জন্মভূমি ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বৈরতন্ত্রের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে চরম মূল্য দিয়েছিলেন রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র,আওয়ামী লীগের এক সময়কার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদকে। তারা দুজনেই হারিয়েছিলেন মন্ত্রীত্ব। ২০১৪ সালে ঘটে যাওয়া এই দুই ঘটনায় দেশজুড়ে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে একতরফা নির্বাচনের আইনি বাধা গুলো নিয়ে শেখ হাসিনাকে বুঝিয়ে ছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। তবে তাতে লাভ হয়নি। উল্টো নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের।
এক সময়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন তিনি। মন্ত্রী হলে সরকারি নানা সুবিধা মেলে। এটা বলাই বাহুল্য। সেখানে পাঁচ বছরে কোনও কিছুই স্পর্শ করেননি। তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেননি। সরকারের বরাদ্দকৃত বাড়িতেও ওঠেননি।বিদেশ সফরে মন্ত্রীদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকলেও তিনি চলেছেন বিমানের সাধারণ আসনে।
দুপুরের খাবারের জন্য সরকারি দপ্তরের কোনও খরচ নেননি৷ খাবার নিয়ে আসতে নিজের বাসা থেকে পরিবারের সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা ছিল তারা কেউ পাঁচ বছর জাতীয় সংসদ ভবন এবং সচিবালয় মুখো হবেন না। পাঁচ বছর মন্ত্রী থেকেও সুযোগ সুবিধা এড়িয়ে এমন নির্মোহ ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
২০০৯ সালের শুরুর দিকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শফিক আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি আগের বছরের শেষ দিকে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের অপেক্ষায় মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবি তখন তুঙ্গে৷ একইসঙ্গে আপিল বিভাগে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের শেষ এবং রায় কার্যকর দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছিল অভিজ্ঞ, বিশ্বস্ত এবং আইনে পারদর্শী একজন ব্যক্তিত্বের কাকে এই গুরুদায়িত্ব দেওয়া যায়? এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল তখন রীতিমতো গবেষণায় ব্যস্ত। এর কয়েক মাস আগে ব্যারিস্টার শফিক সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে কারান্তরীণ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে মুক্ত করতে আইনি লড়াইয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রোষের শিকার আরেকজন হলেন বিউটি অব পলিটিক্স খ্যাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাঁর অপরাধ ছিল ২০১৪ সালে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট চেয়েছিলেন। পরিণাম স্বরূপ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দপ্তরবিহীন করা হয় তাকে।
ওয়ান ইলেভেনের সংকটময় মুহূর্তে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমানের সঙ্গে শক্ত হাতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন সৈয়দ আশরাফ। দল ক্ষমতায় এলে তাঁকে দেওয়া হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এরপর দলের কাউন্সিলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।দলের ভেতরে এবং বাইরে জনপ্রিয়তায় ইস্যু নিয়েও এমন রাজনীতিবিদ ইতিহাসে নেই বললেই চলে। সৈয়দ আশরাফের এই কারিশমা রহস্য কারওই জানা নেই। বিষয়টি বরাবরই ছিল সবার কাছে বিস্ময়কর।
স্বৈরতন্ত্রের প্রতিরোধে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছিলেন দুই মন্ত্রী

Leave a comment