
৮ দিন ধরে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিশিংবোট বহর
শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা : আইনী বেড়াজাল ও বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে পিষ্ঠ উপকূলের জেলে মৎস্যজীবীরা। দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে সাগরে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছেন জেলেরা। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে মাছধরা বন্ধ রেখে ফিশিংবোটবহর ৮ দিন ধরে সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ে রয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার ভেদাখালী খাল থেকে বাগেরহাটের বগা এলাকার ফিশিংবোট মাঝি ইলিয়াস সোমবার দুপুরে মোবাইাল ফোনে বলেন, সাগর উত্তাল হওয়ায় মাছধরা বন্ধ রেখে গত ৮ দিন যাবৎ তারা দুবলার ভেদাখালী খালে আশ্রয় নিয়ে আছেন। প্রচন্ড ঝড়োবাতাস ও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর বিক্ষুব্ধ ও উত্তাল বড় বড় ঢেউয়ে সাগরে টিকতে না পেরে বর্তমানে দুবলার ভেদাখালী খালে ২০/২৫টি ফিশিংবোট নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে বলে তিনি জানান। অপরদিকে, বাগেরহাটের কচুয়া এলাকার ফিশিংবোট মাঝি মিজানুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের তুষখালী এলাকার লিটন মিয়ার একটি ফিশিংবোট মহিপুর অদুরে সাগরে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া বোটের ১১ জেলেকে অন্য বোটের জেলেরা উদ্ধার করেছে বলে মাঝি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
শরণখোলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন বলেন, আইনী বেড়াজাল ৬৫ দিনের অবরোধে সাগরে মাছ ধরা যায়নি। অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়ে প্রাকৃতিক দূর্যোগেপড়ে মাছধরা বন্ধ রেখে ফিশিংবোটগুলো সুন্দরবনের আলোরকোল, মেহেরআলী, ভেদাখালী, উপকূলের মহিপুর, নিদ্রাসখিনা, পাথরঘাটা, শরণখোলাসহ বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আছে। একারণে জেলে মৎস্যজীবিরা ক্রমাগতভাবে লাখ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে।
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে সমুদ্রে গিয়েই জেলেরা ঝড়ের কবলে পড়েন। জেলে মৎস্যজীবীদের রক্ষায় সাগরে ৬৫ দিনের অবরোধের সময় সীমা এগিয়ে এনে ভারতের সাথে একই সময়ে অবরোধ দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি দাবী জানান।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, বর্তমানে সাগরে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে বৈধ ফিশিংবোট সুন্দরবনের খালে নিরাপদ আশ্রয় নিলে তাদেরকে হয়রানী না করার জন্য বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।