আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার এই ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে জমা হয়েছে। বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম সামনে রেখে আইএমএফ এই ঋণ সহায়তা করেছে। এরই মধ্যে জ¦ালানি তেল, গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয়েছে সরকারকে। বৈশ্বিক এ সংকটে বাংলাদেশ ঋণ পেয়েছে এটাই ইতিবাচক।
মোট সাত কিস্তিতে তারা বাংলাদেশকে এই ঋণ দেবে। এ ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদহার নির্ধারিত হবে বাজারদর অনুযায়ী, যা গড়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ হবে। ঋণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ঋণের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারব- এটাই আমাদের আকাঙ্খা।
আইএমএফের এ সিদ্ধান্তের ফলে ‘প্যানিক সিচুয়েশন’ যেটা তৈরি হয়েছিল, সেটা কেটে যাবে। আইএমএফ তিনটি উইন্ডোতে ঋণ দিচ্ছে। এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ), এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইইএফ) এবং রেজিলিয়েন্স এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)। আরএসএফ নতুন একটা উইনডো, যা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত। এতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং এর সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ব্যবস্থা শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে এমন একটা অবস্থা থাকতে হবে, যাতে জলবায়ু সম্পর্কিত অনেক বিনিয়োগ হয়। জলবায়ু বা পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানা করতে হবে। জীবাশ্ম জ¦ালানি কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি বাড়াতে হবে। শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ বন্ধ করতে হবে। এছাড়া রাজস্ব বাড়াতে আইএমএফ ভ্যাট অবকাঠামোর সরলীকরণ, রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন ও বড় করদাতাদের কাছ থেকে ঠিকমতো কর আদায় করতে না পারার ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাপনার মতো লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশও করেছে। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু সুপারিশ করে আইএমএফ বলেছে, ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এ সমস্যা অনেকটাই প্রকট। শর্তগুলো মানা দেশের জন্যও কল্যাণকর। দেশের অর্থনীতিতে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটি কাটাতে আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। আইএমএফের ঋণ নিশ্চিত হওয়াতে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা যাবে।