১৬ ঘন্টায়ও টের পায়নি পুলিশ
মৃত্যু ঘিরে নানা প্রশ্নের ভীড়
জন্মভূমি রিপোর্ট : রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের যুগিহাটী গ্রামের বাসিন্দা জাকারিয়া কাজী ওরফে জাকু কাজীর বাড়ীতে জিয়া নামে ৪৭/৪৮ বছর বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ভিকটিমের দুই ভাই নিহতের পৈত্রিক ভিটা বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ সংলগ্ন এলাকা থেকে অত্যাচার করে তাড়িয়ে দিয়েছিল বহু বছর আগে। তখন থেকেই তিনি মামা জাকারিয়ার বাড়ীতে আশ্রিত হিসেবে বসত করতেন। তাকে প্রতিদিন বহু কাজ করতে হলেও তিনি বেঁচে ছিলেন ভীষন অবহেলায়। কোনো বেলা তার খাবার জুটতো, কোনো বেলা জুটতো না। কয়েক বছর ধরে তিনি নাকের টিউমার রোগে ভুগলেও চিকিৎসা জোটেনি। তার মৃত্যুকে ঘিরে স্থানীয়দের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। যদিও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে থানা-পুলিশ এ ব্যপারে অবহিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, বড় করুন ছিল জিয়ার চাহনি। তাকে দেখলেই বলতেন- ওরা ঠিকমত খাইতে দেয়না। লোকের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ওই বাড়ীতে সেই রাতে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তিনি ওই পোস্টে মরদেহে আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করে মৃত্যু নিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের অবতারণা করেছেন। উল্লেখিত পোস্ট অনুযায়ি জিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয় ভোর চার টায়। কিন্তু মানুষকে জানানো হয় অন্তত দেড় ঘন্টা পর। স্থানীয় অন্য সূত্রগুলো বলছেন, জিয়ার মৃত্যুর খবর মসজিদের মাইকেও বলা হয়নি। সকালে তড়ি-ঘড়ি করে লাশ তার ভাইদের হাতে তুলে দেয়া হযেছে। তারা দ্রুত বাগেরহাট পৌছেছে।
ফেসবুক পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত যুবক ওই ভবনের স্টোর রুমে থাকতো। লাশটি অদ্ভুতভাবে ভুট হয়ে মশারির ভেতর পড়ে ছিল।তার পায়ের কাছে ফ্লোরে রক্তমাখা রুটির কিছু অংশ পড়ে ছিল। মেঝেতে ছিল রক্ত মিশ্রিত মূত্র। তার মুখের ভেতর কিছ একটা গুজে দেয়া হয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীর মনে হচ্ছিল।
ঘটনাস্থল ওই বাড়ীটির সামনেই বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আনসার হোসেন স্মৃতি সংসদ ও প্রতিবন্ধী স্কুল। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম নিহতের মামা জাকু। তিনি গত আওয়ামী সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আনুমূল্যে থেকে বিদ্যালয়টি পরিচালনার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। যদিও স্কুলের কার্যক্রম ছিল নামেমাত্র। শনিবার বিকেলে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে স্কুলটিতে বীর মক্তিযোদ্ধা কাজী আনসার হোসেন ইবতোদায়ি মাদ্রাসা নামে আরেকটি ব্যানার ঝুলতে দেখা গেছে। তার পাশেই ঝুলছে আলোর ঠিকানা নামে একটি কোচিং সেন্টারের ব্যানার। এগুলো গত ৫ আগস্টের পর ঝোলানো হয়েছে। টিনসেড ওই ভবনের পাশেই একটি বৃহৎ পরিসরের একতলা ভবন। তাতে পল্লী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার কার্যালের ছোট্ট একটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। বিকেলে ওই বাড়ীতে তালাবন্ধ ছিল। ঘটনাস্থলের আশ-পাশ জনশূণ্য ছিল।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার পরে দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, এ ঘটনায় কেউ তার কাছে অভিযোগ জানাতে আসেননি। তথন পর্যন্ত তিনি অবহিত ছিলেন না।