By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ না আসলে শক্ত অবস্থানে জায়ামাত
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ না আসলে শক্ত অবস্থানে জায়ামাত
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ না আসলে শক্ত অবস্থানে জায়ামাত

Last updated: 2025/10/26 at 12:26 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 3 weeks ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই নির্বাচনে সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না আসলে জায়ামাত শক্ত অবস্থানে রয়েছে তখন ভোট হবে জায়ামাত বিএনপির মধ্য আর যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসতে পারে তাহলে সাতক্ষীরার ‌ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হিসাব-নিকাশ পাল্টে ‌যাবে ‌। বর্তমানে বিএনপি কমিটি নিয়ে ব্যস্ত ও নানা জায়গায় দলীয় কোন দল মিটাতে সময় পার করছেন এই সুযোগে জায়ামাতে ইসলাম সাতক্ষীরায় শক্ত ঘাটি ‌তৈরি করেছেন ‌।আগামী ফেব্রুয়ারসাতক্ষীরার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণায় সাতক্ষীরার সবকটি আসনে প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে নির্বাচনি ব্যস্ততা বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিতে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জেলার চারটি নির্বাচনি আসনে এবার তিন ডজনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে যারাই প্রার্থী হন না কেন, এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মধ্যেই হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার ও সচেতন মহল।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের ভোটারবিহীন নির্বাচন ছাড়া এসব আসনে বিগত দিনে জামায়াত-বিএনপির ব্যাপক সফলতা ছিল। নির্বাচন এগিয়ে এলেও জামায়াত ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তবে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন এসব আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে আসছে।

আগামী নির্বাচনে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেনÑসাতক্ষীরা-১ আসনে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, সাতক্ষীরা-২-এ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩-এ কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাশার এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনে দুবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম। তারা কেন্দ্রীয় মনোনয়ন নিয়ে ১০ বছর আগে থেকে স্ব স্ব নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন।

অন্যদিকে জেলায় সাবেক তিনজন মন্ত্রী ও একাধিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় বিএনপির অবস্থানও বেশ মজবুত। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপির মধ্য থেকেই জেলার সংসদ সদস্যরা (এমপি) নির্বাচিত হবেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া)

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। এখানে ভোটার সাড়ে চার লাখের বেশি।

এই আসনের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত আসনটিতে বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থীর রাজনৈতিক কর্মসূচি দেখা গেছে। এছাড়া অনেকেই নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন। আলোচনা আছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও দেখা যেতে পারে একাধিক ব্যক্তিকে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনগণকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করেছেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব। শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ‘সাজানো মামলায়’ ৭০ বছরের কারাদণ্ড হলে টানা ছয় বছর জেল খেটে জুলাই বিপ্লবের পর মুক্ত হন। এই হেভিওয়েট নেতার প্রতি কেন্দ্র ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

একই ভাবে সাংগঠনিক কর্মসূচি জোরদার করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। এই আসনে দলটির একক প্রার্থী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ। তার পক্ষে দিনদিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনয়নের প্রত্যাশায় কাজ শুরু করেছেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্তারুজ্জামান। একই ভাবে এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়েছেন সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমান।

জানতে চাইলে হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, ‘দল আমাকে আগেও জনগণকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছে, আমার পরীক্ষা নিয়েছে। আমি জনগণকে সেবা করে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আগামীতেও জনগণকে সেবা করার সুযোগ পাব বলে মনে করি। যদিও বিষয়টি দলের ওপরই নির্ভর করবে।’

সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ আসনে অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহকে মাঠে কাজ করতে বলা হয়েছে। এখনো নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা হয়নি। তবে আমরা বিগত সময়েও সাতক্ষীরার মানুষ ও মাটির সঙ্গে মিশে ছিলাম। সে অনুযায়ী আমরা সাধ্যমতো কাজ করছি এবং ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি।’

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। দল চাইলে বিএনপির মনোনয়ন নিয়েই আগামীতে প্রার্থী হব।’

সাংবাদিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাইদুর রহমান দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি বিগত পাঁচ-সাত বছর ধরে সাতক্ষীরায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছি। জেলার তরুণ নেতৃত্বের সঙ্গে আমার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এখনো নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হয়নি। তারপরও দল যদি মনে করে তরুণ নেতৃত্ব এগিয়ে আসুক, তাহলেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব।’

সাতক্ষীরা-২ (সদর)

সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে সাতক্ষীরা-২ আসন। চার লক্ষাধিক ভোটার নিয়ে গঠিত আসনটি বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা কর্তৃক সাতক্ষীরায় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মী এবং সাধারণ জনগণের ওপর ব্যাপক জুলুম, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার পেটুয়া বাহিনীর অত্যাচারে সাতক্ষীরা জেলায় জামায়াত-বিএনপির কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী শাহাদাতবরণ করেন এবং দেড় হাজারের বেশি আহত হন। এ সময়ে জেলায় প্রায় দেড় হাজার মামলায় অর্ধলক্ষাধিক জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে আসামি করা হয়। এসব কারণে আগস্ট বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক মাঠ ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। অনেকে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছে। ফলে এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াত-বিএনপির মধ্যে।

স্থানীয় ভোটার ও রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিরপেক্ষ নির্বাচনে বরাবরই এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় এবারও তাদের অবস্থান অনেক মজবুত। তাছাড়া অনান্য রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী এবং এখনো তাদের দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত না হওয়ায় জামায়াতের প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও সাবেক জেলা আমির মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল খালেক শক্ত অবস্থানে আছেন।

অন্যদিকে জেলা বিএনপিও ভালো অবস্থানে রয়েছে। ২০১৮ সালে এ আসনে জেলা বিএনপির চারবারের আহ্বায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ এবং টানা সাতবারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল আলীম দলের মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত ও বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রউফ এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে চান বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল খালেক বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে অবহেলিত সদর আসনের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসন, মুন্সীগঞ্জ থেকে নাভারন রেললাইন স্থাপন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বন্ধসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে জনগণকে সঙ্গে কাজ করা হবে।’

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রহমতুল্লাহ পলাশ বলেন, ‘দীর্ঘদিন স্বৈরাচার ক্ষমতায় থাকায় এ জেলায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। জনগণের রায়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে এ জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং দুর্নীতি বন্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক তৎপরতা চালানো হবে।’

সাতক্ষীরা-৩ (দেবহাটা-কালীগঞ্জ)

কালীগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলা নিয়ে নির্বাচন কমিশন নতুন সীমানা নির্ধারণ করেছে। পূর্বনির্ধারিত সীমানা অনুযায়ী এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৩১ হাজার। আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির ডা. শহীদুল আলম, রহমাতুল্লাহ পলাশ, আইয়ুব আলী, বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান (পূর্ব সীমানা বহালসাপেক্ষে) দলীয় মনোনয়নে তৎপর রয়েছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এখানে জামায়াতের একক প্রার্থী সাবেক জেলা আমির হাফেজ মুহাদ্দিস মাওলানা রবিউল বাশার ব্যাপক গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।

আসনটির মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা জানান, নির্বাচিত হলে তারা অবহেলিত এ এলাকায় দারিদ্র্য বিমোচন, জলাবদ্ধতা নিরসন, নদীভাঙন রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট সংস্কারসহ ব্যাপক কর্মসূচি নেবেন।

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালীগঞ্জের একাংশ)

আগামী নির্বাচন ঘিরে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক তৎপরতা, আনন্দ-উল্লাস ও উৎসাহের আমেজ ফুটে উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণী খসড়া গেজেট এ আনন্দে পানি ঢেলে দেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে না পেরে আওয়ামী লীগের মদতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরার একটি আসন কমিয়ে চারটি করা হয়। ফলে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই উপজেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ জুড়ে দিয়ে বিশাল এলাকাজুড়ে সাতক্ষীরার চার আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় দুটি উপজেলার বাসিন্দাদের জোর আপত্তি সত্ত্বেও তৎকালীন সরকারের ‘স্বৈরাচারী’ সিদ্ধান্ত আর পরিবর্তন হয়নি বলে জানান স্থানীয় ভোটাররা।

এবার আবার বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনমতের তোয়াক্কা না করে আশাশুনি-শ্যামনগরকে একীভূত করে খসড়া গেজেট ঘোষণা করায় দুটি উপজেলার বাসিন্দাদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এ এলাকার লোকজন বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য আবেদন করেন।

ভৌগোলিক দিক দিয়ে বিচ্ছিন্ন দুটি উপজেলার দৈর্ঘ্য প্রায় পৌনে ২০০ কিলোমিটার এবং আয়তন ৮৫০ বর্গকিলোমিটার। নদ-নদী বেষ্টিত ও অসংখ্য দ্বীপ অঞ্চল হওয়ায় উপজেলা দুটির মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। তাছাড়া দীর্ঘদিন জনসংযোগ করে এ আসনের প্রার্থীরা তাদের পক্ষে যে জনসমর্থন সৃষ্টি করেছিলেন, সীমানা বিভক্তির ফলে তাদের সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে নতুন করে রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করা অসম্ভব বলে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য পোষণ করেছে। নতুন সীমানা নির্ধারণে এ আসনের ভোটার সংখ্যা বেড়ে প্রায় চার লাখ ৬৮ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও দুবার নির্বাচিত সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জেলা জজ আদালতের সাবেক পিপি, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাস্টার আব্দুল অহেদ, মো. মনিরুজ্জামান, আশাশুনির বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নাম শোনা যাচ্ছে।

মনোনয়ন দৌড়ে বিএনপির কয়েকজন প্রার্থীর তৎপরতা লক্ষ করা গেলেও একক প্রার্থী হিসেবে জামায়াতের গাজী নজরুল ইসলাম শক্ত অবস্থানে আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

স্বৈরাচার পতনের পর নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এলাকাছাড়া হওয়ার কারণে জেলাব্যাপী নির্বাচনি মাঠ এখন জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির দখলে। আসন্ন নির্বাচনে এ দুটি বড় দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে অধিকাংশ ভোটার মনে করছেন।
দেশে বইছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া। দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় পর ক্ষমতার পালাবদলে বর্তমানে রাজনীতির মাঠে নেই ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। এতে আগাম নির্বাচনী মাঠে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। অন্যতম প্রধান দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে আসছে জামায়াতে ইসলামী।
নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই দুটি দলের শক্ত অবস্থানের আসনগুলোর দিকে সবার চোখ। তার একটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরা। ভোটের রাজনীতিতে এই একটি জেলাকে বলা হয় জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি।
১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরার পাঁচটি আসনের ভোটের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিবারই জামায়াতে ইসলামী তিন-চারটি আসনে জয় পেয়েছে।
২০০৮ সালের আগে পর্যন্ত নির্বাচনগুলোতে সাতক্ষীরা জেলায় ছিল পাঁচটি সংসদীয় আসন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পাঁচটির মধ্যে চারটিতেই জয় পান জামায়াতের প্রার্থীরা। ভোটপ্রাপ্তির দিক থেকেও ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বিএনপির চেয়ে এগিয়ে ছিল জামায়াতে ইসলামী। ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোট গঠন হলে পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দেওয়া হয়। সেবার পাঁচটি আসনেই জয় পেয়েছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে চারদলীয় জোট। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্বিন্যাসে সাতক্ষীরা জেলায় একটি আসন কমে যায়। সেই নির্বাচনেও চারদলীয় জোট থেকে চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া হয়।
একসময়কার সেই জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী এখন বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেশি জোরদার করেছে ধর্মভিত্তিক দলটি। এরই মধ্যে সাতক্ষীরার চারটি আসনে তারা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এই দুর্গ রক্ষা করতে জামায়াতে ইসলামী যে মরিয়া, তা তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতিতেই স্পষ্ট।
অন্যদিকে সাতক্ষীরার প্রতিটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন একাধিক নেতা। জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত এই উপকূলীয় ও ভারত সীমান্তবর্তী জেলায় আগের নির্বাচনগুলোতে ভালো না করলেও এবার সেখানে হানা দিতে চায় বিএনপি। নিজেদের পুরনো ভোটব্যাংকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভোটারদের দিকে নজর তাদের।
এখানে আসনভিত্তিক কেমন হতে পারে বিএনপি-জামায়াতের লড়াই, সেটা দেখে নেওয়া যাক।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জামায়াতের প্রার্থী হচ্ছেন অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ। এই আসনে বিএনপির শক্তিশালী মনোনয়নপ্রার্থী ২০০১ সালের সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব। আরও আছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আকতারুল ইসলাম ও সাংবাদিক সাইদুর রহমান।
এই আসনে ১৯৯১ সালে ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন জামায়াতের আনসার আলী। ১৯ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়ে বিএনপির অবস্থান ছিল তৃতীয়।
১৯৯৬ সালে এখানে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। ২৩ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয় জামায়াতে ইসলামী। প্রায় সমান ভোট পেয়ে জাতীয় পার্টি ছিল তৃতীয় স্থানে। আর ১৮ শতাংশ ভোট নিয়ে বিএনপির অবস্থান চতুর্থ।
সদর উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। তার বিরুদ্ধে লড়তে বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ পলাশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম চেয়ারম্যান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তাসকিন আহমেদ ও আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান। এই আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর কাজী শামসুর রহমান সংসদ সদস্য হন। দুবারই বিএনপির অবস্থান ছিল চতুর্থ। ২০০১ সালেও চারদলীয় জোট থেকে নির্বাচিত হয় জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী।
আশাশুনি-দেবহাটা ও কালীগঞ্জের আংশিক এলাকা নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মুহাদ্দিস রবিউল বাশার। বিএনপির মনোনয়ন লড়াইয়ে আছেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ডাক্তার শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরিকুল হাসান ও ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব আলী। ১৯৯১ সালে এই আসনে জামায়াত প্রার্থী জয়ী হন, সেবার বিএনপির অবস্থান ছিল পঞ্চম। অবশ্য ১৯৯৬ সালে বিএনপি এক ধাপ এগিয়ে চতুর্থ হয়, প্রাপ্ত ভোট ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
শ্যামনগর ও কালীগঞ্জের বাকি অংশ নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলাম। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ইফতেখার আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির।
১৯৯১ সালে এই আসনে প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট নিয়ে জামায়াত ছিল দ্বিতীয়। আর ২০ দশমিক ছয় শতাংশ ভোট নিয়ে বিএনপির অবস্থান ছিল তৃতীয়। তবে ১৯৯৬ সালে এগিয়ে যায় বিএনপি, ২১ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় হয়। আর ১৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট নিয়ে জামায়াতের অবস্থান ছিল চতুর্থ। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাতক্ষীরায় জামায়াতের শক্তির জায়গা হলো তাদের গোছানো সংগঠন ও নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক। অন্যদিকে বিএনপির শক্তি তাদের জাতীয় পর্যায়ের জনপ্রিয়তা এবং সাধারণ ভোটারদের সমর্থন। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে তাদের ভোটও নিজেদের বাক্সে টানার সুযোগ রয়েছে। কট্টর জামায়তবিরোধী ভোটাররাও বিএনপিকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

জন্মভূমি ডেস্ক October 27, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article তীব্র ভারত-বিরোধী মনোভাব সত্ত্বেও কেন বাড়ছে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য?
Next Article শ্যামনগরে উপকূল রক্ষার বনায়নই এখন ধ্বংসের কবলে

দিনপঞ্জি

November 2025
S M T W T F S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
« Oct    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

ওরা উপকারী অতিথি ,ওদের মারবেন না

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় বেশি দামের আশায় খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

পিচের বদলে কংক্রিটের হবে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

ওরা উপকারী অতিথি ,ওদের মারবেন না

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় বেশি দামের আশায় খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

পিচের বদলে কংক্রিটের হবে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক

By জন্মভূমি ডেস্ক 5 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?