হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল : স্ত্রী,শ্বাশুড়ি‘র প্রতারনার ফাঁদে পড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন আছাদ মোল্যা মদন (৫৫)। স্ত্রী ও শ্বাশুড়ি তার সর্বস্ব লুটে নিয়ে তাকে ঘরছাড়া করার পায়তারা করছেন বলে মদনের অভিযোগ। ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে তিনি চরম হতাশায় ভুগছেন। শিশু সন্তানর্দে নিয়ে কোথায় আশ্রয় নিবেন ? কিভাবে তাদের মানুষ করবেন? এ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন মদন। হতাশাগ্রস্থ মদন নড়াইল শহরের রূপগঞ্জের মুচিপোল এলাকায় রাজু সেনেটারী নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি জানান,তাদের বাড়ি মাগুরা জেলার মুহাম্মদপুর থানার যশোমন্তপুর গ্রামে। বিয়ের পর তার শ্বাশুড়ি হাওয়া বেগম ও স্ত্রী স্বপ্না‘র কথায় রাজু সেনেটারী নামক প্রতিষ্ঠানটি স্ত্রী স্বপ্না খাতুন (৪৫) এর নামে লিখে দেন। রাজু সেনেটারীর পাশেই বস্তিতে শ্বাশুড়ির সাথে বসবাস করে আসছিলেন। স্ত্রী শ্বাশুড়ি ও শালীদের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে দীর্ঘ ব্যবসায়ী জীবনের সঞ্চিত সব অর্থ ও ব্যবসায়ের মালিকানা স্ত্রী স্বপ্নার অনুকুলে হস্তান্তর করেন।
ইতোমধ্যে ব্যবসায়ের মুলধন প্রায় ২০ লাখে পৌছেছে।
রোববার (৪ আগষ্ট) সকালে এসব ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে মদন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সাংবাদিকরা চলে আসার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার অপারাধে তার শ্বাশুড়ি,শালী সহ কয়েকজন মিলে মদনকে আবারও শাসিয়ে আসে।
কান্না জড়িত কণ্ঠে মদন জানায়, বিগত ৬ মাস আগে থেকে তার শ্বাশুড়ি,স্ত্রী ও শালীদের আচরন পাল্টাতে থাকে। তারা নানা অজুহাতে মদনকে হেনস্থা করছে। তাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নড়াইল ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। এমনকি কয়েক দফা লোকজন দিয়ে তার গায়ে হাত তুলেছে। সন্তানদের সহ তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। তার শ্বাশুড়ি একাধিকবার থানা পুলিশে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানী করেছে। শনিবার (৩ আগষ্ট) দুপুরে মদনের ছেলে সাকিবুল মোল্যা (৭) কে তার শ্বাশুড়ি হাওয়া বেগম দা নিয়ে তাড়া করে। মদনের ঘর থেকে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। অথচ উল্টো আবার মদনের বিরূদ্ধে থানা পুলিশে অভিযোগ দেয়। পুলিশ এসে সিসি-টিভি ফুটেজ চেক করে দেখতে পান মদনের শ্বাশুড়ি হাওয়া বেগম মদনের ছেলে সাকিবুলকে দা নিয়ে ধাওয়া করছে। এ ফুটেজ দেখে হাওয়া বেগমের মিথ্যা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশ চলে যায়। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সামাজিক ব্যক্তিদের নিকট একাধিকবার মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন হাওয়া বেগম। খোঁজ খবর নিয়ে মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে হাওয়া বেগমকে ভালো হওয়ার জন্য সকলেই অনুরোধ করেছেন। বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় সকলেই তার প্রতি সহানুভতি দেখালেও তিনি মদনকে উৎখাত করতে সকল প্রক্রিয়া অব্যহত রেখেছেন। মদন আরোও জানায় পাশর্^বর্তী দু‘টি বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। মাদক ব্যবসা চলে। বিভিন্ন সময় তিনি এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করেছেন। অপকর্ম ঠেকাতে সিসি-টিভি লাগিয়েছেন। সিসি-টিভি থাকায় তারা নির্বিঘ্নে অপকর্ম করতে পারছে না। তাই তারা একজোট হয়ে তার শ্বাশুড়িকে উস্কানি দিয়ে তাকে এলাকাছাড়া করার জন্য নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মদনের শ্বাশুড়ি হাওয়া বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে কয়েকজন নারী এসে উচ্চকণ্ঠে বলেন,মদনের পক্ষের লোকজনের সাথে কোন কথা নেই। কেউ কোন কথা বলবে না। নড়াইল সদর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন,হাওয়া বেগম তার জামাই মদনের বিরূদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোন তথ্য প্রমান দিতে পারেননি। তদন্ত করে মদনের বিরূদ্ধে দেয়া অভিযোগের কোন প্রমান মেলেনি। তবে মদন তার শ^শুড়ির বিরূদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্ত্রী-শ্বাশুড়ির প্রতারনার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত মদন!
Leave a comment