
জন্মভূমি ডেস্ক : জমজমাট আয়োজনে শুরু হওয়া মেয়েদের ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল আজ (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়েছে। সেমিফাইনালে দুই দল জায়গা করে নেওয়ার পাশাপাশি শিরোপা স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জাপান ও নেদারল্যান্ডসের। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারে উঠে গেছে স্পেন, ডাচ মেয়েদের তারা ২-১ গোলে হারিয়েছে। অন্যদিকে ২০১১ আসরের চ্যাম্পিয়ন জাপানের সঙ্গে সুইডেনের ম্যাচটি হয়েছে বেশ হাড্ডাহাড্ডি। তবে পেনাল্টিতে সুযোগ হাতছাড়া করা জাপানের মেয়েরা হেরেছে ২-১ গোলে।
নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনে স্পেন-নেদারল্যান্ডসের প্রথম ম্যাচটি নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ সমতায় ছিল। এরপর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে জয়নির্ধারণী গোল করেন স্পেনের সবচেয়ে কম বয়সী (১৯ বছর) ফুটবলার সালমা পারালুয়েলো। তবে নির্ধারিত সময়ের খেলায় ঠিকই স্প্যানিশরাই এগিয়ে ছিল।
ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধও সে পথেই আগাচ্ছিল। তবে ৮১তম মিনিটে স্পেনের ভাগ্যে আসে পেনাল্টি। সেখান থেকে মারিওনা কালদেন্তে সফল স্পট কিকে দলকে লিড এনে দেন। এরপর গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে ডাচ মেয়েরাও। যোগ করা সময়েই তাদের হয়ে গোল করে সমতায় আনেন ফন ডার গ্রাট।
১-১ সমতায় নিয়ে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও প্রথম ২০ মিনিট তাল মিলিয়েই লড়ে দুদল। ১০৪ মিনিটে স্পেনের হারমোসোর হেড শেষ মুহূর্তে লাইনের কাছ থেকে রুখে দেন ডাচ গোলরক্ষক ফন ডমসেলার। ১০৭ মিনিটে নেদারল্যান্ডসের বিরেনস্টেইনের শট অল্পের জন্য দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। তবে এর চার মিনিট পরই ম্যাচে স্পেনের আধিপত্য নিশ্চিত করেন পারালুয়েলা। প্রায় মাঝমাঠে হারমোসোর কাছ থেকে বল পেয়ে দ্রুত দুই ডাচ ডিফেন্ডারকে টপকে বক্সের কাছে পৌঁছে যান ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। এরপর জোরালো শটে বল পাঠান জালে। যা তাদেরকে প্রথমবারের মতো শিরোপার আরও কাছে নিয়ে যায়।
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে দিনের অপর ম্যাচে মুখোমুখি হয় সুইডেন ও জাপানের মেয়েরা। জাপান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আসরেও সেমিফাইনালে সুইডেনের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার তারা সুইডিশদের ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায়। এবার আর এশিয়ান মেয়েদের সেই সুযোগ দেয়নি সুইডিশরা। ম্যাচের ৩২তম মিনিটে গোল করে সুইডেনকে এগিয়ে দেন অ্যামান্ডা ইলেস্টেড। ডিফেন্ডার হয়েও চলতি বিশ্বকাপে এটি তার চতুর্থ গোল।
প্রথমার্ধে লড়াই জমাতে ব্যর্থ জাপানিজরা মূল লক্ষ্য ছিল পরের অর্ধে খেলায় ফেরা। কিন্তু উল্টো ৫১ মিনিটেই তারা দ্বিতীয় বারের মতো পিছিয়ে পড়ে। ভিএআরের মাধ্যমে পেনাল্টি পাওয়ার পর সুইডেনের লিড দ্বিগুণ করা স্পট কিকটি নেন ফিলিপা অ্যাঞ্জেলডাল। তবে একইভাবে ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ পায় জাপানও। তবে দুর্ভাগ্যবশত সেটি গোল হয়নি। রিকো উয়েকির নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারের নিচের অংশে লেগে গোল লাইনের বাইরে গিয়ে পড়ে।
এরপর ৮৬ মিনিটে জাপান আরও একবার গোলবঞ্চিত হয়। এবার অবা ফুজিনোর শট ক্রসবারে লেগে ফিরলে সুইডেনের খেলোয়াড়রা নিজেদের ডি বক্স বিপদমুক্ত করেন। তবে ফিরতি বল আর ঠেকাতে পারেননি কেউ। দশ গজ দূর থেকে নেওয়া হানোকা হায়াশির নিচু শট জায়গা করে নেয় জালে। এরপর ১০ মিনিটের যোগ করা সময়ে মরিয়া ছিল জাপান। একের পর এক আক্রমণেও অবশ্য তারা আর গোলের দেখা পায়নি। ফলে আগের আসরে শেষ ষোলোতে বিদায়ের পর তাদের এবারের দৌড় কোয়ার্টার পর্যন্ত।
অন্যদিকে, আসরের শুরু থেকেই শিরোপা অর্জনে অন্যতম ফেভারিট সুইডিশ মেয়েরা দুর্দান্ত পারফর্ম করে আসছিল। এখন পর্যন্ত আসরে টিকে থাকা দলগুলোর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়েও সবচেয়ে এগিয়ে সুইডেন (৩)। আজকের জয়ে নয়বার বিশ্বকাপ খেলে এ নিয়ে পঞ্চমবার শেষ চারে উঠেছে ইউরোপের দেশটি।