সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সুন্দরবনে ১লা জুন থেকে ৩ মাসের জন্য মাছ কাঁকড়া আহরণসহ পর্যটক পর্যন্ত প্রবেশ করা সরকারী ভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। কিন্তুু সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে চলছে তার ব্যতিক্রম। ১৫ দিনে প্রতি নৌকায় ৫ হাজার টাকা হারে চুক্তি দিয়ে ৪ স্টেশন যথা কদমতলা, কৈখালী, বুড়িগোয়ালীনী ও কোপাদকের স্টেশন কর্মকর্তারা প্রায় ৩ হাজার নৌকা সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া আহরণ করাচ্ছে। এই টাকার বড় অংশ চলে যাচ্ছে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) ইকবাল হাসান চৌধুরীর পকেটে। জেলেরা সুন্দরবনে প্রবেশ করে মাছ কাঁকড়া আহরণ করে শ্যামনগর উপজেলার সোনার মোড় মৎস্য আড়ত ও কলবাড়ী মৎস্য আড়তে প্রতিদিন সকাল ৬ থেকে ৯টার মধ্যে বিক্রি করছে। প্রতিদিন এই ২আড়তে শত শত মন সুন্দরবনের আহরণকৃত চিংড়ী বিক্রি হচ্ছে। বন বিভাগে নিয়োজিত দাদালরা এই চুক্তির টাকা সময়মত স্ব-স্ব স্টেশন কর্মকর্তার কাছে পৌছে দিচ্ছে। সেখান থেকে স্টেশন কর্মকর্তারা ইকবাল হাসান চৌধুরীসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করছে বলে বন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দাদাল জানিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানাগেছে সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হাসান চৌধুরী বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীকেও এই টাকার ভাগ দিয়ে ম্যানেজ করে চলছে। সূত্রে জানা যায় পশ্চিম সুন্দরবনের ৪টি স্টেশনে ৩ হাজার মাছ কাঁকড়া ধরার বি,এলসি রয়েছে। জুলাই মাসে বি,এল,সি নবায়নের জন্য ৩৭.৫০ টাকা সরকারী রাজস্ব থাকলেও জেলেদের কাছে প্রতি বি,এল,সি তে ১২ শত টাকা চাওয়া হচ্ছে। বনবিভাগের সহযোগীতায় উপকূলবর্তী অনেক সংবাদিকদের নামেও সুন্দরবনে মাছ কাঁকড়া আহরনের নৌকা চলছে। এ জন্য স্থানীয় সাংবাদিকরা বন বিভাগের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে না। সূধী মহলের অভিমত আগে সুন্দরবনে বন দসূরা জেলেদেরও অত্যাচার নির্যাতন করেছে আর এখন দূর্নীতিবাজ বনরক্ষীরা জেলেদেরও কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্য করে সুন্দরবনকে ধ্বংশের দারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছে। লুটেদের দল নিজেদের আখের গোছোতে এই সমস্ত অবৈধ টাকা নিয়ে করছেন আলিশান গাড়ি ও বাড়ি। নিজ সহ স্ত্রী সন্তানদের নামে বে নামে রয়েছে ডজন ডজন ব্যাংক হিসাব। কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা আছাদুজ্জামানের কাছে ০১৭২৪ ২১৮৯২৭ নম্বরে জেলেদের প্রবেশের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ক্ষমতা আছে তাই জেলেদের সুন্দরবনে ঢুকাচ্ছি। আপনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে কেন খোদ বন মন্ত্রীকে জানান আমার তাতে জায় আসে না, টাকা কি আমি একা খাই সকল কে ম্যানেজ করতে হয়। সুন্দরবনে ঘাইজাল নিয়ে যাওয়ার কোন অনুমতি নেই কিন্তুু প্রত্যেক জেলেরা এই ঘাই জাল নিয়ে বিষ প্রয়োগ করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ আহরণ করে নিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে আছাদুজ্জামান বলেন জেলেরা কি আপনার পুকুরে যেয়ে বিষ দেচ্ছে আপানর এত লাগছে কেন, ঠান্ডা হন নইলে আপনার বিপদ অনিবার্য্য। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকরী বন সংরক্ষক ইকবাল হাসানের সাথে জেলেদের সুন্দরবনে অবৈধ প্রবেশের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন বেশি চেচাইয়েন না দালাল আর জেলেদের দিয়ে কিন্তুু একেবারেই হত্যা করে দেব। সুন্দরবনের বিষয় নিয়ে আপনি বেশি বাড়াবাড়ি করেন। কই আর কোন সাংবাদিকরা তো ঝামেলা করেনা। পরে তিনি বলেন কিভাবে এই সমস্ত নৌকা ঢুকছে আমার জানানেই। এই প্রতিবেদকের সাথে ০১৯৯৯ ০০৫৮৯১নম্বরে পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আবু নাসের মহসীন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আপনারা সাংবাদিকরা নিজেরাই অভিজান চালিয়ে এই সমস্ত নৌকা ধরিয়ে দিন আমার জানামতে সুন্দরবনে এই ৩ মাস কোন নৌকা বা পর্যটক প্রবেশের কথা না, আমার মনে হয় সাংবাদিক ভাই আপনি ভুল বলছেন, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি তা হয়ে থাকে কিংম্বা আমার কোন অফিসার এর সাথে জড়িত থাকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির সাহেবের কাছে ০১৭১৫ ২১২২৭৭ নম্বরে কথা হলে তিনি বলেন আমি ইতোমধ্যে হাইকমান্ডের নির্দেশ পেয়েছি যে কোন সময় অভিযানে নামব। এর পরে ০১৯৯৯ ০০৫৮৬৯ নম্বরে কথা হয় সি,এফ মিহির কান্তি দে এর সাথে তিনি বিষয় গুলো ধর্য্যসহকারে শুনে বলেন আমাকে বলতেছেন ঠিকই কিন্তুু ডি,এফ,ও অন্যান্য বনরক্ষীরা এ সব বিষয় অসীকার করেন। অতি শিঘ্রীই আমি সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রবেশ করব এবং আপনার অভিযোগ গুলো একটা একটা করে গুরুত্ব সহকারে দেখব। অনিয়ম পেলে আমার কলমে যেটা আছে তা করে দেব। তিনি আরও জানান যে সমস্ত বনরক্ষীরা এই অসৎ উদ্দেশ্য চলছে তারা দেশরত্ন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা স্ম্যার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে বাঁধা গ্রস্থ করছে। প্রমাণ হলে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ০১৯৯৯ ০০০০০১ নম্বরে কথা হয় প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন এর সাথে পশ্চিম সুন্দরবনের সার্বিক বিষয় প্রধান বন সংরক্ষক মহোদয়কে অবহিত করা হলে তিনি বলেন আমি তো ঢাকায় বসে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। আমি তো শুধু সুন্দরবনের দায়িত্বে থাকিনা বাংলাদেশের সব বনের দায়িত্ব আমার। আপনি একটু খুলনা সি,এফ সাহেবের সাথে কথা বলুন, উনি কোন ব্যবস্থা না নিলে তখন আমি দেখব। ০১৭১১ ৫২৩৪০৩ নম্বরে কথা হয় মাননীয় পরিবেশ জলবায়ু ও বন মন্ত্রী সাবের হোসেন এর সাথে তিনি অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে অভিযোগ গুলো শোনেন এবং বেশ কিছু দালালের নাম জানতে চান। দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের মৃত এন্তাজ গাজীর ছেলে আমজাদ হোসেন, আবুবকর গাজীর ছেলে মোঃ আজিবর রহমান ও আকবর আলী, পিতা-অজ্ঞত, রফিকুল ইসলাম, পিতা-অজ্ঞত, এদের নাম জানানো হয়। কত গুলো জেলে বর্তমানে সুন্দরবনে আছে সেটাও উনি জানতে চাইলে উনাকে অবহিত করা হয়। অভিযোগটি বন বিভাগের কোন কোন অফিসার কে জানানো হয়েছে সেটিও উনি জানতে চান। পরে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন ঠিক আছে আমি হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে দেখব যদি আপনার অভিযোগের সত্যতা মেলে তবে এর সাথে যে সমস্ত কর্মকর্তারা জড়িত আছে সে যেই হোকনা কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর স্ম্যার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে যারা বাধাগ্রস্থ করছে প্রয়োজনে তাদের চাকুরীচ্যুত করা হবে। ০১৭১১ ৫৪১৫৬৯ নম্বরে কথা হয় মাননীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামাল মহোদয়ের সাথে তিনি বলেছেন আমিতো ঐ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব না তার পরেও বিষয়টি মন্ত্রীসভায় উত্থ্যাপন করব। এই প্রতিবেদক কে সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হাসান চৌধুরীর নেতৃত্বে হত্যা করার হুমকির বিষয়টি মাননীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ঠিক আছে আমি এ বিষয় অবগত থাকলাম। আপনি থানায় একটি জিডি করেন।