শেখ আব্দুল হামিদ
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শেষ হলো খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২২। নির্বাচনে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ আবারও বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫৩৬টি, আর তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা ভোট পেয়েছেন ৪০৩টি। অপর প্রার্থী খুলনা বিএমএ’র সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম ৩৭টি ভোট পেয়েছেন। মোট ১০টি কেন্দ্রে ৯৭৮ জন ভোটারের মধ্যে ৯৭৭ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তার মধ্যে বটিয়াঘাটা কেন্দ্রে ১টি ভোট বাতিল হয় এবং তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ অনুপস্থিত থাকায় ভোট দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। দুপুরে রিটার্নিং অফিসার ও খুলনা জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, দিনের প্রথম ঘণ্টায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। বেলা ১২টার পর থেকে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। প্রতিটি কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ভোটাররা কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ভোট প্রদান করেন।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ কালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বেলা বারটার দিকে বটিয়াঘাটা ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পুরুষ ও মহিলা ভোট কক্ষ ঘুরে দেখেন। এসময় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে সন্তোষ জানান। তার সঙ্গে ছিলেন, খুলনা র্যাব-৬ এর পরিচালক লেপ্টেন্যান্ট কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ, খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বিপিএম, বটিয়াটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: মোমিনুর রহমান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহ্ জালাল।
শেখ হারুনুর রশিদ খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ১১ বছর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার ৬১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৯৯১ সালের পর থেকে সাত বার খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দুই বার জাতীয় সংসদ সদস্য, বিরোধী দলীয় হুইপ, প্রায় ১১ বছর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
শেখ হারুনুর রশিদকে নির্বাচিত ঘোষণার পরেই তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা কর্মী সমর্থক ও ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে এবং জেলা পরিষদের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করার প্রতিশ্রæতি দেন। একই সঙ্গে খুলনা জেলা পরিষদকে ‘মডেল জেলা পরিষদ’ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এছাড়া খুলনা জেলা পরিষদে ৯টি সাধারণ পদের মধ্যে ৮টি ভোট হয়েছে। ৫নং ওয়ার্ডে আগেই সাবিনা ইয়াসমিন মুক্তা বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় সদস্য নির্বাচিত হন। ফলাফলে দেখা গেছে, ১নং ওয়ার্ড দাকোপে ৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সরোজিত কুমার রায়। কয়রা উপজেলার ২নং ওয়ার্ডে জি এম আবদুল্লাহ আল মামুন লাভলু ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৩নং ওয়ার্ড পাইকগাছায় ৭০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন রবিউল ইসলাম গাজী রবি। ডুমুরিয়ার ৪নং ওয়ার্ডে এমডি এ হালিম বাবু ১১৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৬নং ওয়ার্ড বটিয়াঘাটায় দিলীপ হায়দার ৫৬ ভোটি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। দিঘলিয়া উপজেলার ৭নং ওয়ার্ডে সাইফুল ইসলাম বাবু ও জাকির হোসেন সমান ২৯ ভোট পান। পরে লটারিতে বিজয়ী হয়েছেন সাইফুল ইসলাম বাবু। তেরখাদা উপজেলার ৮নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন এম ডি মফিজ উদ্দিন। তিনি পেয়েছেন ৪৯ ভোট। কেসিসি ও রূপসা মিলিয়ে ৯নং ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ। তিনি পেয়েছেন ৯৭ ভোট। এছাড়া ১নং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নাহার আক্তার (ফুটবল), ২নং সংরক্ষিত আসনে হাসনা হেনা (ফুটবল) ও ৩নং সংরক্ষিত আসনে ফারহানা হালিম নির্বাচিত হন।
শেখ হারুন আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত
Leave a comment