জন্মভূমি ডেস্ক : বিশ্ব সিংহ দিবস আজ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট)। সিংহগুলোকে প্রায়শই সারা বিশ্বে ‘বনের রাজা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কমছে বনভূমি। একের পর এক জঙ্গল কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে। গড়ে উঠছে বসতি। যার কারণে আজ ‘বনের রাজা’ অস্তিত্ব সংকটে। তাই তাদের সংরক্ষণ ও সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর (১০ আগস্ট) বিশ্ব সিংহ দিবস পালন করা হয়।
এই দিনটির লক্ষ্য হচ্ছে সারা বিশ্বে মানুষের মধ্যে সিংহের ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের সংরক্ষণের ব্যাপারে মানুষকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা।
ইতিহাস
প্রতি বছর ১০ আগস্ট বিশ্ব সিংহ দিবস পালন করা হয়। ২০১৩ সাল থেকে এই দিনটির উদযাপন শুরু হয়। সিংহদের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম স্বীকৃত অভয়ারণ্য বিগ ক্যাট ইনিশিয়েটিভ-এর হাত ধরে। যার প্রতিষ্ঠাতা স্বামী-স্ত্রী ডেরেক ও বেভারলি জুবার্ট। যাঁরা সিংহের ক্রমহ্রাসমান সংখ্যা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন। জঙ্গলের রাজার প্রজাতি যে সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা মানুষকে জানানোর তাগিদ অনুভব করেন তাঁরা। সেই লক্ষ্যে ২০০৯ সালে তাঁরা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর দ্বারস্থ হন। তাদের সঙ্গে পার্টনারশিপে বিগ ক্যাট ইনিশিয়েটিভ শুরু করেন। পরে ২০১৩ সালে আর একধাপ এগিয়ে জুবার্ট দম্পতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এবং বিগ ক্যাট ইনিশিয়েটিভকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসেন। যাতে বিশ্বজুড়ে জঙ্গলে জঙ্গলে যতগুলো সিংহ অবশিষ্ট রয়েছে, তাদের রক্ষা করা যায়। আর এভাবেই শুরু হয়ে যায় বিশ্ব সিংহ দিবস।
তাৎপর্য
জঙ্গলের অন্যতম আকর্ষণ এই বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে দিনটির বিশেষত্ব। এই প্রাণিগুলোর সংরক্ষণের দ্রুত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই কারণেই, বিশেষ এই দিনটিতে বাস্তুতন্ত্রে সিংহের গুরুত্ব বুঝিয়ে মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করা হয়।
উদযাপন
বিশেষ এই দিনটি বিভিন্নভাবে উদযাপন করা হয়। যেমন- কোনও শিল্পকলা, ফটোগ্রাফি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিংহ ও তার গুণগুলো তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দল, চিড়িয়াখানা এবং ব্যক্তিবিশেষে বিভিন্ন কার্যকলাপ ও কর্মসূচিতে সামিল হন এই দিনটিতে। সিংহের সংরক্ষণ প্রকল্পের তহবিলে টাকা তোলার কাজে লাগায় দিনটিকে। ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ওয়েবিনার ও জনগণের সঙ্গে আলোচনারও ব্যবস্থা করা হয় বিশ্ব সিংহ দিবসে। এখন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মও এনিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। হ্যাশট্যাগ, পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার করা হয় মানুষকে সচেতন করতে। মানুষ ও এই বন্যপ্রাণির যাতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব হয়, সে বিষয়ে নাগাড়ে প্রচার চলে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো বিশ্ব সিংহ দিবসে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে; যেখানে হ্যাশট্যাগ, পোস্ট ও ভিডিওগুলো ব্যাপক শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভাগ করা হয়। যখন কিছু প্রচেষ্টা স্থানীয় সম্প্রদায়কে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সিংহ এবং তাদের আবাসস্থলগুলোকে সুরক্ষিত করার জন্য শক্তিশালী বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ও নীতিগুলোর পক্ষে জোর দেয়। সিংহ সংরক্ষণ এবং সিংহ ও মানুষের মধ্যে সহাবস্থানের প্রচারে অংশ নেওয়া, যা আজকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।