ক্রীড়া প্রতিবেদক : বিদায়ের বেহাগ বাজবে। আবেগপ্লুত থাকবেন অবসর নিতে যাওয়া ক্রিকেটার। দর্শকরা অভিনন্দন জানাবেন মাঠের বাইরে সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটে এটাই রীতি। তবে বাংলাদেশে ক্রিকেটে এটার যেনো রীতিই দেখা যায় না। গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
তবে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের অপূর্ণতা কিছুটা হলেও ঘুচেছে আজ (বৃহস্পতিবার) মিরপুরে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে খেলছেন মুশফিক। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মোহামেডান। প্যাড-গ্লাভস পরে মাঠে নামার সময় মুশফিককে গার্ড অব অনার দিয়েছেন সতীর্থরা।
সামাজিক মাধ্যমে বুধবার রাতে হঠাৎ করেই ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ফেইসবুকে তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্তরা আবেগী বার্তা দিয়েছেন।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে পাঁচওয়ানডে খেলার জন্য বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্ত হন রহিম। অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা এবং সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি স্কোয়াডের তিন অনক্যাপড ওয়ানডে খেলোয়াড়ের একজন ছিলেন তিনি। ১৯ বছরের সে যাত্রাটা থেমে গেল বুধবার রাতে। বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেটে মুশফিকের অধ্যায়টা এখন স্রেফ অতীত।
তবে টাইগার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটের ক্যারিয়ারটা বেশ রাঙানো লাল সবুজ জার্সিতে। ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে মুশফিক খেলেছেন ২৭৪টি ওয়ানডে। ২৫৬ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন মুশফিক। ৭৯.৭০ স্ট্রাইকরেটে ৩৬.৪২ গড়ে ৭,৭৯৫ রান করেছেন। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। শীর্ষে তামিম ইকবাল, ২৪৩ ম্যাচে ২৪০ ইনিংসে ৮,৩৫৭ রান করেছেন সাবেক টাইগার ওপেনার।
মুশফিক ওয়ানডেতে ২৭৪ ম্যাচের মধ্যে ২৭২টিতে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন। সবমিলিয়ে ২৯৭টি আউটে (রান আউট ছাড়া) অবদান রেখেছেন। ২৪১টি ক্যাচ এবং ৫৬টি স্টাম্পিং করেন টাইগার তারকা। ওয়ানডের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি স্টাম্পিং করেছেন আর চার জন। মহেন্দ্র সিং ধোনি, মার্ক বাউচার, কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যাডাম গিলক্রিস্টের। পঞ্চম নামটা মুশফিকের।
বাংলাদেশের জার্সিতে মুশফিকের শেষ শতক ছিলো ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে। যা এসেছিলো তার ৩৫ বছর বয়সে। যা টাইগারদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে শতকের রেকর্ড ছিল। তবে সেই বছর ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে শতক হাকিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার নামের পাশে নিয়ে নেন। কিন্তু বাংলাদেশের হয়ে দ্রুত শতকের রেকর্ডটা তার নামের পাশেই রয়েছে এখনও।
এতো এতো রেকর্ডে এই ফরম্যাটে তার পথচলা দারুণ ছিল, অনেক সাফল্যই যোগ হয়েছে তার ১৯ বছরের দীর্ঘ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দিয়েছেন বহু স্মরণীয় মুহূর্ত। রেকর্ড ভাঙা গড়ার, এসব তার নামের পাশ দিয়ে মুছে গেলেও লাল সবুজ জার্সিতে তার মুহূর্ত গুলো অমলিন হয়ে থাকবে।
অবসর ঘোষণার পরদিন মিরপুরে গার্ড অব অনার পেলেন মুশফিক

Leave a comment