মোংলা প্রতিনিধি : হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে বিপর্যস্ত মোংলাসহ সাগর ও সুন্দরবন উপকূলের বাসিন্দাদের জীবন। কয়েকদিন ধরে হঠাৎ জেঁকে বসা শীতের মধ্যে আবার বইছে উত্তরের বাতাস। এতে শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মেঘলা আকাশে ক্ষণে ক্ষণে নিরুত্তাপ সূর্যের দেখা মিললেও তাতে কমছে না ঠান্ডা। প্রচণ্ড শীতে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন দিনমজুর, বিভিন্ন নৌযানে কাজ করা শ্রমিক-কর্মচারী, নদীর পাড়ের বাসিন্দা ও বস্তি এলাকার লোকজন। তাই শীত নিবারণে আগুন জ্বেলে শরীর গরমের চেষ্টা করছেন শীতার্তরা।
এদিকে শীতে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকলেও তারা চেয়ে থাকেন ত্রাণের (কম্বল সহায়তা) দিকে। অথচ এখনও পর্যন্ত পাননি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কম্বল। এনিয়েও ক্ষুব্ধ এখানকার শীতার্তরা।
পৌর শহরের ট্রেডার্স রোডের বাসিন্দা জরিনা বেগম বলেন, শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছি, তাই সকাল-সন্ধ্যা আগুন পোহাচ্ছি। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করি, শীতে কোনো কম্বলও পাইনি এখনও।
একই এলাকার সালমা বেগম বলেন, শীত ও বাতাসে বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্ট পাচ্ছি। আগুন পোহালে একটু শীত কম লাগে, আগুনের পাশ থেকে উঠে গেলে আবার ঠান্ডায় কষ্ট বাড়ে। আমাদের মতো মানুষের খোঁজ কেউ নেয় না, শীতে আমরা কিছু পাইও না।
পৌর শহরের মামারঘাটের বোট স্টাফ বাদল ও মোশারেফ বলেন, শীতে নদীতে বোট (নৌযান) চালাতে খুব কষ্ট হয়, তারপর আবার বাতাসও হচ্ছে। কাজ রেখে নদীর পাড়ে আগুন জ্বেলে শরীর গরম করছি।
পৌর শহরের মাছ বিক্রেতা শ্যামল মন্ডল বলেন, ভোরে উঠতে হয়, পানি ও মাছ ধরতে হয়। এতে খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের।
উপজেলার চাঁদপাই গ্রামের আছিয়া বেগম বলেন, ঠান্ডায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তিনদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার প্রকাশ কুমার দাশ বলেন, প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে প্রতিদিন ঠান্ডায় আক্রান্ত ৭০-৮০ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। আর ভর্তি থাকছে ১৫-২০ জন করে। শীতের কারণে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নারী-পুরুষও। আক্রান্তের অনেকেই আবার চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়িতে থাকছেন।