদের উন্নয়ন। এতদিন সাধারণ মানুষের কাছে ওপেন সিক্রেট ছিল ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা রাজনীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। গত প্রায় দেড় মাস ধরে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে যেসব নেতা-কর্মী, কাউন্সিলর ও প্রভাবশালী ব্যক্তি ধরা পড়েছেন এবং নাম প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে এটি ওপেন হয়ে পড়েছে যে তারা রাজনৈতিকে দুর্বৃত্তায়ণের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেখতে ও শুনতে খারাপ লাগলেও এ ধরনের একটি অভিযানের বড়ই প্রয়োজন ছিল। অন্তত দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির যে বল্গাহীন অপসংস্কৃতি চলছিল, তাতে কিছুটা হলেও ছেদ টানতে পেরেছে। রাজনীতিতে গডফাদারে পরিণত হওয়ারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও, তাদের পিছু হটতে বা সচেতন হতে বাধ্য করেছে। রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে এ ধরনের অভিযানের বিকল্প নেই। আমরা আশা করব, এ অভিযানের জালে ধীরে ধীরে আরও বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা ধরা পড়বে এবং তাদের একনাগাড়ে ২২ বছর মালয়েশিয়ার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ, তিনি আত্মজীবনী লিখেছেন। মাহাথিরের লেখা দীর্ঘ বইটির নাম ‘অ্যা ডক্টর ইন দ্য হাউজ’। বাংলা অনুবাদ করলে এরকম দাঁড়ায়, ‘বাড়িতে একজন চিকিৎসক’। তরুণ বয়সে আইনজীবী হতে চাইলেও, পরিস্থিতির কারণে মাহাথির চিকিৎসক হয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে তিনি শুধু রোগী দেখেননি, চিকিৎসকের অভিজ্ঞতায় রাজনীতিকেও দেখেছেন। নিজের লেখা বইয়ের মধ্যেই মাহাথির ব্যাখ্যা দিয়ে লিখেছেন, পঞ্চাশ-ষাট বা সত্তরের দশকেও মালয়েশিয়া নামক দেশ ও সমাজকে একটি রোগী বিবেচনা করলে, তার চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারের প্রয়োজন ছিল। ওই ডাক্তার রাজনৈতিক ডাক্তার। মাহাথির মোহাম্মদ নামক একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ওই রাজনৈতিক ডাক্তারের ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাই তিনি তার আত্মজীবনীর নাম দিয়েছেন ‘বাড়িতে একজন চিকিৎসক’। ইংরেজিতে বইটা অনেক দীর্ঘ; যাদের পক্ষে পড়া সম্ভব, তারা যেন এটা পড়েন সেই অনুরোধ রাখছি। এই অনুরোধ রাখার পেছনে একটি কারণ আছে। দুই চার-পাঁচ বছর আগেও বাংলাদেশে পত্রপত্রিকায় এবং টকশোগুলোতে একটি বিষয় বহুলালোচিত ছিল। বিষয়টি ছিল, অর্থনৈতিক উন্নতি আগে, নাকি গণতান্ত্রিক উন্নতি আগে? বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা এই মর্মে সোচ্চার ছিলেন এবং এখন কর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করছেন যে, গণতন্ত্র যা-ই হোক না কেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই অগ্রাধিকার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গতি ও স্বচ্ছতা যদি একটু কমেও যায় তাতে কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের এরূপ ব্যক্তিরা প্রায়ই সিঙ্গাপুর বা কোরিয়া বা মালয়েশিয়ার উদাহরণ টানেন। এ জন্যই এই কলামের পাঠকদের মধ্যে যারা অধিকতর সচেতন তাদের কাছে অনুরোধ, যেন তারা মাহাথিরের আত্মজীবনী পড়েন। তাহলে তারা নিজেরাই পূর্ণ ধারণা পাবেন, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার মধ্যে কী মিল আছে এবং কী মিল নেই। তারা এই ধারণাও পাবেন, মালয়েশিয়ার সাবেক নেতা ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ ও তার পরিবার এবং বাংলাদেশের বর্তমান নেতা ও তার পরিবারের বৈশিষ্ট্য এবং কর্মকান্ডের মধ্যে কী মিল আছে এবং কী মিল নেই। একই সাথে পাঠক এটাও অনুভব করবেন, মাহাথির বা লি কুয়ান ইউ বা নেলসন ম্যান্ডেলা বা ইয়াসির আরাফাত বা রজব তৈয়ব এরদোগান, তাদের নিজ নিজ দেশের মাটি ও মানুষের মধ্য থেকেই উঠে এসেছেন। বাংলাদেশেও যদি কোনো ব্যতিক্রমী নেতা আবার উঠে আসতে হয়, তাকে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষ থেকেই উঠে আসতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের মাহাথির বা বাংলাদেশের ম্যান্ডেলা লুক্কায়িত আছেন, শুধু আবিষ্কারের অপেক্ষা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অসুস্থতার নিরাময় করার জন্যও চিকিৎসক জরুরি। বাংলাদেশ কি রাজনৈতিকভাবে বা সামাজিকভাবে অসুস্থ? আমার মতে, অসুস্থ না বললেও পুরোপুরি সুস্থ নয়। সুস্থতায় ঘাটতি কতটুকু অথবা কতটুকু অসুস্থ, তার উত্তর একেকজন চিন্তাশীল ব্যক্তি বা বিশ্লেষক একেক নিয়মে দেবেন। উত্তরটি পাঁচ পৃষ্ঠার রচনা থেকে নিয়ে ৫০০ পৃষ্ঠার বই করেও দেয়া যাবে। পাঁচ পৃষ্ঠার থেকেও ছোট হলো একটি কলাম। এরকম একটি কলাম লিখেছিলেন একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। তিনি জনপ্রিয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক। তার অনেক লেখা থেকে আমি বক্তব্য উদ্ধৃত করতে পারতাম। কিন্তু স্থানাভাবে সব জায়গা থেকে না নিয়ে একটি জায়গা থেকে তার বক্তব্য ধার করে এখানে উদ্ধৃত করছি। ২৫ নভেম্বর ২০১৪, তিনি যে কলামটি লিখেছিলেন, সেই কলাম থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি। ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মতো কঠিন এবং রাজনীতির মতো দুর্বোধ্য বিষয় মোকাবেলা করেও অনেক ছোটখাটো বিষয়ের সমস্যা সমাধানেও যখন ভূমিকা রাখতে দেখা যায় তখন নেতৃত্বের সঙ্কট উন্মোচিত হয়। দেশে দলীয়করণের প্রতিযোগিতা, প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা ও সম্মানের জায়গা সরিয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। ছাত্র রাজনীতি মেধাবী সৃজনশীল ছাত্রদের কাছ থেকে বহু দূরে সরে গিয়ে, ছাত্র সমাজের আস্থা হারিয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্য বা রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ স্বীকৃত হয়েছে। দুর্নীতি দিনে দিনে বহু বেড়েছে। রাজনীতিতে সহনশীলতার উল্টো পথে আগ্রাসী রূপ নিয়েছে প্রতিহিংসা। গুম, খুন মানুষের জীবনকে নিরাপত্তাহীন করেছে। ইয়াবাসহ মাদকের আগ্রাসন একেকটি পরিবারকেই নয়, দেশের একটি প্রজন্মকে অন্ধকার পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সম্পদ সীমিত, জনসংখ্যা বাড়ছে। শিল্প, কলকারখানা থেকে ব্যবসায়বাণিজ্যে বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, কর্মসংস্থানের খবর নেই। উন্নয়ন চলছে, দুর্নীতি থেমে নেই। রাজনীতিতে চলছে ভোগ-বিলাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা। তদবির বাণিজ্য সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মানুষের লোভ-লালসা এতটাই তীব্র যে, রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে বাজিকরদের আস্ফালন চলছে। গণতন্ত্রের নামে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন যেমন চলছে, তেমনই আন্দোলনের নামে দেখা দেয় মানুষ হত্যা আর জানমালের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা। সাংবিধানিকভাবে জনগণ ক্ষমতার মালিক হলেও রাজনৈতিক শক্তির কাছে মানুষের অধিকার ও সম্মানবোধ দিন দিন পদদলিত হচ্ছে…।’ কলামটি প্রকাশিত হওয়ার ছয় বছর পরও কথাগুলো হুবহু প্রযোজ্য। এরূপ পরিস্থিতি একদিনে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের অশুভ পৃষ্ঠপোষকতায় এটা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সরকার এইরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এককভাবে দায়ী না হলেও অবশ্যই বৃহদাংশের জন্য দায়ী। তাই এইরূপ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণও এক দিনে পাওয়া যাবে না এবং নিশ্চিতভাবেই ধরে নেয়া যায়, বর্তমান সরকারের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
পরিত্রাণ পেতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। যেকোনো কাজ করতে গেলে শুধু শ্রম দিয়ে হয় না। মেধা, শ্রম, সময় এবং অর্থ এসব কিছুর সমন্বিত বিনিয়োগেই একটা ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সবকিছুর আগে প্রয়োজন একটি সিদ্ধান্ত। ইতিহাসের একেক জন মহানায়ক, তার পারিপার্শ্বিকতার পরিপ্রেক্ষিতে এক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন; সিদ্ধান্তগুলো যুগান্তকারী ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যাগরিষ্ঠ কালো মানুষের মুক্তিদূত নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনী থেকে, উত্তর ভিয়েতনামের সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক হো চি মিনের জীবনী থেকে এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অথবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবনী থেকে অনেক উদাহরণ আমরা টানতে পারি। রবর্তমানে যা বাংলাদেশ, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সেটিই ছিল ‘পূর্বপাকিস্তান’। ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের নেতৃত্বকেও সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তারা নিকটতম প্রতিবেশী, একটু দূরের প্রতিবেশী, অনেক দূরের প্রতিবেশী এরূপ রাষ্ট্রগুলোর সাথে কী রকম সম্পর্ক রাখবেন এবং বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা কী রকম হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাথমিক বছরগুলোতে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো, পরবর্তী দশকগুলোতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করেছিল এবং এখনো মাঝে মধ্যে করে। বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বলছে, তারা বাংলাদেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে। দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন কর্মকন্ডে আছে। কিন্তু সরকার যে কথাগুলো জনগণকে স্বচ্ছভাবে বলছে না, সেটি হচ্ছে, আপাতত দৃশ্যমান উন্নয়নের বিনিময় মূল্য কী? অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কতটুকু মূল্য বা কতটুকু ছাড় দিয়ে বা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করে আমরা উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছি?
আমাদের দেশে বিভিন্ন আঙ্গিকে উন্নতি অবশ্যই অনেক হয়েছে, কিন্তু আমাদেরই মতো পরিস্থিতিতে থাকা অন্যান্য দেশের তুলনায় সেটি কম। অন্যভাবে বলা যায়, যতটুকু উন্নতি করতে পারতাম, ততটুকু হয়নি। আমাদের সাফল্য যা কিছু আছে তার জন্য কৃতিত্ব যেমন আমাদের, তেমনই ব্যর্থতাগুলোর জন্য দায়ও আমাদের। এরূপ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ প্রয়োজন। অতীতের ভুল সংশোধন প্রয়োজন। একটি দেশ যেহেতু রাজনীতিবিদরা পরিচালনা করেন, তাই রাজনীতিতেই চিকিৎসা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন দরকার। বিদ্যমান বহুদলীয় রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্য থেকেই এই গুণগত পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা চাই সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিরা রাজনীতিতে জড়িত হোন। আমরা চাই সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জনগণের খেদমতের সুযোগ পান। আমরা চাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এমন হোক যেখানে সৎ, সাহসী, মেধাবী, শিক্ষিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, জনগণের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন এবং জনগণকে আশ্বস্ত করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে পারেন। যথেষ্ট বা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তি যদি পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন, তাহলে পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে একটি গুণগত পরিবর্তন সূচিত হবেই। সে জন্য বাংলাদেশে সাহসী ভোটার প্রয়োজন, যে ভোটাররা সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। সে জন্য বাংলাদেশে সাহসী মিডিয়া প্রয়োজন, যে মিডিয়া সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিদেরকে উৎসাহিত এবং প্রচারণায় পৃষ্ঠপোষকতা করবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাক্সিক্ষত গুণগত পরিবর্তনের আরো কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: প্রথম- মুক্তিযুদ্ধের আদি ও অকৃত্রিম চেতনা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের চেতনা সম্মিলিতভাবে বা যুগপৎ বিদ্যমান থাকবে। দ্বিতীয়- ধর্মীয় নেতারা, মুক্তিযুদ্ধের নেতারা এবং জাতীয় নেতারা, জাতীয় ঐক্যের প্রেরণা হবেন, জাতীয় বিভক্তির কারণ হবেন না। তৃতীয়- সমাজে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। চতুর্থ- জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস শুরু হবে। পঞ্চম- প্রতিহিংসা নয়, পারস্পরিক প্রতিযোগিতাই হবে উন্নয়নের এবং অবদানের কাঠামো। ষষ্ঠ- আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, সততা এবং প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সপ্তম- রাজনীতি ও ব্যবসাতে তারুণ্যকে তথা বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে ও অগ্রাধিকার দিতে হবে। অষ্টম এবং শেষ: বাংলাদেশের মঙ্গল ও কল্যাণ, ন সংগ্রামটি হচ্ছে: ।

জন্মভূমি ডেস্ক December 1, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article মুন্সীগঞ্জ আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়লেও আশানুরূপ নয়
Next Article অবৈধ স্থাপনার স্বর্গরাজ্য ‘সরু পথের শহর’ ও যানজটের ‌সাতক্ষীরা

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গায় এক যুবককে গলা কেটে হত্যা

By জন্মভূমি ডেস্ক 26 minutes ago
বাগেরহাট

ফকিরহাটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু গ্রেপ্তার

By জন্মভূমি ডেস্ক 37 minutes ago
যশোর

বেনাপোল সীমান্তে সিরাপ ও চোরাচালান পণ্যসহ আটক ১

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জাতীয়তাজা খবর

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার, বসেছে ব্যারিকেড

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা ‌পাউবোর কর্মকর্তা আ’ লীগ ক্যাডার ইমরানের খুঁটির জোর কোথায়?

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

মাছের জেলা ‘সাতক্ষীরা’

By জন্মভূমি ডেস্ক 6 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?