জন্মভূমি ডেস্ক : ঝিনাইদহের শৈলকূপা বাজার থেকে হঠাৎ উধাও হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। প্রায় একমাস ধরে বোতলজাত সয়াবিনের এ সংকট বলে জানা গেছে।
চলমান এ সংকট নিয়ে বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন বোতলজাত সয়াবিন তেলের ডিলারদের। তাদের অভিযোগ, তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির চাল, ডাল, সুজি, হলুদ না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন।
তবে ডিলাররা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বললেন, বোতলজাত সয়াবিনের দাম ব্যারেলের সয়াবিনের থেকে কম হওয়ায় বোতলের তেল ব্যবসায়ীরা ব্যারেলের মধ্যে ঢেলে বেশি দামে বিক্রি করছেন। এজন্য বোতলজাত সয়াবিনের সংকট।
শৈলকূপা বাজারের মুসলিম স্টোরের মালিক ডাবলু জানান, প্রায় একমাস ধরে তেল কোম্পানিগুলো তাদের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। বোতলজাত সয়াবিন থেকে ব্যারেলের সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ নেই বললেই চলে। এক লিটার ব্যারেলের সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা থেকে ৯০টাকায়। আর বোতলজাত সোয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৬৭ টাকা। কোম্পানি থেকে নিতে হচ্ছে ৬৫ টাকা লিটারে। এরপর কোম্পানির হলুদ মরিচসহ অন্যান্য পণ্য না নিলে মিলছে না বোতলের সয়াবিন। বিভিন্ন কারণে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট।
বাজারের সাগর সোহাগ ট্রেডার্সের আসাদুজ্জামান সোহাগ বলেন, কোম্পানি তাদের বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। ডিলারের কাছে ফোন করলেই তারা বলে কোম্পানি থেকে সরবরাহ নেই।
লক্ষ্মী ভান্ডারের মালিক প্রদীপ সাহা বলেন, অনেকদিন থেকে সয়াবিন তেল কোম্পানি তাদের বোতলজাত তেল সরবরাহ করছে না। মাঝেমধ্যে দুই এক কার্টন যা পাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে শেষ হচ্ছে।
বোতলজাত সয়াবিন থেকে ব্যারেলের সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বোতলের সয়াবিন তেল ব্যারেলে ঢেলে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রদীপ সাহা।
শৈলকূপা বাজারের হোসেন ট্রেডার্সের মালিক মাসুম বিল্লাহ বলেন, বোতলজাত সয়াবিনের সংকট আছে। কোম্পানির ডিলারকে ফোন করলেই তারা তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য নেওয়ার কথা বলছেন। তবে বোতলের সঙ্গে চাল-ডালসহ অন্য পণ্য নিলে তার কাছে বোতলজাত সয়াবিন মিলছে।
শৈলকূপা বাজারের বসুন্ধরা তেলের ডিলার বিপ্লব সাহা বলেন, বোতলজাত সয়াবিনের তেমন সংকট নেই। বোতল থেকে খোলা সোয়াবিনের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ীরা বোতলজাত সয়াবিন তেল ঢেলে ব্যারেলের সয়াবিন তেলের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছেন। গ্রীষ্ম মৌসুমে সুপার সয়াবিন হিসেবে খোলা তেল বিক্রি করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। শীতে সুপার সয়াবিন জমে যাওয়ায় আসল সয়াবিন তেলের ওপর টান পড়েছে। ফলে বোতলজাত সয়াবিন তেল কোম্পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানির অন্য পণ্য বিক্রির শর্তে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বাকি চাওয়ায় তারা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না। নগদ হলেই তারা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন বলে জানান।
বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট ও সিন্ডিকেট নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুস সালেহিন বলেন, তারা বাজারে তেলের সংকট নিয়ে বিভিন্ন অসংগতির কথা শুনেছেন। এ ব্যাপারে জেলাতে কথা চলছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।