সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : এবার কোরবানির পশু বিক্রেতা এবং ব্যাপারীদের মাথায় হাত ,কারণ সাতক্ষীরা সহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী সমার্থক পলাতক থাকায় তাদের কুরবানী করা হচ্ছে না অনেকের,সে কারণে সেই অংশের গরু কারা কিনবে যার কারণে কোরবানির বাজারে এবার মন্দা। ইতিমধ্য খামারি অথবা ব্যবসায়ীরা নানান দুশ্চিন্তায় পড়েছে,। কিছু মানুষ গরু হাটে হাটাহাটি করছে দরদাম করছে কিন্তু গরু কিনছে খুব কম। ব্যাপারী অথবা বিক্রেতা যা দাম চাচ্ছে তার তিন ভাগের এক ভাগ দাম বলছে ক্রেতারা। কলারোয়ার বিশ বছর ধরে কোরবানির পশুর ব্যবসায়ী দিদারুল ইসলাম জানান এবার আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা অনেক সমর্থকরা নানান ঝামেলায় পলাতক থাকায় তাদের কোরবানি করা হচ্ছে না ,সে কারণে সেই পশুর প্রভাব পড়েছে বাজারে সে কারণে বাজারে পশু বিক্রির হার খুবই কম ঈদ উল আযহার আর মাত্র বাকি দুদিন কিন্তু বাজারের গরু বাজারেই রয়ে গেছে কমছে না যে সমস্ত ক্রেতারা আসছে তাদের কাছে দাম চাইলে তিন ভাগের একভাগ দাম বলে চলে যাচ্ছে,,
পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র তিনদিন বাকি থাকলেও সাতক্ষীরার পশুর হাটগুলোতে কেনা-বেচা জমে ওঠেনি। প্রত্যাশিত সংখ্যক ক্রেতা না আসায় হাটগুলোতে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্রেতারা বলছেন গরুর দাম বেশি, অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না, বরং লোকসান হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খামারি ও হাট মালিকরা লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।
জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাট আবাদের হাটে মঙ্গলবার এবং তৃতীয় বৃহত্তম পাটকেলঘাটা হাটে আজ বুধবার গরু কেনা-বেচা ছিল খুবই কম। বিক্রি করতে আনা গরুর সংখ্যাও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম ছিল।
সরেজমিনে আবাদের হাটে দেখা গেছে, গরু মণপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবুও ক্রেতাদের তেমন সাড়া মিলছে না। বিক্রেতাদের অভিযোগ, গো-খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এ দামে বেচা কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ক্রেতারা এর চেয়েও কম দাম আশা করছেন।
পাটকেলঘাটা হাটে বিনেরপোতা এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা মাহতাবউদ্দীন বলেন, ৩ মণের বেশি মাংস হবে না, এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আমার কাছে এই গরুটার দাম সর্বোচ্চ ৯০ হাজার।
ঈদুল আজহা: সাতক্ষীরায় র্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা
ব্যাপারী আরশেদুল ইসলাম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ১০টি মাঝারি সাইজের গরু নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৪টি বিক্রি করতে পেরেছি। বাকিগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে হবে মনে হচ্ছে।
বিগত কয়েক বছর আগে ভারত থেকে হাজার হাজার গরু আসলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরায় খামার ও খামারীর সংখ্যা বেড়েছে। মাত্র ২ বছরে ১০ হাজার খামারের স্থলে এখন জেলায় ১২ হাজার ৮৯৪টি খামার হয়েছে। তবে গো-খাদ্যের দাম অনেকগুণ বাড়লেও সে অনুপাতে গবাদিপশুর দাম বাড়েনি। গত বছর যেখানে গরু মণপ্রতি ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এবার তা ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। এতে লোকসান গুনবার আশঙ্কায় হতাশ খামারিরা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের সরকারি চাকুরীজীবি কামরুজ্জামান তার খামার থেকে আবাদের হাটে গরু এনেছেন। তিনি জানান, দুটি গরু ও ১৮টি ছাগল পালন করেছেন বিক্রির জন্য। ছাগল বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা লাভ হলেও গরুতে লোকসান হচ্ছে।
তিনি বলেন, গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অনেকগুণ। বিচালি, কুড়া, খৈলসহ সমস্ত জিনিসের দাম কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে সে অনুপাতে মাংসের দাম বাড়েনি। খামারগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের উচিৎ গো-খাদ্যের সাথে মাংসের দামের সামঞ্জস্য রাখা।
হাটে গরু কেনা-বেচা কম হওয়ায় আবাদের হাটের ইজারাদার ফারুক রহমানও অর্ধকোটি টাকা ইজারা নিয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। তিনি বলেন, এবার হাটে কেনা-বেচা খুবই কম। ছোট কিছু গরু বিক্রি হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১১টি স্থায়ী ও বেশ কিছু অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে জেলায় ১ লাখ ৬০৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি। অর্থাৎ, ১৫ হাজার ২৮৮টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) ডাঃ বিষ্ণুপদ বিশ্বাস জানান, পশুর হাটে যাতে কোনো রুগ্ন পশু বিক্রি না হয়, তার জন্য তাদের তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে পশুর হাটের এই মন্দা পরিস্থিতি খামারি, ব্যাপারী এবং হাট ইজারাদারদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাতক্ষীরায় পশুহাটে ক্রেতার সংখ্যা কম

Leave a comment