জন্মভূমি ডেস্ক : আদালতের নির্দেশে তিন দফায় শত একর জমি ও একাধিক ফ্ল্যাট জব্দ হয়েছে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের। এত সম্পত্তির হদিস মিললেও এখনো পর্যন্ত বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। শিগগিরই মামলা করা হবে।
সাবেক পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠাকে ভয়ংকর বলে জানিয়েছেন দুদকের এই আইনজীবী।
তিনি জানান, দুদক আইন অনুযায়ী যেগুলো অপরাধ ধরা হয়, তার সবই করেছেন বেনজীর।
সাবেক এই আইজিপি কোথায় আছেন তা জানে না সরকারের কেউই।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ ও ২৬ মে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বেনজীর পরিবারের ১৯৮ একর জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যার দলিল মূল্য ২০ কোটি ৭১ লাখ ৯ হাজার টাকা।
এ ছাড়া, বেনজীরের পরিবারের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং পরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানিও জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সবমিলিয়ে অ্যাকাউন্ট এবং কোম্পানি ছাড়াও দুদিনে বেনজীরের পরিবারের প্রায় ২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
জব্দ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে বেনজীরের স্ত্রীর তিনটি ও মেয়ে জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই চারটি ফ্ল্যাট ঢাকার গুলশানে অবস্থিত র্যানকন আইকন টাওয়ারে। চারটি ফ্ল্যাটের দলিল মূল্য ধরা হয়েছে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা। এসব ফ্ল্যাটের তিনটি রয়েছে স্ত্রী জীশান মির্জার নামে।
স্ত্রীর নামে ভবনটির ১৩ ও ১৪ তলায় থাকা তিনটি ফ্ল্যাটের দলিল মূল্য এক কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া মেয়ে জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের নামে ভবনটির ১৪ তলায় ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দলিল মূল্যের একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে জব্দের আদেশের তালিকায়।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজের আদেশ দেন আদালত।
অন্যদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আশ-শামস জগলুল হোসেন বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন।
আদেশ অনুযায়ী, বেনজীরের সাভারের সম্পত্তি দেখবেন সেখানকার ইউএনও এবং গোপালগঞ্জের মাছের খামার দেখবেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। এ ছাড়া মাদারীপুর ও কক্সবাজারের সম্পত্তি দেখাশোনা করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক।