By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: আল্লাহর ‌সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > আল্লাহর ‌সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ
তাজা খবরসাতক্ষীরা

আল্লাহর ‌সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ

Last updated: 2025/11/22 at 11:36 AM
জন্মভূমি ডেস্ক 13 hours ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পৃথিবীতে মানুষের বসবাস আসলে কতদিন তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে মানুষের বসবাসের জন্য। পৃথিবীর সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জন্য। মানুষ ছাড়া পৃথিবীর সৌন্দর্য কল্পনা করা যায় না। সৃষ্টির আদি কাল থেকেই মানুষ পৃথিবীকে শাসন করে আসছে। মানুষের জীবন ধারণ ও তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীর সব কিছু। এককথায় বলতে গেলে যেখানে মানুষ নেই সেখানে অন্যান্য সব কিছুই বৃথা। প্রাচীনকালে মানুষের জীবন যাত্রা ছিলো অনেক কঠিন। বর্তমান সময়ের মত আগুন, পানি, বিদ্যুৎ এর সুবিধা ছিলো না। গাছের চামড়া, লতা পাতা, ফলমুল ইত্যাদি দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হতো। সময়ের ব্যবধানে মানুষের জীবন যাত্রার পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা বেড়েছে। পরিবর্তন হয়েছে মৌলিক অধিকারের। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান একটি গরীর দেশ। গত কয়েক দশকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবর্তন হয়েছে আমাদের দেশের সভ্যতা সংস্কৃতি এবং মানুষের জীবন যাত্রার মানের। দেশের উচ্চ বিত্তদের মৌলিক চাহিদার বাইরেও বেড়েছে বিলাসজাত অভাব। দেশে নাগরিক হিসাবে প্রতিটি মানুষের রয়েছে মৌলিক অধিকার। আমাদের দেশের মৌলিক অধিকার বলতে আমরা সাধারণত অন্ন, বস্ত্র, খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাকে বুঝি। এগুলোর কোনটি ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না আবার কোনটি ছাড়া বাঁচতে পারলেও বাচার মত বলা যায় না। রাষ্টের নাগরিক হিসাবে তার মৌলিক সকল সকল অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কাজ। আমাদের দেশের কতিপয় নাগরিক এ সকল সুবিধা ভোগ করতে পারলেও অধিকাংশ মানুষের জন্য সহজ ভাবে জীবন পরিচালনা করা কষ্টকর। নাভিশ্বাস অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করতে হিমশিম খাচ্ছে অধিকাংশ পরিবার।
নাগরিক জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে আমাদের অতিক্রম করতে হচ্ছে মহা সংগ্রাম। খাদ্য, বস্ত্র,শিক্ষা চিকিৎসা মৌলিক অধিকার হলেও আজকাল এ গুলো অত্যন্ত ব্যয় বহুল ।
অনায়াসে বলতে পারি আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কথা। একটি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে যে পরিমাণ আর্থিক ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে তা হয়তো পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্টে নেই। যে দেশের প্রতিটি মানুষ মাথাপিছু ঋণ নিয়ে জীবন যাপন কওে সেখানে শিক্ষা ব্যবস্থা এতটা ব্যয়বহুল হওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা আলোচ্য বিষয় নয়। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারীভাবে শুরু হয় প্রাইমারী অর্থাৎ প্রথম শ্রেণি হতে। এর বাইরে মক্তব, কিন্ডার গার্ডেন ইত্যাদির মাধ্যমে অনেকেই শুরু করে থাকে। শুরুর এই পর্যায়টা বর্তমান সময়ে তুলনামুলক অনেক ব্যয়বহুল। সরকারীভাবে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বই সরবারহ করলেও এর বাইরে পরিক্ষার ফি, কোচিং, গাইড ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে গিয়ে অধিকাংশ অভিবাবককেই হিমশিম খেতে হয়। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান গুলোর খরচ আরো নির্মম। ভর্তি, বই, খাতা, কলম, বেতন এগুলো ধীরে ধীরে হয়ে গেছে আকাশচুম্বী। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে আলাদা পোষাক। সব কিছু মিলে একটি মোটামুটি ভাল প্রতিষ্ঠানে আদরের সন্তানকে ভর্তি করানো এবং আনুসাঙ্গিক খরচ বহন করতে স্বচ্ছল পরিবারগুলো কিছুটা সামর্থ হলেও আর্থিক ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে অনেক পিতামাতাই পারে না নিজের সন্তানকে ভাল স্কুলে ভর্তি করাতে। আর অনাথ অসহায় বা নি¤œশ্রেনীর পরিবারের জন্য তো এগুলো স্বপ্ন ছাড়া কিছুই না।
স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র আরো ভয়াবহ। ভাল কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যেন সোনার হরিণ। শুধু ভাল ফলাফল হলেই ভাল কলেজে জায়গা হচ্ছে না মেধাবীদের। গুণতে হচ্ছে বড় অংকের টাকা। ভর্তি ফি, পরিক্ষার ফি সংগ্রহ করতে না পারায় ঝড়ে পড়ে অসংখ্য মেধাবী মুখ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সেশন ফি, পরিবহন ফি, হল গুলোতে সিট ভাড়া বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। মেডিকেল আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যেন ধনী আর উচ্চ বিত্তদের জন্য আশ্রম।
প্রতিবছর দ্রব্য মূল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ভর্তি, বেতনসহ শিক্ষা উপকরণের দাম। অলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে কোচিং নামক কিছু কসাই খানা। নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরে গড়ে ওঠা এ সকল জায়গায় ছাত্র ও অভিভাবকের নিকট থেকে নেওয়া হয় বড় অংকের অর্থ।
সার্বিকভাবে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট এই সকল ব্যয়ের পরিমাণ দেখে একথা ভাবাই যায় যে বর্তমান সময়ে শিক্ষার মত মৌলিক অধিকার শুধু মাত্র সমাজের উচ্চ শ্রেণির জন্যই শোভা পায়। অনেক সময়ে শুধুমাত্র আর্থিক যোগান দিতে না পারার কারনে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার ন্যায় স্বাস্থ্যসেবা বা চিকিৎসা আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি। দূ:খ জনক হলেও সত্য যে আমাদের স্বাস্থসেবা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ধনী শ্রেণির জন্য সহনীয় হলেও নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য চিকিৎসা সেবা পাওয়া খুবই দুষ্কর। ক্লিনিক গুলোতে ভাল কোন ডাক্তার দেখাতে দিতে হচ্ছে বড় অংকের ফি। বিভিন্ন প্রকারের টেষ্ট ও পরীক্ষার ফি বহন করা কষ্ট সাধ্য। যদিও বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে নিয়ম বহির্ভুতভাবে অহেতুক টেষ্ট সহ মাত্রাতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ প্রায়ই দৃশ্যমান। শহরের ভাল মানের কোন ডাক্তার বা হাসপাতালের সেবা পাওয়া যেন আজকাল স্বর্ণের ডিমের চেয়েও দামী। আবার সমাজের অভিজাত শ্রেণিসহ অনেক রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রায়ই হাসপাতাল গুলো থেকে দেশের বাইরে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয় যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এছাড়াও দেশের অধিকাংশ হাসপাতাল ও ফার্মেসীতে ঔষধের নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রায়ই গণমাধ্যমে দেখা যায়। চিকিৎসা খাতের এই যাতাকলে পিষ্ট হয়ে অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে।
মানুষের বেঁচে থাকার উপাদানগুলোর মধ্যে খাদ্য অন্যতম। খাদ্য ছাড়া আমরা একদিনও চলতে পারি না। অথচ আমাদের দেশের খাদ্য সমাগ্রীর দাম আকাশ চুম্বী। যুগের সাথে দাম বাড়ানোর কিছুটা বাস্তবতা থাকলেও চাল, ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম এখনো সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার উর্ধ্বে। উৎপাদন ও যোগান পর্যাপ্ত থাকার পরও কিছু অসাধু ও স্বার্থন্বেষী ঠিকাদার আর মজুদদারের কারণে প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে মানুষের প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য সামগ্রীর মূল্য। সিন্ডিকেট ব্যবসার কাছে জিম্মী সকল সাধারণ মানুষ। এছাড়াও খাদ্যে ভেজাল ও অস্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থার কারনে মানুষের জীবনযাত্রার মান বর্তমান সময়ে অনেক বেশি ব্যয়-বহুল ও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্দোগে সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবারহ করা হচ্ছে নানা ভাবে। বৈদ্যতিক সেবার দ্বারা মানুষের জীবন যাত্রা অনেক সহজ হলেও বাসা বাড়ি সহ সব জায়গাতে বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে কয়েক গুণ। এখানে উল্লেখ্য যে, বিদ্যুৎ সরবারহ ও ব্যবহারে এখনও আমরা অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত।
এছাড়া রাস্তাঘাটে, যানবাহনে যাতায়াত হয়েছে অনেক কষ্টসাধ্য। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ও অনিরাপত্তার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
মৌলিক অধিকার পেতে যেখানে এত হিমশিম খেতে হয় সেখানে অন্যান্য সুবিধা পেতে গেলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির যেন কোন শেষ নেই।
একটি স্বাধীন ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে সকল ধরণের নাগরিক সুবিধা প্রতিটি মানুষের প্রাপ্য। সুতরাং খাদ্য,ব¯্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করণে কার্যকরী ভুমিকা থাকা অপরিহার্য। সবার জন্য শিক্ষা এ কথাটি মুখে মুখে না থেকে ধনী, গরীব, জাতি, ধর্ম -বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যেন সহজে শিক্ষার সুযোগ সমান ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা থাকা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দ্বার প্রান্তে পৌছে দিতে নানা উদ্দোগ গ্রহণ করা হলেও এটাকে মিতব্যয়ী, সহজলভ্য ও নিরাপদ করে সাধারণ মানুষকে সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
শুধুমাত্র ব্যয়বহুল জীবন যাপনের জন্য মানুষ এখনো রাস্তায় দিনাতিপাত করছে। ডাষ্টবিন থেকে খাবার সংগ্রহ করছে। শুধুমাত্র দাম বেশি বলেই বাবা তার মেয়েকে ভাল পোষাক কিনে দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলশ্রতিতে সামান্য একটা পোষাকের জন্য আতœহত্যার মত ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
সর্বপরি মানবজীবন সহজ ও মিতব্যয়িতার মধ্যে রাখতে পারলে সমাজ ও রাষ্ট্রী হতে পারে স্বাবলম্বী ও সুখি সমৃদ্ধ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুল মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সৃষ্ট মাখলুকাতের মাঝে সকল সৃষ্টি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি হলো ‘আশরাফ’ বা অতি উত্তম, অপরটি হলো ‘আতরাফ’ বা অতি নিকৃষ্ট। সৃষ্টি জগতের মধ্যকার এ চিরন্তন বিভাজন নানা দিক থেকে বিবেচ্য। দেহাবয়ব, খাদ্যমান ও রুচি, অবস্থান ও অবস্থিতি, প্রচেষ্টা ও অবদান, কর্মতৎপরতা, আবিষ্কার, ভোগ বিলাস, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি বিবেচনা করলে সামগ্রিক মূল্যায়নে কেবল মানবজাতিই আশরাফুল মাখলুকাত হবার দাবিদার। কেননা পৃথিবীর সকল মাখলুকের স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্য মানবজাতির জীবনে পরিলক্ষিত হয়। যেমন পাখি আকাশে উড়ে মানুষ পাখির মতো বিমান আবিষ্কার করে তাতে উড়ে, মাছ পানিতে বাস করে অনুরূপ মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে সমুদ্র কিংবা নদীতে নৌকা জাহাজ কিংবা ডুবো জাহাজে চলাচল করে কিংবা কার্যসিদ্ধি হাসিল করে। হাতি বড়ই শক্তিশালী প্রাণি, মানুষ প্রজ্ঞা খাটিয়ে এমনসব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে যদ্দরুণ একটি ক্রেন এর শক্তি প্রয়োগে একসাথে একশত হাতিকেও পরাভূত করা সম্ভব। এভাবে হাজারো উদহারণ দেয়া যেতে পারে।
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। মানুষের এমন কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্যসব মাখলুকে কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীতে মানব শিশু দুর্বল ও অসহায় হয়ে জন্ম গ্রহণ করে অপরের সহযোগীতা ছাড়া মোটেও চলতে পারেনা, বিপরীতে অন্যসকল প্রাণি জন্মের পর সবল থাকে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে বেড়ে উঠে, নিজের মতো করে চলতে পারে। জন্মকালিন দূর্বল মানব শিশুটিই পরবর্তীতে সকল মাখলুকাতের মাঝে স্বীয় যোগ্যতা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট ও মানবিক গুণে গুনান্বিত হয়ে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে বিবেচিত হয়।
যেসব কারণে মানবজাতি আশরাফুল মাখলুকাত : ১. মানবের সৃষ্টিপ্রক্রিয়া সুনিয়ন্ত্রিত ও চমৎকার পদ্ধতি : মহান আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টির সর্বোত্তম সেরা পদ্ধতি ও উন্নত প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করেন। এ প্রক্রিয়া কেবল তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমরা মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমরা তাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক সংরক্ষিত আধারে (জরায়ুতে) স্থাপন করেছি। এরপর শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে গোশতপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর গোশতপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে গোশত দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুনরূপে করেছি।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১২-১৪)। তিনি আরো বলেন, ‘এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত, অতঃপর আমরা একে গঠন করেছি পরিমিতভাবে, আমরা কত সুনিপুণ স্রষ্টা।’ (সুরা মুরসালাত, আয়াত : ২২-২৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) মাতৃগর্ভে মানবশিশু জন্মের স্তর ও সৃষ্টি প্রক্রিয়া সম্পর্কে এভাবে বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান আপন মাতৃগর্ভে বীর্যের আকারে ৪০ দিন, জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়ে ৪০ দিন, গোশত আকারে ৪০ দিন। এরপর আল্লাহ একজন ফেরেশতাকে পাঠান এবং চারটি বিষয়ে আদেশ দেন যে, তার (শিশুর) আমল, রিজিক, আয়ুষ্কাল ও ভালো না মন্দ এসব লিপিবদ্ধ করো। অতঃপর তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেওয়া হয়।’ (সহীহ বুখারি, হাদিস : ২৯৬৮)।
২. আল্লাহর হাতেই মানবের সৃষ্টি : পৃথিবীর সব মাখলুক আল্লাহপাকের সৃষ্টি। তিনি কোন কিছু সৃষ্টির ইচ্ছা করলে বলতেন ‘কুন’ হয়ে যাও! তৎক্ষনাৎ তা হয়ে যেত। সকল সৃষ্টিকে তিনি ‘কুন’ এর প্রয়োগে সৃষ্টি করেছেন, কেবল মানুষকে তিনি নিজ হাতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ তাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত : ৭৫)।
৩. আল্লাহই মানবদেহে ‘রূহ’ ফুঁকে দেন : রূহ বা আত্মা মহান আল্লাহপাকের নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি যে সকল প্রাণিকে প্রাণ সঞ্চারের ইচ্ছা করেছেন তাদেরকে ‘রূহ’ বা প্রাণ দেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তারা তোমাকে ‘রূহ’ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলে দাও, ‘রূহ’ আমার রবের হুকুমঘটিত বিষয়। কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছ। (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮৫)। আদম (আ.) সৃষ্টির পর আল্লাহপাক তাঁর দেহে নিজেই ‘রূহ’ ফুঁকে দিয়েছেন। সকল মানুষের দেহে রূহের সঞ্চার তিনিই করেন, এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘অতঃপর তিনি তাকে সুষম করেন এবং তাতে রূহ সঞ্চার করেন।’ (সুরা সাজদাহ, আয়াত : ৯)।
৪. সুনিপুণ ও চমৎকার দেহাবয়ব : মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতির প্রথম মানব আদম (আ.) কে পৃথিবীতে অনুপম বৈশিষ্ট্যমন্ডিত, সুনিপুণ ও চমৎকার দেহাবয়বে সৃষ্টি করেছেন। দৈহিক সৌন্দর্য, মায়াবী মুখাবয়ব, অকল্পনীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা, অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা কেবল মানবজাতিকে তিনি দান করেছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।’ (সুরা ত্বিন, আয়াত : ৪)।
৫. বিশ্বময় মানবজাতির বিস্তার : মহান আল্লাহপাক অগণিত সৃষ্টির স্রষ্টা। প্রতিটি সৃষ্টির জন্যই সুনিয়ন্ত্রিত জীবনপদ্ধতি, নিয়ন্ত্রিত বিস্তার, নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল বিদ্যমান। পৃথিবীর সর্বত্রই সকল মাখলুকের বিচরণ নেই, কিছু স্থলে, কিছু জলে, কিছু জমিনে, কিছু আকাশে, কিছু দৃশ্যপটে, কিছু আগোচরে। কেবল মানবজাতির বিচরণ পৃথিবীর সর্বত্রই। আল্লাহপাকই জগতের সর্বত্র মানবজাতির বিস্তার ঘটান। পৃথিবীর সকল প্রান্তেই মানুষের বসবাস। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন, ‘হে মানবমন্ডলী! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদের বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা পরস্পরে পরিচিতি লাভ করতে পারো।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৩)।
৬. ফেরেশতাদের সিজদা সম্মাননা : মহান আল্লাহপাক তাঁর বিশেষ সৃষ্টি পূতঃপবিত্র ফেরেশতাগণের সিজদা সম্মাননার মাধ্যমে আদম (আ.) তথা মানবজাতির মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। সকল মাখলুকের চাইতে মানবজাতিই শ্রেষ্ঠ এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক কোরআন মাজিদে বলেন, ‘আর যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললাম, ‘তোমরা আদমকে সিজদা কর’। তখন তারা সিজদা করল, ইবলিস ছাড়া। সে অস্বীকার করল এবং অহঙ্কার করল। আর সে হল কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৪)। তিনি আরো বলেন, ‘স্মরণ করো, যখন আমি ফেরেশতাদের বলেছি, আদমকে সিজদা করো। তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করেছে। ইবলিস বলল, আমি কি এমন ব্যক্তিকে সিজদা করব, যাকে আপনি কাদামাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন? (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৬১)।
৭. খলিফা হিসেবে সম্মানিতকরণ : আল্লাহপাক মানবজাতিকে ইবাদাতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। তিনি চান তাঁর সৃষ্ট এ সেরা মাখলুকগুলো কেবল তারই ইবাদাত করবে। তিনি পৃথিবীকে সেভাবে চান তারা ‘খলিফা’ বা প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর খেলাফত বাস্তবায়ন করবে। তাঁরই জমিনে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা, আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় জীবনকাল অতিবাহিত করবে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যখন তোমার প্রভু ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে যাচ্ছি।’ ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি কি এর মধ্যে (পৃথিবীতে) এমন একজনকে নিযুক্ত করবেন, যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে, যেখানে কিনা আমরা আপনার পবিত্রতাকে প্রশংসা ভরে বর্ণনা করছি এবং আপনার নিষ্কলুষতাকে ঘোষণা করছি?’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না।’ (সুরা বাকারাহ, আয়াত: ৩০)।
৮. যুল আকল বা জ্ঞানবান করে সৃষ্টি : মহান আল্লাহপাক কেবলমাত্র মানবজাতিকে জ্ঞানবান করে সৃষ্টি করেছেন। তাদেরকে তিনি আবেগ বিবেক এবং সকল মানবীয় মূল্যবোধ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তিনি প্রথম মানব ও প্রথম নবী আদম (আ.) সকল কিছু শিক্ষা দিয়েছেন একই ধারাবাহিকতায় মুহাম্মদ (সা.) কে ‘উম্মী নবী’ হওয়া স্বত্ত্বেও অকল্পনীয় জ্ঞান, হিকমা, প্রজ্ঞা, বাগ্মিতা, অতুলনীয় যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানবজাতিই যুল আকল এর অধিকারী। কোরআন মাজিদে এসেছে, ‘আর তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন, তারপর সে-সকল ফেরেশতাদের সম্মুখে পেশ করলেন এবং বললেন, ‘এই সমুদয়ের নাম আমাকে বলে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩১)। তিনি আরো বলেন, ‘ পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে। মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত পিন্ড থেকে। পড়, তোমার প্রতিপালক বড়ই দয়ালু। যিনি কলমের সাহায্যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে এমন জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানত না। (সুরা আলাক্ব, আয়াত: ১-৫)।
৯. নবী রাসুল মনোনীতকরণ : আল্লাহপাক কেবল মানবজাতির মধ্য থেকেই নবী রাসুল নির্বাচন করেছেন। তিনি তাঁদেরকে বিভিন্ন জনপদে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নিকট প্রেরণ করেছে। উক্ত জাতিগোষ্ঠীর কতকলোককে তিনি তাঁদের অনুসারী ও অনুগামী হিসেবে কবুল করেন। আল্লাহপাক বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই প্রতিটি জাতির নিকট একজন করে রাসুল প্রেরণ করেছি, যাতে করে তাদের বলে, ‘তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাগুত তথা শিরক থেকে দূরে থাক।’ (সুরা আন নহল, আয়াত : ৩৬)।
১০. মাখলুকাত মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত : আল্লাহপাক জগতের অগণিত মাখলুককে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করে রেখেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুলতঃ মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নিরূপণের উদ্দেশ্যে এ ব্যবস্থা নির্ধারণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘ তোমরা কি দেখ না আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূ-মণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করে দিয়েছেন এবং তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামতসমূহ পরিপূর্ন করে দিয়েছেন? এমন লোক ও আছে; যারা জ্ঞান, পথনির্দেশ ও উজ্জল কিতাব ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে বাকবিতন্ডা করে। (সুরা লুকমান, আয়াত: ২০)। তিনি আরো বলেন, ‘আর তিনি আয়ত্ত্বাধীন করে দিয়েছেন তোমাদের, যা আছে নভোমন্ডলে ও যা আছে ভূমন্ডলে; তাঁর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সুরা জাসিয়া, আয়াত: ১৩)।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে যেসব মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ও সম্মানিত করেছেন তা ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ হবার জন্য যথেষ্ট। সর্বোপরি যারা আল্লাহর প্রতি, তারঁ প্রেরিত নবী রাসুল (আ.) গণের প্রতি ইমান আনে, আল্লাহর আদেশ নিষেদ পালন করে তারাই প্রকৃত অর্থে ‘আশরাফু মাখলুকাতের’ প্রকৃত দাবীদার। তাদের দাবীর প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘ যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। (সুরা আল বাইয়্যেনা, আয়াত: ৭)। পরিশেষে আল্লাহপাক আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা মাখলুক হিসেবে তাঁর হুকুম আহকাম মেনে চলার তাওফিক দান করুন।

জন্মভূমি ডেস্ক November 23, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article বঙ্গোপসাগরে বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণ
Next Article সাতক্ষীরা ‌চিংড়ি চাষের গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল ও সমাপনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত

দিনপঞ্জি

November 2025
S M T W T F S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
« Oct    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

লবণাক্ততার ছোবলে উপকূলের ১৮ জেলার ৯৩ উপজেলা

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

দেশের ‌অর্থনীতিতে রেকর্ড পরিমাণ ‌ রাজস্ব দিচ্ছে সাতক্ষীরার কাকড়া ও চিংড়ি ‌

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago
তাজা খবরমহানগর

খুলনায় বিতর্কিতদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা করবেন না বিএনপির প্রার্থী মঞ্জু

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

লবণাক্ততার ছোবলে উপকূলের ১৮ জেলার ৯৩ উপজেলা

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

দেশের ‌অর্থনীতিতে রেকর্ড পরিমাণ ‌ রাজস্ব দিচ্ছে সাতক্ষীরার কাকড়া ও চিংড়ি ‌

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago
তাজা খবরমহানগর

খুলনায় বিতর্কিতদের সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা করবেন না বিএনপির প্রার্থী মঞ্জু

By জন্মভূমি ডেস্ক 3 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?