সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। উৎপাদনে এসেছে আধুনিকতা। মাঠে উৎপাদন বেড়েছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে চাষাবাদ লাভজনক হয়ে উঠেছে। কৃষিবাজার ব্যবস্থাপনায়ও এসেছে নতুনত্ব। নতুন নতুন ফসলের প্রতি কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন নতুন ফসল বাজারে আসছে। একই মাঠে একাধিক ফসল উৎপাদনের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। নতুন নতুন গবেষণা থেকে দেশের কৃষি উৎপাদনে রীতিমতো বিপ্লব এসেছে বলা যেতে পারে। ভবিষ্যতে আরো উন্নতির আশা করছে বাংলাদেশ। শুধু ধান কিংবা গম নয়, বিভিন্ন জাতের মৌসুমি সবজি উৎপাদনেও এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজি চাষ করেও লাভবান হচ্ছে কৃষক। এর পাশাপাশি পশু পালনও এখন গ্রামাঞ্চলে পেশা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। পশু পালন আমাদের অর্থনীতিতে গতি এনেছে, পুষ্টি চাহিদাও পূরণ করছে।খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে কী খাচ্ছি আমরা? এ প্রশ্নটা এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। কীটনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষক মাত্রা না বুঝে মাঠে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক সবজিই খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়। কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে খাদ্যে ফরমালিনসহ রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ে হৈ চৈ হচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকেও এই মর্মে কিছু নির্দেশনা এসেছে । খাদ্যে ফরমালিন এখন এক ভয়াবহ আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে। মর্গে মানুষের লাশ ও গবেষণাগারে প্রাণীর মৃতদেহ সংরক্ষণে যে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়, সে ফরমালিন এখন ব্যবহার করা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যের পচন রোধ করার কাজে। মাছ বিক্রেতারা মাছের পচন রোধ করার জন্য ফরমালিন ব্যবহার করছে। একইভাবে দুধ যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্যও ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ইদানীং মাংসেও নাকি ফরমালিন ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই ফরমালিন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।ফরমালিন মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, কিডনি, লিভার ও শ্বাসতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বে শুধু খাদ্যে নয়, অন্যান্য সামগ্রীতেও এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কারণ নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি ফরমালিনযুক্ত দ্রব্যের সংস্পর্শে থাকলে এলার্জি, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এর আমদানি ও ব্যবহার চলছে অবাধে। তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপর। আদালতের নির্দেশনাগুলোর মধ্যে ছিল বন্দরগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো ফল আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা, বাজারের আড়তগুলোতে প্রতিদিন ফলের রাসায়নিক পরীক্ষা করা ও দোষীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা ইত্যাদি। কিন্তু এসব নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।ফরমালিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য জিম্মি হয়ে পড়েছে অসৎ ব্যবসায়ীদের কাছে। এ অবস্থার প্রতিকার ঘটাতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া দরকার। ফরমালিন ব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তিই তাদের অপরাধপ্রবণতায় বাদ সাধতে পারে।দেশের প্রতিটি হাট-বাজারে ফরমালিন ও ভেজাল শনাক্তকরণ যন্ত্র ভোক্তাদের হাতের নাগালে পর্যাপ্ত রাখা দরকার। যেমন পশুহাটগুলোতে রাখা হয়েছে জালটাকা শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন মাছে কতোটা ফরমালিন, কোন শাক সবজিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের উপস্থিতি, কোন খাদ্যদ্রব্য কতোটা ভেজাল তা সহজে শনাক্ত করতে না পারার কারণে অসাধু কারবারীদেরই যেন রাজত্ব। বাজারে এমন একজন ভোক্তাও পাওয়া যাবে না যে, তিনি জেনেশুনে ক্ষতিকর ভেজাল দ্রব্য কিনবেন। যে ব্যক্তি ভেজাল করেন, অসাধু, তিনিও নিজের বেলায় ভালোটাই খোঁজেন।বাজারে ফলফলারি নিশ্চিন্তে কেনার জো নেই, খেজুরের গুড়? তাতেও নেই আসল স্বাদ। মাছ? মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কিছুটা স্বস্তি মিললেও অভিযান ঝিমিয়ে গেলে পূর্বাবস্থায় ফেরে। গুড়ো মশলা? কোনটার সাথে কোন ধরনের অখাদ্য কু-খাদ্য যে মেশানো হয়, তা বোঝা ভার। গুড়ো ঝালের সাথে পোড়ামাটি মেশানোর উদাহরণ এই জনপদে রয়েছে। মজমা করে দাঁতের ভালো মাজন বলে ঘুটোর ছাই বিক্রিরও নজির রয়েছে এই সমাজে। সরষের তেল? ঝাঁঝটা বেশি হলেও আসলটা বাজারে নেই বললেই চলে। ভাবছেন, এক দু মুঠো মুড়ি খাবেন? গিন্নিরটা বাদে বাজার থেকে কিনলে তাতে ইউরিয়ার উপস্থিতি স্পষ্ট। এই যখন পরিস্থিতি, তখন প্রতিকারের উপায়? ভেজালমুক্ত গুড় কিংবা সারছাড়া মুড়ি পেতে অবশ্যই দরকার, ভেজাল ও রাসায়নিক অবাঞ্ছিত পদার্থ শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন শাকে বিষ, কোন মাছে পচনরোধক রাসায়নিক পদার্থ তা শনাক্ত করতে পারলে ভোক্তারাই শুধু উপকৃত হবেন না, উৎপাদক ও বিক্রেতাদেরও বাড়বে কদর। যেহেতু সকলেই সুস্থ থাকার স্বপ্ন দেখে, সেহেতু সেই সৃষ্টি করতে পারলে আসবে সফলতা। আমরা খাবার যাই খাই না কেন, মনে হয় বিষ খাচ্ছি না তো? মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফরমালিনের দৌরাত্ম আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি। রাজধানীর বাজারগুলোতে তো বটেই দেশের বাইরে সর্বত্রই ফরমালিনযুক্ত খাবার। কিছুতেই ফরমালিন নামক এই বিষের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। ফলমূল, মাছ, মাংস ও খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন ব্যবহারের বিরুেিদ্ধ একের পর এক অভিযান চালানো হলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের নিবৃত্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে না নকল-ভেজালের দুষ্কর্ম থেকে। আতঙ্কগ্রস্থ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে রাজধানীতে গড়ে উঠছে একের পর এক ফরমালিনমুক্ত বাজার। বলা হচ্ছে প্রতিটি পণ্য পরীক্ষা করে এসব বাজারে ঢোকানো হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে তথাকথিত ফরমালিনমুক্ত বাজারেও রাসায়নিক মিশ্রিত পণ্যের বেচাকেনা চলছে। ফরমালিনমুক্ত পণ্য এই অজুহাতে অতিরিক্ত দাম রাখা হলেও ক্রেতারা টাকা দিয়ে কার্যত কিনছেন মৃত্যুপরোয়ানা।দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। উৎপাদনে এসেছে আধুনিকতা। মাঠে উৎপাদন বেড়েছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে চাষাবাদ লাভজনক হয়ে উঠেছে। কৃষিবাজার ব্যবস্থাপনায়ও এসেছে নতুনত্ব। নতুন নতুন ফসলের প্রতি কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন নতুন ফসল বাজারে আসছে। একই মাঠে একাধিক ফসল উৎপাদনের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। নতুন নতুন গবেষণা থেকে দেশের কৃষি উৎপাদনে রীতিমতো বিপ্লব এসেছে বলা যেতে পারে। ভবিষ্যতে আরো উন্নতির আশা করছে বাংলাদেশ। শুধু ধান কিংবা গম নয়, বিভিন্ন জাতের মৌসুমি সবজি উৎপাদনেও এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজি চাষ করেও লাভবান হচ্ছে কৃষক। এর পাশাপাশি পশু পালনও এখন গ্রামাঞ্চলে পেশা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। পশু পালন আমাদের অর্থনীতিতে গতি এনেছে, পুষ্টি চাহিদাও পূরণ করছে।খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে কী খাচ্ছি আমরা? এ প্রশ্নটা এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। কীটনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষক মাত্রা না বুঝে মাঠে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক সবজিই খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়। কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে খাদ্যে ফরমালিনসহ রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ে হৈ চৈ হচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকেও এই মর্মে কিছু নির্দেশনা এসেছে । খাদ্যে ফরমালিন এখন এক ভয়াবহ আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে। মর্গে মানুষের লাশ ও গবেষণাগারে প্রাণীর মৃতদেহ সংরক্ষণে যে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়, সে ফরমালিন এখন ব্যবহার করা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যের পচন রোধ করার কাজে। মাছ বিক্রেতারা মাছের পচন রোধ করার জন্য ফরমালিন ব্যবহার করছে। একইভাবে দুধ যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্যও ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ইদানীং মাংসেও নাকি ফরমালিন ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই ফরমালিন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।ফরমালিন মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, কিডনি, লিভার ও শ্বাসতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বে শুধু খাদ্যে নয়, অন্যান্য সামগ্রীতেও এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কারণ নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি ফরমালিনযুক্ত দ্রব্যের সংস্পর্শে থাকলে এলার্জি, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এর আমদানি ও ব্যবহার চলছে অবাধে। তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যের ওপর। আদালতের নির্দেশনাগুলোর মধ্যে ছিল বন্দরগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো ফল আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা, বাজারের আড়তগুলোতে প্রতিদিন ফলের রাসায়নিক পরীক্ষা করা ও দোষীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা ইত্যাদি। কিন্তু এসব নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।ফরমালিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য জিম্মি হয়ে পড়েছে অসৎ ব্যবসায়ীদের কাছে। এ অবস্থার প্রতিকার ঘটাতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া দরকার। ফরমালিন ব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তিই তাদের অপরাধপ্রবণতায় বাদ সাধতে পারে।দেশের প্রতিটি হাট-বাজারে ফরমালিন ও ভেজাল শনাক্তকরণ যন্ত্র ভোক্তাদের হাতের নাগালে পর্যাপ্ত রাখা দরকার। যেমন পশুহাটগুলোতে রাখা হয়েছে জালটাকা শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন মাছে কতোটা ফরমালিন, কোন শাক সবজিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের উপস্থিতি, কোন খাদ্যদ্রব্য কতোটা ভেজাল তা সহজে শনাক্ত করতে না পারার কারণে অসাধু কারবারীদেরই যেন রাজত্ব। বাজারে এমন একজন ভোক্তাও পাওয়া যাবে না যে, তিনি জেনেশুনে ক্ষতিকর ভেজাল দ্রব্য কিনবেন। যে ব্যক্তি ভেজাল করেন, অসাধু, তিনিও নিজের বেলায় ভালোটাই খোঁজেন।বাজারে ফলফলারি নিশ্চিন্তে কেনার জো নেই, খেজুরের গুড়? তাতেও নেই আসল স্বাদ। মাছ? মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কিছুটা স্বস্তি মিললেও অভিযান ঝিমিয়ে গেলে পূর্বাবস্থায় ফেরে। গুড়ো মশলা? কোনটার সাথে কোন ধরনের অখাদ্য কু-খাদ্য যে মেশানো হয়, তা বোঝা ভার। গুড়ো ঝালের সাথে পোড়ামাটি মেশানোর উদাহরণ এই জনপদে রয়েছে। মজমা করে দাঁতের ভালো মাজন বলে ঘুটোর ছাই বিক্রিরও নজির রয়েছে এই সমাজে। সরষের তেল? ঝাঁঝটা বেশি হলেও আসলটা বাজারে নেই বললেই চলে। ভাবছেন, এক দু মুঠো মুড়ি খাবেন? গিন্নিরটা বাদে বাজার থেকে কিনলে তাতে ইউরিয়ার উপস্থিতি স্পষ্ট। এই যখন পরিস্থিতি, তখন প্রতিকারের উপায়? ভেজালমুক্ত গুড় কিংবা সারছাড়া মুড়ি পেতে অবশ্যই দরকার, ভেজাল ও রাসায়নিক অবাঞ্ছিত পদার্থ শনাক্তকরণ যন্ত্র। কোন শাকে বিষ, কোন মাছে পচনরোধক রাসায়নিক পদার্থ তা শনাক্ত করতে পারলে ভোক্তারাই শুধু উপকৃত হবেন না, উৎপাদক ও বিক্রেতাদেরও বাড়বে কদর। যেহেতু সকলেই সুস্থ থাকার স্বপ্ন দেখে, সেহেতু সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে আসবে সফলতা।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের ফুটপাত থেকে অভিজাত বিপণিবিতান প্রায় সবখানেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে তথাকথিত ফলের জুস। অথচ এগুলোর অধিকাংশতেই প্রকৃত ফলের ছিটেফোঁটাও নেই। কৃত্রিম রং, মিষ্টি সিরাপ, রাসায়নিক ফ্লেভার আর পানি মিশিয়ে বানানো এসব ‘জুস’ শুধু প্রতারণাই নয়, এটি ভয়ংকর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে আগামী প্রজন্মের জন্য। এই ভেজাল জুসে ব্যবহৃত ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান লিভার, কিডনি ও পরিপাকতন্ত্রের ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে। পাশাপাশি এই উপাদানগুলোর দীর্ঘমেয়াদে গ্রহণের ফলে ক্যানসার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ জটিল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ, এমনকি অসুস্থ রোগীরাও প্রতিদিন এসব ‘জুস’ পান করছে অজান্তেই, যা ধীরে ধীরে বিষের মতো ক্ষতি করছে তাদের শরীর। নকল জুসের এই সর্বগ্রাসী বিস্তার রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পুরো একটা প্রজন্ম স্বাস্থ্যঝুঁকির গহ্বরে তলিয়ে যাবে। তাই অবিলম্বে বাজার নজরদারি বাড়িয়ে জালিয়াত ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বিএসটিআই এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অস্বীকার করার উপায় নেই যে আম সুস্বাদু, মিষ্টি এবং লোভনীয় একটি ফল। তবে আপনি কি জানেন যে আপনার প্রিয় ফলের কিছু নীরব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে! আম খেতে ভালোবাসেন এমন বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটি উদ্ভট এবং হতাশাজনক শোনাতে পারে, তবে মিষ্টি ও পুষ্টিকর এই ফল সঠিকভাবে খাওয়া না হলে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
আম কি স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ?
পুষ্টিকর ফলটি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। অন্যান্য ফলের তুলনায়আমে উদ্ভিদ যৌগ এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এই ফল সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে এবং উচ্চ রক্তচাপকে দূরে রাখে, কমায় কার্ডিয়াকের ঝুঁকি। কিন্তু এটি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নিয়ে আসে। জেনে নিন আমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে-
অ্যালার্জি বাড়াতে পারে
আম খেলে বাড়তে পারে অ্যালার্জি। কারণ আম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি কেউ সিন্থেটিক উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হয়। কারণ আমে প্রোটিন ল্যাটেক্সের মতো উপাদান রয়েছে যা অ্যালার্জি আছে এমন কারও জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
রক্তে শর্করার বৃদ্ধি
মিষ্টি এবং সুস্বাদু এই ফলে উচ্চ প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে এটি দ্রুত চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাকৃতিক চিনিও ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য জীবনযাত্রার ব্যাধির ক্ষেত্রে সাধারণ চিনির মতোই কাজ করতে পারে। সুতরাং, আম খাওয়ার সময় এর পরিমাণের দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।
লো-ফাইবার
বিভিন্ন জাতের আমে ফাইবার কম থাকে কারণ বীজ এবং খোসায় সর্বাধিক পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা সাধারণত খাওয়া হয় না। যে কারণে আম হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য নাও করতে পারে। তাই হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে আমের সাথে ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান যুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ওজন বৃদ্ধি
একসঙ্গে অনেকগুলো আম খেলে ওজন বাড়তে পারে। এর কারণ হলো অন্যান্য খাবারের তুলনায় আমে ফাইবার কম, প্রাকৃতিক শর্করার পরিমাণ বেশি এবং ক্যালোরি বেশি, যা ওজন বাড়াতে পারে। তাই আপনি যদি ওজন কমানোর প্রচেষ্টা করে থাকেন তবে আম খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হোন।
পেটের সমস্যা হতে পারে
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত আম খেলে তা পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ এতে গাঁজনযোগ্য কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) বাড়াতে পারে এবং পাচনতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল ইসলাম বলেছেন সয়াবিন তেলের নামে আমরা কি খাচ্ছি। এগুলো আসলে আসল সয়াবিন তেল না। সবচেয়ে পুষ্টিকর ও নিরাপদ তেল হল নিজেরা তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন করতে পারলে। সুতরাং পুষ্টি চাহিদা পূরণে তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে আমাদের সকলকে আরো আগ্রহী হতে হবে। গতকাল বুধবার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্ল্যাপুর ইউনিয়নে সুফি দরবারে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টি চাহিদা অনেক ঘাটতি আছে। আমাদের দেশের কৃষক ভাইরা বেশিরভাগই লাভজনক ফসল উৎপাদন করার আগ্রহ থাকে। কিন্তু আমাদের সকলকে বুজতে হবে খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি পুষ্টি ও তেলজাতীয় খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা না হলে আমরা দিন দিন অপুষ্টিতে ভুগতে থাকবো।আমরা মাঝে মাঝে লক্ষ্য করি কৃষক ভাইদের কৃষক বলে কটাক্ষ করা হয়। কিন্তু আমাদের কৃষকরাই দেশের প্রধান উৎপাদন শক্তি। কৃষকরা যদি উৎপাদন না করতো তাহলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারতাম না। যেমন করোনাকালীন সময়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষই কর্ম থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু কৃষকরা কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। তারপরও করোনাকালীন ৪০% উৎপাদন কমে গিয়েছিল। তবে কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গত দুই বছরে ২০% বেড়েছে। তাই কৃষক ভাইদেরকে ছোট করে দেখার কোনও সুযোগ নেই।কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আমজাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডা. সাফাতেত আহম্মেদ সিদ্দিকী, সিকোট্যাক্স এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক ও কৃষি উদ্যেগক্তা এবিএম নাছির উদ্দীন সরকার, চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আবু তাহের।এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালা উদ্দিন, আলআমিন, কামরুল হাসান, মিজানুর রহমান, ফরহাদ হোসেন, বিল্লাল, শেখ ফরিদ শাকিল, মতিউর রহমান, সাহাদাত হোসেন, আতিকুর রহমান, সালাহ্উদ্দিন মিয়াজি, নুর মোহাম্মদ, উপ সহকারী কৃষি অফিসার, নাছির উদ্দিনসহ স্থানীয় কৃষক-কৃষাণী, গণমাধ্যমকর্মী, কৃষি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
আমরা খাচ্ছি কি?

Leave a comment