
শারীরিক নির্যাতনের শিকার অভিযোগকারী
নওয়াপাড়া অফিস : যশোরের অভয়নগরে ভিজিডি কার্ডে অনিয়ম করার অভিযোগ করায় ইউপি সদস্যের হাতে মারপিটের শিকার হয়ে বিচারের আশায় দ্বারে-দ্বারে ঘুরছে এক নারী। উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে গত ৮ মার্চ ওই নারী সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য রাজু সরদারের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ভূক্তভোগী ওই নারীর নাম সালমা বেগম (৩৮) তিনি ওই ইউনিয়নের অভয়নগর গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, সালমা বেগমের নামে একটি ভিজিডি করেন ওই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য কওছার আলী। তিনি ওই নারীকে কার্ডের কথা গোপন করে নিজে মাসে মাসে ৩০ কেজি চাল তুলে তা আত্মসাৎ করে আসছিলেন। বিষয়টি পরের মেয়াদের নির্বাচিত ইউপি সদস্য রাজু সরদারের কাছে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় সাবকে ইউপি সদস্য কাওছার আলীকে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালমা বেগমের অভিযোগ বর্তমান ইউপি সদস্য রাজু সরদার তার কার্ডটি আটকে রেখেছেন। ওই কার্ড ফেরৎ চেয়ে তিনি ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য রাজু সরদার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে যেয়ে পরিবারের চার জনকে মারধর করে আহত করে। আহতরা হলেন বিচার প্রার্থী সালমা বেগম (৩৪) তার ছেলে ওমর ফারুক (১৬), মাহমুদ শেখ (২২) ও শাশুড়ি হাসিনা বেগম (৭০)। আহতরা সকলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এঘটনায় সালমা বেগম বাদী হয়ে ঘটনার একদিন পর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ওই নারী বলেন, আমি একজন অসহায় দিন মজুর। আমার নামে কার্ড করে মেম্বার চাল তুলে নিচ্ছে। আমি কার্ড ফেরৎ চাইলে রাজু মেম্বার ও তার লোকজন আমাকে ও আমার দুই ছেলে ও শাশুড়িকে মারধর করে। আমি বিচারে আশায় থানায় লিখিত আবেদন করেছি। আমি থানা ও স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশের কাছে বার বার গিয়েছি কিন্তু পুলিশ বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রাজু সরদার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ওই মহিলা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মোকলেছুর রহমান আমাকে ও ওই মহিলাকে তার দপ্তরে ডেকেছিলেন। সেখানে ওই মহিলার কথায় পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়। পরে পুলিশ আমাকে জানায় এ বিষয়ে আপনি চিন্তা করেন না আমি ঠিক করে দেবো।
অভয়নগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক মো: মোকলেছুর রহমান বলেন, থানা থেকে অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছে। আমি ওই নারীর বাড়িতে গিয়েছি। তদন্ত করে জানা গেছে ইউপি সদস্য রাজু সরদার ও তার লোকজন ওই নারীকে ধাক্কা-ধাক্কি করেছে। আমি ওই নারীকে তদন্ত কেন্দ্রে আসতে বলেছিলাম কিন্তু সে আসেনি।
থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মিলন কুমার মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।