শ্যামনগরে বিধবার বাস্তভিটা দখলের অভিযোগ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : শ্যামনগর উপজেলার ভূরুলিয়া ইউনিয়নের চালিতাঘাটা গ্রামে মোছাঃ আলেয়া খাতুন নামে এক অসহায় বিধবা নারীর বাস্তভিটা জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের জহুর আলী গাজীর ছেলে মোহিবুল্লাহ গাজীর বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগী নারী ওই গ্রামে মৃত শামছুর রহমানের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী আলেয়া খাতুন জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পর এতিম সন্তানদের নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে স্বামীর রেখে যাওয়ায় শেষ সম্বল বাস্তভিটায় বসবাস করে আসছেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি একই গ্রামের জহুর আলী গাজীর ছেলে মোহিবুল্লাহ গাজী জোরপূর্বক তার বসতভিটার একটি অংশ দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
তিনি জানান, জমিটি আমার স্বামীর রেকর্ডীয় ও পৈত্রিক সম্পত্তি হওয়া সত্ত্বেও কোনো রকম কাগজপত্র বা বৈধ অনুমতি ছাড়াই মহিবুল্লাহ ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বাঁধা দিতে গেলে উল্টো ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
আলেয়া খাতুনের দেবর আব্দুল গফুর বলেন, আমার বিধবা ভাবির নিজের কোনো পুত্র সন্তান নেই। বাস্তবভিটা ছাড়া তাঁর আর কিছুই নেই। অথচ সেই ভিটাটুকুও দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালী একপক্ষ। আমরা লিখিতভাবে মেম্বার ও স্থানীয়দের জানিয়েছি, কিন্তু কেউই কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু জাফর বলেন, আমি উভয় পক্ষকে ডেকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের কথা বলেছিলাম। কিন্তু বিবাদী পক্ষ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি এবং আমার কথাও উপেক্ষা করেছে।
এই ঘটনায় আলেয়া খাতুন গত ৬ মে ২০২৫ তারিখে স্থানীয় ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, বিবাদীপক্ষ জোর করে তার বাস্তভিটার একাংশ দখল করে পাকা ভবন নির্মাণে লিপ্ত রয়েছে, যা বেআইনি ও মারাত্মক আইনশৃঙ্খলা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
অভিযোগে উল্লিখিত জমির বিবরণ অনুযায়ী, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার চালিতাঘাটা মৌজার জে.এল নং ১১, আরএস খতিয়ান নং ২৬৯, দাগ নং ৩৯৫ এর অন্তর্ভুক্ত জায়গাটি ভুক্তভোগীর পৈত্রিক সম্পত্তি।
ভুক্তভোগী আলেয়া খাতুনের দাবি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যেন জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে বেআইনি দখল ও ভবন নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে তাকে সুরক্ষা দেয় এবং তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে শান্তিপূর্ণ বসবাস নিশ্চিত করে।
এ বিষয়ে এখনো অভিযুক্ত মহিবুল্লাহ গাজীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।এই ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও ক্ষতিগ্রস্তের জন্য দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠেছে।