জন্মভূমি ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। কাজেই আন্দোলন সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না। দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা আস্থা রাখতে পারেন যে, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। কারণ আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই জনগণ যতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো’ এবং ‘পাতাল রেলে বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হলো’।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, দেশ আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ রুখতে পারবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জনগণকে দেওয়া ওয়াদা আমরা পূরণ করেছি। আওয়ামী লীগ জাতির সামনে যে ওয়াদা দেয় তা পালন করে। এটাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি, জনগণের সেবা করেছি। জনগণও আমাদের ভোট দিয়ে বারবার ক্ষমতায় আনছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে দিতে এসেছি। জনগণের কাছ থেকে কিছু নিতে আসিনি। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে আসিনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর যানজট নিরসনে আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। এগুলো শেষ হলে ঢাকায় কোনো যানজট থাকবে না। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করেছি। দেশকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গিয়েছি। মানুষের জীবনযাপনের মান উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে আমরা কাজ করছি।’
প্রসঙ্গত, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে থাকছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক কয়েকদিন আগে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাতাল রেল প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, ‘সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে এবং এলিভেটেড উভয় সুবিধা সম্বলিত এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করবে। ২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানী ঢাকায় মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধন করা হবে।’
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে একটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট)। এর দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুন বাজার থেকে প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে।
এ ছাড়া বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুন বাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ। বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জাইকা) এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণকাজের ব্যয় বহন করবে। জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসেবে দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জাপানি ফার্মের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিমানবন্দর-কমলাপুর-পূর্বাচল মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজ তদারকি করবে। এই রুটে স্টেশন হবে মোট ১২টি। এগুলো হলোÍবিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।
আর পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। এ রুটে আবার স্টেশন হবে নয়টি। এগুলো হলো নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।