জন্মভূমি ডেস্ক : খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দ আদালতে মামলা দায়ের করেছে । যার নং দে: ১৫৬/ ২০২৩। মামলার বাদী হলেন অভিভাবক সদস্য আজাদ শিকদার, রুহুল আমিন মোল্লা ও সোনিয়া বেগম, শিক্ষক প্রতিনিধি তপন বিশ্বাস, শেখ হুমায়ুন কবির ও ম্নেহময়ী মন্ডল।
মামলার বিবারনে জানা যায়, আলাইপুর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ নব সৃষ্ট পদে নৈশ প্রহরী, পরিছন্নতা কর্মী ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ সংক্রান্তে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয় মোকদ্দমা আনা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালের সময় হইতে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষাদানের কার্যক্রম ভালো ফলাফলের মাধ্যমে এলাকায় পরিচিত লাভ করে আসছে। বিদ্যালয়ের কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবার পর হইতে তাহার কার্যক্রম বিভিন্ন আর্থিক ও অনিয়ম অদক্ষতা অর্থ আত্মসাৎ করা সহ অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যালয়টি দিন দিন তার আর্থিক দিক সহ শিক্ষা ব্যবস্থার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসেছে। জেলা পরিষদের এডিপি এর বিশেষ বরাদ্দকৃত এক লক্ষ টাকা বর্তমান সভাপতির স্ত্রী বিউটি পারভিন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব থাকায় বিবাদী মোকাররম তাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়া নিয়ে সভাপতি তাহা আত্মসাৎ করেন। সোনালী ব্যাংক কাজদিয়া শাখা হতে। বর্তমান সভাপতি নিজেই ২০২২ সালের বার্ষিক পরীক্ষার ফিস এবং শিক্ষার্থীদের বেতন আদায় ৭০ হাজার টাকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ বোর্ড ফিস বাদে ৫০ হাজার টাকা ব্যাংক এ জমা না দিয়ে বিউটি পারভিন এর মাধ্যমে উত্তোলন করে সভাপতি নিজেই আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া বর্তমান সভাপতির সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের দপ্তরে জাহাঙ্গীর শিকদার বিদ্যালয়ের রক্ষিত সরকারি বিনামূল্যের বই বিক্রি করে টাকা নেওয়ার সময় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়েন। ঘটনায় জাহাঙ্গির দোষি প্রমাণিত হওয়া সত্বেও সভাপতি উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। এছাড়া মামলার অভিযোগে জানা গেছে, বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওয়েবসাইডে প্রবেশের জন্য আইডিও পাসওয়ার্ড ২ নং বিবাদী এর সহিত মিলে সভাপতি নিজেই রাখিয়া দেন এবং কোন ম্যানেজিং কমিটি নিয়মিত সভা সময়মতো করেন না। যার প্রতিবাদ ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য গণের মধ্যে অত্র মামলার এক থেকে তিন নং বাদী ও ৬ নং বিবাদী বরাবর গত ১৯/২/২৩ তারিখে লিখিত আকারে অভিযোগ করিয়া বর্তমান সভাপতির অপসারণ দাবি করেন। বর্তমান সভাপতি মোকাররম এর অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বর্তমানবাদীগণ সহ বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা প্রতিবাদ করে কোন সুফল পাচ্ছে না। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অর্থাৎ এক ও দুই নং বিবাদী পরস্পর স্বামী স্ত্রী হওয়ার সুযোগে সুযোগ গ্রহণ করে স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে একের পর এক অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। স্কুলের শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক এবং নব সৃষ্ট পদে একজন নৈশ প্রহরী, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও একজন অফিস সহায়ক নিয়োগের প্রয়োজনীতা দেখা দেয়।
বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মোকাররম হোসেন সহ তাহার একান্ত আস্থাভাজন দুইজন সদস্য ও তার স্ত্রী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সদস্য সচিব এক হয়ে কাজ করে আসছে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর প্রজ্ঞাপন ২০০৯ এর ৩৫ অনুচ্ছেদ অর্থাৎ সভা পরিচালনা পদ্ধতির ৩৫ এর ৩ অনুচ্ছেদে লংঘন করিয়া অর্থাৎ ম্যানেজিং কমিটির মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেক সদস্যসের উপস্থিত ব্যাতিত সভার কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় সত্বেও বর্তমান সভাপতিসহ তার অনুগত সদস্য মিলিয়া সম্পূর্ণ গোপনে অত্র বাদীগণের জানামতে নামে মাত্র সভা অনুষ্ঠান দেখাইয়া তাহাদের একান্ত ব্যক্তিগণকে বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগ প্রদানের আর্থিক সুবিধা অবৈধভাবে গ্রহণ করিয়া নামে মাত্র নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তাহাদের নিয়োগ চূড়ান্ত করিবার নামে মাত্র কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তাহাদের নিয়োগ চুড়ান্ত করিবার নিমিত্তে সম্পূর্ণ সরকারি বিধি মোতাবেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুসরণ না করিয়া গত ১৩/৭ ২৩ তারিখে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পূন: নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে বাদীগণ জানতে পারে।
বর্তমানে স্কুলের কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১ জন সদস্য এবং স্কুলে কোনো প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাই। সে মতে অত্র বাদীগণ ম্যানেজিং কমিটির বর্তমানে সকল শিক্ষক প্রতিনিধি সহ ৩ জন অভিভাবক সদস্য ব্যতীত এবং কোরাম বিহীন সভায় উদ্বৃতি আনায়নে উক্ত অনিয়মতান্ত্রিক উপায় সংঘটিত সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আরো জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর কমিটির অভিভাবক সদস্যরা সভাপতিরন আর্থিক অনিয়ম, অদক্ষতা ও অব্যস্থাপনার অভিযোগ তুলে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন।