
জন্মভূমি ডেস্ক : গোপনে এসে বাংলাদেশে শুটিং করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিচালক রাহুল। বিষয়টি প্রকাশ পেতেই নাখোশ হয় টলিউডের বেশ কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু জল যে এতদূর গড়াবে কে জানত! হ্যাঁ, ওই য়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার সকাল থেকে অচল হয়ে গেল টলিউড। বন্ধ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের সকল সিনেমা ও সিরিয়ালের শুটিং।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টলিউডের পরিচালকরা। অপেক্ষা ছিলআনুষ্ঠানিক ঘোষণার। গতকাল রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অপেক্ষার অবসান ঘটাল ডিরেক্টর গিল্ড।
তাদের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, “অধিকাংশ পরিচালক সদস্যের আবেগ ও মতামতকে গুরুত্ব এবং মান্যতা দিয়ে সংগঠনের কার্যকরী সমিতি আগামীকাল ২৯ জুলাই থেকে যত দিন পর্যন্ত না পরিচালকদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষার সমস্ত শুটিং ফ্লোরে সদস্যদের অনুপস্থিত থাকতে অনুরোধ করছে। বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার ক্ষেত্রে এই অনুরোধ প্রযোজ্য নয়।”
এরপর বলা হয়, “আমরা মনে করি, ফেডারেশন একটি ইন্ডাস্ট্রির একচ্ছত্র নিয়ামক সংস্থা হতে পারে না। ভুলভ্রান্তি, সমস্যা যাই হয়ে থাক, তার সমাধান না করে কাউকে জোর করে কর্মবিরতি নিতে বাধ্য করা অসাংবিধানিক। বিশেষত, ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমাদের ডিরেক্টর্স গিল্ড রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ওপর আরোপিত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও যে ভাবে বাকি গিল্ডের কলাকুশলীরা অসহযোগিতার পথে হেঁটেছেন তা শুধু রাহুলের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেক পরিচালকের জন্য অপমানজনক এবং ক্ষতিকারক। আমাদের এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ আগামীতে যদি মাধ্যম নির্বিশেষে কোনও পরিচালক কোনও রকম সমস্যার মুখে পড়েন, তার পাশে সমস্ত পরিচালকরা দাঁড়াবেন, সেই অঙ্গীকারও আমরা করছি।”
এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে টলি পরিচালকদের অনেকেই হয়েছেন একমত। স্বাক্ষর দিয়ে প্রকাশ করেছেন একাত্মতা। এরইমধ্যে সেখানে সই করে সম্মতি জানিয়েছেন রাজ চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, অতনু ঘোষ, দেবালয় ভট্টচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
শুরুর দিকে বাংলাদেশে শুটিংয়ের বিষয়টি বেমালুম অস্বীকার করেছিলেন রাহুল। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে নিজেদের কাজ করে যায় ফিল্ম ফেডারেশন ও ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। ৩ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কিশমিশের নির্মাতার ওপর। সংগঠনগুলোর চাপে রাহুলকে নিজেদের ছবির পরিচালকের আসন থেকে ছেঁটে ফেলে প্রভাবশালী প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ।
অবস্থা বেগতিক দেখে সবকিছু স্বীকার করেন রাহুল। সেইসঙ্গে টেকনিশিয়ানদের বিল বাকিসহ তার ওপর আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। দেন প্রমাণও। নির্মাতার দেওয়া তথ্য প্রমাণ দেখে অপরাধ খুঁজে না পেয়ে তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞার খড়গ সরিয়ে নেয় ডিরেক্টর গিল্ড। হারানো ছবির কাজও ফিরে পান রাহুল।
তবে নিজেদেরর অবস্থানে অনড় থাকেন টেকনিশিয়ানরা। রাহুল উপস্থিতি দেখে শুটিং বন্ধ রাখেন তারা। ফলে বসে থাকতে হয় প্রসেনজিতের মতো সুপারস্টারকে। ফেডারেশনও ছিল টেকনিশিয়ানদের পক্ষে।
বিষয়গুলো গায়ে লাগে পরিচালকদের। তারা সকলে সরব হন রাহুলের পক্ষে। টেকনিশিয়ানবরা কাজে না এলে তারাও শুটিং বন্ধ রাখবভেন বলে হুমকি দেন। তবে অন্যপক্ষের অবস্থান আগের মতোই থাকলে বিজ্ঞাপ্তির মাধ্যমে কথামতো কাজ শুরু করলেন পরিচালকরা। আজ সোমবার থেকে টলিউডের সিনেমা সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ হয়ে গেল অনির্দিষ্ট কালের জন্য।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত