জন্মভূমি রিপোর্ট : মৃনাল বাহিনীর অন্যতম সদস্য ছিলেন তুলসি দেব নাথ। বাহিনীর ছত্রছায়ায় নিজেকে জড়ান নানা অপকর্মে। পান থেকে চুন খসলেই রাতের আঁধারে কচা বাহিনীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর চালাতেন জুলুম-নির্যাতন। মৃনাল বাহিনী পতনের পর তিনি খোলস পাল্টিয়ে নাম লেখান আওয়ামী লীগে। তবে কার্যকালাপ থাকে আগের মতই। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজী ও অত্যাচার চালান এলাকায়। গত বছরও চাঁদার দাবিতে খর্ণিয়া ইউনিয়নের বামুন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় দালালের উপর তার নির্দেশে নির্যাতন করা হয়। এব্যাপারে ভ’ক্তভোগী সঞ্জয় দালাল তুলসি দেবনাথসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৭ থেকে ৮ জনকে আসামী করে ডুমুরিয়া অতিরিক্ত চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেছেন। মামলার অন্য আসামীরা হলেন, জয়দেব রাহা, নয়ন দেবনাথ, আবুল হোসেন, গৌরঙ্গ মন্ডল, ইবাদুল বিশ্বাস, কৃঞ্চ রাহা, সবুজ শেখ, অনিমেষ দেবনাথ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর রাতে ডুমুরিয়া খর্নিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুলসি দেবনাথ ও অনিমেষ দেবনাথের হুকুকে আসামিরা বামুন্দিয়া তালতলা মোড়ের চায়ের দোকান থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সঞ্জয় দালালকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর আসামী জয়দেব রাহা বাদীর নিকট দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা তাদের হাতে থাকা কঁচা ও লোহার রড দিয়া এলোপাতাড়ী মারপিট করে। এসময় জয়দেব ও নয়ন বাদীকে মাটিতে ফেলে বুকের উপর চেপে বসে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকী দিয়া চাঁদা দাবী করে। তখন জীবন বাঁচাতে পরিবারের সাথে কথা বলে পঞ্চাশ হাজার টাকা জয়দেবের হাতে তুলে হয় বাদী। তবে বাকী চাঁদার টাকা পরিশোধের জন্য পনের দিন সময় বেধে দেয় আসামীরা। পরে বাদী চাঁদার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। এছাড়া চাঁদার বাকী টাকা আদায়ের জন্য আসামীরা কয়েকদফা বাদীর বাড়ীতে হানা দেয়। অস্ত্র দিয়ে প্রাণনাশের ভয় ও নাশকতা মামলার ভয় দেখিয়ে বাদীর কাছ থেকে বিভিন্ন তারিখে আরো ৬২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে।
এ ব্যাপারে খর্নিয়া ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদ ও ইউনিয়ন বোর্ড কমিটির সহ-সভাপতি অমল কৃষ্ণ বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল ও নিজের ও প্রভাব ধরে রাখতে গত নয় বছর আমাকে ও আমার পরিবারসহ বেশ কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের মন্দিরে যেতে দেয়নি তুলসি দেব নাথ। ধর্মীয় উৎসব উদযাপন থেকেও বঞ্চিত করেছে। অমল কৃঞ্চ আরো বলেন, খুলনার ডুমুরিয়ায় আশির দশক থেকে খুন-খারাবি শুরু হয়। ২০০০ সালের প্রথমদিকে 'মৃত্যুপুরী ডুমুরিয়া' খ্যাত হয়ে ওঠে। নিউবিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির মৃণালের কচা বাহিনী পুরো ডুমুরিয়া নিয়ন্ত্রণ করত। মৃনাল বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন তুলসি। ২০১৩ সালের নাসির খুন থেকে শুরু করে অনেক অপকর্মেরই মুল হোতা তুলসি দেব নাথ।
ভূক্তভোগি সঞ্জয় দালাল বলেন, আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক তুলসি দেবনাথ ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে নিজ সম্প্রদায়ের মানুষদেরও ঢুকতে দিতেন না মন্দিরে। ধর্মীয় উৎসব থেকে বঞ্চিত করত। তাছাড়া মন্দিরে বরাদ্দের টাকা আত্নসাতও করেছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত