দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। সমাজের কিছু মানুষ যেন দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে। হত্যাকাণ্ড ঘটছে। অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাড়ছে সহিংসতার ঘটনা। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ও চরমে পৌঁছেছে। নৃশংস খুনের ঘটনা বাড়ছে। কিছু মানুষের মধ্যে নৈতিকতা বলতে কিছু নেই।
সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনার দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মা ও দুই ছেলেকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে মুরগি ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ কর্মী আরিফ জমোদ্দারকে নিজ দলের লোকেরা কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ফরিদপুরে স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিতে গিয়ে গনপিটুনির শিকার হয়েছে তিন জন। একই সাথে তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি পুড়িয়ে দিয়েছে জনতা। প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় বগুড়া থেকে ঢাকায় যওয়ার পথে সিরাজগঞ্জে বাসে মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ে। যশোরের মণিরামপুরে নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রভাষক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি উদয় শংকর দুবৃত্তবেদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা ও কোপানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে আরেক কলেজের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। পাবনার ঈশ্বরদীতে মেয়ের কাছে পাওনা টাকা না পেয়ে মাকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। টাকা চেয়ে না পেয়ে রাজধানীর মুগদায় এক নারীকে হত্যা করেছে তাঁর ছেলে। রাজশাহীর বাগমারায় বিয়ের চার দিন পর স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারের টেকনাফে ছেলের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন বাবা। নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক দলিল লেখক নিহত হয়েছেন। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে এক ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ঘটনা ঘটছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে শুরু করেছে। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আগামী দিনে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যাবে।
খুনের ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধপ্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুনখারাবির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন যেসব ঘটনা ঘটছে, তা অশুভ ইঙ্গিতই বহন করছে। এ কথা ঠিক যে আমাদের সামাজিক অবক্ষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেখা দিয়েছে আচরণগত সমস্যা। কিন্তু প্রতিদিনের খুনের ঘটনাগুলো কি মেনে নেওয়া যায়?
প্রশ্ন হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতি ঘটল কেন? সামাজিক অসহিষ্ণুতাই কি অপরাধপ্রবণতার জন্য দায়ী? অপরাধ যেই করুক, তার কঠোর শাস্তিই কাম্য।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত