সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নিল ডুমুর টলোয়ার মালিক রেজাউল করিম, আনিসুর, তাজ উদ্দিন, মমিন হোসেন, আনসার আলী, মিজানুর রহমান, ও জবেদ আলী জানান এখান থেকে পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন বর্তমান দিন দিন এই নীল ডুমুর ঘাট দিয়ে কলাগাছি দোবেকি পিকনিক স্পট দেখার জন্য প্রতিদিন বিদেশীরা আসছে প্রতিনিয়ত বিদেশীদের আনাগোনা বাড়ছে এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সহকারে বন সংরক্ষক মোঃ মশিউর রহমান জানান সুন্দরবন ভ্রমণে বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে দেশি পর্যটকদের চেয়ে সরকারি রাজস্ব বেশি নেওয়া হয়। এটা সরকারি নির্ধারণ দিন দিন সাতক্ষীরা রেঞ্জ দিয়ে বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করছে অনেক পর্যটকরা সরকারিভাবে অনুমোদন নিয়ে সমুদ্র সৈকত মান্দার বাড়িয়া সহো বিভিন্ন স্থানে তিন চার দিনের জন্য রাত্রি যাপনের যাত্রা করছে এতে বন বিভাগ স্কড দিয়ে সহায়তা করছে সরকার প্রতি বছর মাছ কাকড়া গোলপাতা আহরণের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছ থেকে একটা বড় অংকের রাজস্ব পাচ্ছে।
প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। প্রকৃতি যেন তার দু’হাত ভরে সুন্দরবনকে সাজিয়ে তুলেছে।
চারদিকে ঘন সবুজ পরিবেশের মাঝে বুঁদ হয়ে থাকার নেশায় যেকোনো পর্যটকেরই পছন্দের স্থান সুন্দরবন। ভরা এই পর্যটক মৌসুমে সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
বছরজুড়ে সুন্দরবনে পর্যটকদের আসা-যাওয়া থাকলেও এই মুহূর্তে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পর্যটক ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় এখন পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
আর এ পর্যটকদের মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে ভিনদেশি পর্যটক। বিশ্বের সেরা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন প্রকৃতির রহস্যঘেরা।
সারি সারি সুন্দরী, পশুর, কেওড়া, গেওয়া এবং গোলপাতা গাছ। দৃষ্টি যতদূর যায় সবখানেই যেন কোনো শিল্পী সবুজ অরণ্য তৈরি করে রেখেছেন। অপরূপ চিত্রল হরিণের দল, বন মোরগের ডাক, বানরের চেঁচামেচি, মৌমাছির গুঞ্জন ও বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন। এসব বৈচিত্র্যময়তার কারণে বরাবরই বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের কদর আলাদা। গত দুই বছর করোনা থাকার কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা তলানিতে নেমে এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে সে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোটাই।
এমন সুখবর জানালেন, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম।
তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা সুন্দরবনের বেড়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ২২৮ জন বিদেশি সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন এবং এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। চলতি মাসে কত জন বিদেশি পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন তা মাস শেষ হলে জানা যাবে।
এছাড়া পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশি পর্যটকের পাশাপাশি সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
চলতি মৌসুমে রাসমেলার পূণ্যার্থীদেরসহ ৪০ হাজার ৭৮ জন পর্যটক সুন্দরবনে এসেছেন। এর মধ্যে পূণ্যার্থী ৭৫২৭ জন। ৪৭৭ জন বিদেশি। দেশি-বিদেশি পর্যটক মিলে রাজস্ব এসেছে মোটি ৬২ লাখ ১২ হাজার ৮৬৫ টাকা।
মোংলার দক্ষিণ চিলার বাদাবন ইকো-কটেজের পরিচালক মো. লিটন জমাদ্দার বলেন, নতুন বছরে দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা সুন্দরবনের বেড়েছে। সম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনের ঘুরতে আসা ইতালি, ফ্রান্স, ব্রাজিল, জার্মানি, নেদারল্যান্ড বেশ কয়েকজন পর্যটক আমাদের কটেজে অবস্থান করেছিলেন। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ, নিরাপত্তার সঙ্গে নিশিযাপন ও মানসম্মত খাবার খেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে কটেজে থাকা এলেক্সঅ্যান্ড্র নামের এক ইতালিয়ান পর্যটক বলেন, সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আমরা ভীষণ অভিভূত। অনেক ভালো লেগেছে। যে কটেজে থেকেছি তার খাবার ও ব্যবস্থাপনা অনেক চমৎকার। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় এমন কটেজ ভাবাইযায় না।
উড়া ট্যুরস অ্যান্ড ট্যাভেলসের স্বত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম হিরণ এই প্রতিবেদককে বলেন, নিরাপদে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য শীতকালই উপযুক্ত সময়। যে কারণে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পর্যটকরা সুন্দরবন আসছেন।
হিরণ জানান, সম্প্রতি ১০-১১ জনের ইংল্যান্ডের একটি পর্যটক টিম আমাদের ট্রাভেল এজেন্সির তত্ত্বাবধানে সুন্দরবনে ঘুরে গেছেন।
এদিকে দেশি-বিদেশি পর্যটক বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সম্ভাবনাময় পর্যটনখাতকে জাগিয়ে তুলতে পারলেই অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী হবে। উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে এ খাতে আমাদের গুরুত্ব বা নজর দিতে হবে। আর বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারলে এ খাতে রাজস্ব অনেক বাড়বে।
সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানসমূহ: সুন্দরবনের কিছু মনোমুগ্ধকর স্থান রয়েছে। যেখানে না গেলে আপনার সুন্দরবন যাওয়া সার্থক হবে না। যেমন হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, শরণখোলা, ছালকাটা, টাইগার পয়েন্ট টাওয়ার, টাইগার পয়েন্ট সি বিচ, জামতলা সি বিচ, সাত নদীর মুখ, কালীরচর উল্লেখযোগ্য।
ভ্রমণকালে যা সঙ্গে রাখতে হবে: ভ্রমণকালে সুপেয় পানীয়ের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স ও অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটর। বন কর্মকর্তার অনুমতি প্রাপ্তির পর ভ্রমণকালে লাগবে সুদক্ষ ও সশস্ত্র বনপ্রহরী।