সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চাদনীমূখা স্লুইসগেট নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় আতঙ্কে পড়েছে পাশের চল্লিশটি পরিবার। গত ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর জিজাইন অনুযায়ী মাটি খননের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরমধ্যে দক্ষিণ প্রান্তে ১ একর ৫২ শতক রের্কডীয় জমিতে বসাবস করা ৪০ পরিবারের সহ এলাকাবাসীর ভিতরে উচ্ছেদ আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে বসরত অসহায় বনজীবী পরিবারে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্বের স্লুইসগেটের ৫১ফুট পূর্ব দিকে সরিয়ে দিয়ে নতুন গেটের কাজ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাসান অন্ড ব্রাদার্স।
পানি উন্নায়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গাবুরা ও চাদনীমূখা দুই প্যাকেজের কাজের জন্য ২০২৫ সালের জুনের প্রথম সপ্তাহের ভিতরে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১১কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সরকারি জায়গায় স্লুইসগেট নির্মাণ জন্য যে ডিজাইনে খনন করা হয়েছে, সেই ডিজাইনে কাজ করলে রেকর্ডীয় জায়গাসহ বাড়িঘর পানি নিষ্কাশনের খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও চিংড়ি চাষীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পানি উন্নায়ন বোর্ডের কর্মরত ব্যক্তিদের নির্দেশনায় আতঙ্কে থাকা ৪০ পরিবারের পক্ষ থেকে শাহজামাল মোড়ল, মহিদুল ইসলাম, আবুল কালাম, কামরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, আমরা স্লুইস গেট নির্মাণে কোন প্রকার বাধা দিতে চাই না। কিন্তু যে স্থানে নির্মাণ কাজ করছে ওখানে নির্মাণ করলে আমাদের বাড়ি ঘর সব খালের ভিতরে চলে যাবে। ইতোমধ্যে আমাদের বাড়ি ঘরের ধ্বস নামতে শুরু করেছে, পানির স্রোত পড়লে আমাদের বাড়িঘর চলে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
তারা আরো জানায়, আমাদের রের্কডীয় জায়গায় কাজ করতে আসলে আমরা তাদের বলতে গেলে আমাদের নামে মামলা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এখান থেকে চেয়ারম্যানের নিজের ঘেরের পানি ওঠানামা করে। সে কারণে কোনো বাধা মানছে না বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার
পরিবারগুলোর পক্ষে শাহাজালাল মোড়ল এ ঘটনায় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন দায়ের করেছেন। আবেদন সূত্র জানা যায়, তপশীল সম্পত্তির মৌজা-পার্শ্বেমারী, জে.এল নং- ১২৭, খতিয়ান নং- ১০৭৩, হাল দাগ ৫০২৬, আমাদের রের্কডীয় জায়গায় উপর দিয়ে সুইচগেট নির্মাণ না করতে পারে এজন্য।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাসান অন্ড ব্রাদার্স প্রতিনিধি মোরশেদ আমল বলেন, আমাদের পানি উন্নায় বোর্ড থেকে যে ডিজাইন দেখিয়ে দিয়েছেন, আমরা সেই অনুযারী কাজ করছি। আমাদের ডিজাইনের বাইরে কাজ করার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জানার জন্য গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান জিএম মাসদুল আলমের কাছে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি। পানি উন্নায়ন বোর্ডের এসডি ইমরান সরদার বলেন, আমরা ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের নিয়ে স্থান ঠিক করছিলাম। স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িঘর উপর দিয়ে পানি যাওয়ার কথা জানালে, আমরা তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে কংক্রিটের ব্লগ দিয়ে বাঁধ দিয়ে দেওয়ার প্লান করেছি।
শ্যামনগরে অপরিকল্পিত সুইজগেট নির্মানে আতঙ্কে এলাকাবাসী

Leave a comment