জন্মভূমি ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে যে তার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হতে পারে, যেখানে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিতে পারে। তিনি বলেন, “একের পর এক সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকার কারণে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিচ্ছে। আমরা প্রমাণ করেছি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে।” প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের শাপলা হলে দুই সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রাজশাহীর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে শপথবাক্য পাঠ করানোর সময় একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে সেবা প্রদান করে তাদের আকাক্সক্ষা পূরণে কাজ করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার শুধু নগরীতেই নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দিয়েছে। তিনি শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক উন্নয়নের কথা সংক্ষেপে তুলে ধরেন। নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখুন। প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীকে আধুনিক, সুন্দর ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাজশাহী সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াত চক্র সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। বিএনপি সরকার বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিল। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রত্যক্ষ করেছিল যখন বঙ্গবন্ধু তৎকালীন মহকুমাগুলোকে জেলায় পরিণত করেছিলেন এবং জেলাগুলির সার্বিক উন্নয়ন তদারকি করার জন্য জেলা গভর্নর নিয়োগ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী ও সিলেটের আরও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে, সিলেট ও রাজশাহীতে নিরক্ষরতা ও বেকারত্ব দূর করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের সে অনুযায়ী কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তার সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিনামূল্যে ঘর দিচ্ছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।
পরে সাধারণ ওয়ার্ডের ৭৬ জন নবনির্বাচিত কাউন্সিলর এবং দুই সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররাও একই স্থানে শপথ নেন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪০ জন এবং সিলেটের ৩৬ জন কাউন্সিলর। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম কাউন্সিলরদের শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম। এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২১ জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ১৬০,২৯০ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোঃ মুর্শিদ আলমকে পরাজিত করেন, যিনি মাত্র ১৩,৪৮৩ ভোট পেয়েছেন। একই দিনে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১১৮,৬১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবু ৫০,৩২১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।