আমার সহপাঠী আমার বন্ধু সমবয়সী পান্না আর নাই এ কথা ভাবতে অন্তরে কষ্ট রাখার জায়গা আর নাই! প্রায় বছর হয়ে এলো ওর সাথে দেখা নাই নিজের অবস্হার কারণেই হয়তো ফোনও করা হয় নাই। হঠাৎ ফেসবুকে জানতে পেওে না ফেরার দেশে চলতে যাবার কথা অস্থির হয়ে গেলাম বুকে অনুভব করলাম ব্যথা! মনে হোল এখনই মাথা ঘুরে পড়ে যাব বিভিন্নভাবে খোঁজ নিতে লাগলাম বিস্তারিত জানতে। জানা হোল বুঝা হোল কি আর করবো হায় কলেজ জীবনে আমাদের সম্পর্কের কথা একে একে মনে পড়তে লাগলো চোখের পানি বাঁধ মানতে চায়না বড় অসহায় মনে হয়।
ছাত্র জীবনে ভিন্ন দল করলেও বাঙ্গালি জাতীয়বাদে আমরা ছিলাম উভয় বিশ্বাসী। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকদিন। ঢাকা থেকে আবার খুলনায়। ওর সাথে আবার যোগাযোগ শুরু হোল। হুমায়ুন কবির বালু ভাই, শেখ শহীদুল হক, লজরুল ইসলাম তারা আমার এক বছরের জুনিয়র ছিলেন। শামছুল আরেফিন, ওয়াদুদর রহমান পান্না ও আমি তাদের এক বছরের সিনিয়র ছিলাম। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি করেছি একই চেতনায় একই সঙ্গে। ৭১’র পর ৭৩’র পর্যন্ত যোগাযোগ ছিলনা। কারন, আমি ৭২এ ঢাকায় পড়ার জন্য ও কর্ম সংস্থানের উদ্দেশ্যে ঢাকায় চলে যাই।
১৯৭৮ সনের শেষের দিক থেকে তাঁর সাথে নতুন কর্মক্ষেত্রে আবার বেশ ঘনিষ্ঠতা বেড়ে গেল। তিনি খুলনা বেতারে কল্লোল নামে ছোটদের জন্য অনুষ্ঠানে,‘ ধাঁধার অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা এবং পরিচালনা করতেন। এবং কয়েকমাস আগেও আমি শুনেছি। মাঝে ৭/৮ মাস আমার অনুষ্ঠান শোনা হয়না এবং ওর সাথে যোগাযোগও হয়না। আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু ও স্বজন এভাবে হঠাৎ চলে যাবে তা একেবারেই চিন্তায় আসেনি। ওর সাথে আমার ‘তুই’ সম্পর্ক ছিল। অন্য সহপাঠীদের সাথে যা ছিলনা। নিয়তিকে আমাদের মেনে নেওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নাই।
আমিও থাকবোনা। ইতোপূর্বে যাদের নাম উল্লেখ করেছি তারাও আজ আর নাই, নজরুলের অনেক খোঁজ করেছি সন্ধান পাইনি। তাঁর দেয়া একটি ডাইরি গত বছর বের করে সেপ্টেম্বর মাস থেকে তাতে লেখা লেখি শুরু করেছি
এবং তা অব্যাহত আছে। এটা আমার নিকট আন্তরিক স্মৃতি বহন করবে, বাকী যে ক’টা দিন আছি। হে প্রিয় বন্ধু যেখানে থাক শান্তিতে থাক এই কামনা করি।