সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ড্রেন এখন মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের ভেতর ও আশপাশে জমে থাকা নোংরা পানিতে লক্ষাধিক মশার লার্ভা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যা রোগীদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ড্রেনের পানিতে জমে আছে পঁচা ময়লা ও পলিথিনজাত বর্জ্য। এসব স্থানে অনায়াসে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস ও কিউলেক্স মশা। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা যেমন একদিকে অসুস্থতা নিয়ে ভুগছেন, অন্যদিকে মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, শৌচাগার ও ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। বিশেষ করে বর্ষাকালে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। কুশখালি গ্রামের আব্দুল নামে এক রোগী বলেন, পাশের ড্রেনে প্রচুর মশা, পানি জমে থাকে বলে আরও বেশি হয়। মশারি ছাড়া এখানে থাকা যায় না।
আরেকজন রোগীর স্বজন বলেন, রোগীকে সুস্থ করতে হাসপাতালে এনেছি, কিন্তু এখন মশার কামড়েই যেন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বারান্দায় রাতে এক মুহূর্ত শান্তি নেই।
হাসপাতালের এই করুণ অবস্থায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয় নাগরিকরা। তাদের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গ ও অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম বলেন, হাসপাতালের গ্রাউন্ড লেভেল নিচু, আর ড্রেনের লেভেল অনেক উঁচু। তাই বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। আমরা বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সচিব স্যারের সাথেও আলোচনা করেছি। ড্রেন ঠিক করতে কোটি কোটি টাকা লাগবে, যা এখনই সরকারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা সচেতনতা তৈরি করছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি সামাল দিতে।
তিনি আরও দাবি করেন, গত এক বছরে এখানে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়নি। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা না গেলেও এমন অনিয়ম, নোংরাভাব এবং উদাসীনতা কবে দূর হবে? প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ড্রেনে গিজ গিজ করছে মশা
