জন্মভূমি রিপোর্ট : বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিচালক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল সহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট খালিশপুর আমলী আদালতে এ মামলা করেন নগরীর খালিশপুর এলাকার বাসিন্দা আনিছা সিদ্দিকা। ঐ আদালতের বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য খালিশপুর থানায় প্রেরণ করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, কেএমপির সাবেক সহকারী পুলিশ কশিনার গোপিনাথ কাঞ্জিলাল, খালিশপুর থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ শেখ মুনীর উল গীয়াস, এস আই মো. গোলাম মোস্তফা, এস আই রেজওয়ান উজ্জামান, এস আই এস কে এম শরিফুল ইসলাম, এস আই সাগর হালদার, কনস্টেবল তানজিন আক্তার, এস আই সঞ্জিত কুমার মণ্ডল, এস আই মো. রফিকুল ইসলাম, এ এস আই শেখ নুরুজ্জামান, এস আই আরিফুজ্জামান, কনস্টেবল সাজ্জাদুল ইসলাম, কনস্টেবল কামরুন্নেছা হ্যাপি, এস আই মো. রাকিবুল ইসলাম। এছাড়া মামলায় নগরীরবয়রা এলাকার মো. ইয়াছিন আরাফাত, সৈয়দ নাহিদুজ্জামান, সৈয়দ নজিরুজ্জামানসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তানজিলুর রহমান বাদীর ছেলে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন ‘ বিশাবালীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী জড়িত নয়। বিশাবালীর ভাই সুখরঞ্জন বালি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর জানাযায় উপস্থিত হয়ে মন্তব্য করেন।
স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক, সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার গোপিনাথ কাঞ্জিলাল ও খালিশপুর থানার তৎকালীন অফিসার্স ইনচার্জ মুনীর উল গিয়াসের নেতৃত্বে ১৬ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ৩ জন ও আরো ১০/১৫ জন খালিশপুর থানার ৫/১ বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন রোডে বাদীর বাবার বাড়িতে অনাধিকারে প্রবেশ করে। তারা ঐ বাড়ির তৃতীয় তলায় ঘরের দরজা খোলার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এমন কি তারা গুলি করার হুমকিও দিতে থাকে। আনিছা ছিদ্দিকা দরজা খুলে দেন। দরজা খুলতে দেরি হওয়ার কারণে ওসি মুনীর উল গিয়াস তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন তাকে সহকারী পুলিশ কমিশনার ও ওসি তার ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে। তাকে বলে ‘যুক্তরাষ্ট্রে বসে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা ও জনগণকে উত্তেজিত করছে। তখন আনিছা সিদ্দিকা বলেন এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এ কথা শুনামাত্র আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের মালামাল ভাঙচুর ও তছনছ করতে থাকে। তার ঘর থেকে ৩ টি ল্যাপটপ- যার অনুমানিক মূল্য দেড় লাখ টাকা এবং ৪ টি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। এরপর তারা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাঙচুর এবং নিচতলায় অবস্থানরত ভাড়াটিয়া ব্যাচেলরদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে আনিছা সিদ্দিকা, মো. রকিবুল ইসলাম ও মো. তামিম ইকবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। ২০ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫ ডি ধারায় মামলা দায়ের করে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, উক্ত আসামিগণ খালিশপুর থানায় মিথ্যা মামলা করায় দেশসহ সমগ্র পৃথিবীতে তীব্র প্রতিবাদ হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম লি জানান, এ ঘটনার পর পুরো বিশে^ ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এ ঘটনায় আদালত মামলা গ্রহণ করেছে। খালিশপুর থানাকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে আদেশ দিয়েছেন।