এম সাইফুল ইসলাম
আঃ গনি শেখ। একাত্তর সালে রেলওয়েতে চাকুরি করতেন। যুদ্ধ শুরু হলে তিনি তার খুলনার রূপসাস্থ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধদের আশ্রয় ও খাবার সহায়তা দিতেন। এ অভিযোগে তিনিসহ আরও ১৯ জন মুক্তিকামী বাঙ্গালিকে দেশীয় দালাল রাজাকার ও আল বদরদের সহযোগিতায় রেলওয়ের লোকেশডে পুড়িয়ে মারা হয়। মুক্তিযুদ্ধে হাজারো ত্যাগ-তীতিক্ষা ও স্মৃতির সাথে জড়িয়ে আছে মহান মুক্তিযোদ্ধার নাম।
মুক্তিযোদ্ধা আঃ গনি শেখ শহীদ হওয়ার পূর্বে রেখে যান ৫ জন ছেনে ছেলে ও মেয়ে। যার মধ্যে ছোট মেয়ের সাহানা খাতুনের বয়স ছিল মাত্র ৬ মাস। বর্তমানে তিনি খুলনা সিটি গার্লস কলেজের প্রভাষক পদে চাকুরিরত রয়েছেন। এছাড়া তারই হাতে গড়া রূপসাস্থ বাড়ি যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেয়া হতো সেটা আজ জ¦লজ¦লে প্রমাণ বহন করছে।
সাহানা খাতুন বলেন, আমি আমার বাবাকে দেখি নাই। যদি তার লাশ পাওয়া যেত তাহলে ন্যূনতম কবর জিয়ারত করে মনে শান্তি পাইতাম, এখন সেটাও সম্ভব নয়।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাতনী এ্যাড করবী বর্তমানে যুব মহিলা লীগের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতির দায়িত্ব আব পালন করছেন। তিনি আক্ষেপের সাথে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে নানা আঃ গনি শেখ মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন। সহযোগিতা করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। তিনি আরও বলেন আমি বর্তমানে রূপসার যে বাসায় বসবাস করি। সেই বাসাটি আমার নানান তৈরি। যে দিন আগুনে পুড়ে মারা হয়েছে সেদিন তিনি এই বাসা থেকে সকালের নাস্তা করে একটি সাইকেলে চড়ে কর্মস্থলে যান। ওই যাওয়াটইি তার শেষ যাওয়া ছিল।
স্বাধীনতা পরবর্তী অবস্থা বলতে গিয়ে তার বড় মেয়ে খাদিজাতুল কোবরা জানান, যুদ্ধের পরে আমার মায়ের কাছে বঙ্গবন্ধু নিজে সান্তনা চিঠি দিয়েছেন। একই সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ব পর্যন্ত আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পরে আর আর্থিক সহযোগিতা আসেনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভাল থাকায় আমরা চেষ্টা করি নাই। এছাড়া আমার মা আকলিমা খাতুন মনে করতেন তার স্বামী আর্থিক সাহায্য নয় দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই তিনি এটা নিয়ে কখনো চেষ্টা করেননি।
আগুনে পুড়ে নিজেকে উৎসর্গ করেন গনি শেখ
Leave a comment