
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। আবার বিএনপিসহ কিছু দল আছে সরকার পতনের আন্দোলনে। বিএনপি যে সরকার পতনের আন্দোলনে খুব সুবিধা করতে পারবে না, সেটা দলটির নীতিনির্ধারকেরাও বুঝতে পারছেন। কিন্তু তারপরও হরতাল-অবরোধ থেকে সরে আসছে না। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনে এসে বিএনপিকে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘নির্বাচনে আসুন, কার কত দৌড় আমরা দেখি। জনগণ কাকে চায়, সেটা আমরা যাচাই করে দেখি।’ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
আমাদের দেশে সাধারণত উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়ে থাকে। আগামী নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব যে আছে, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না এলে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগকে বড় বাধা অতিক্রম করতে হবে না।
আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে এই আশাবাদ তৈরি হয়েছে যে তাঁরা আবার ক্ষমতায় আসছেন। অন্যদিকে দেশের মানুষের মন থেকে আশঙ্কা দূর হচ্ছে না। বিএনপি গোপন স্থান থেকে অবরোধ ডাকছে। প্রতিদিন যানবাহনে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এটা কি চলতেই থাকবে? ভোট শেষে কি দেশে শান্তি ফিরবে? এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে গণমাধ্যমে যেসব খবর ছাপা হয় বা হচ্ছে তা খুব আশাজাগানিয়া নয়। করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবের ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও লেগেছে। দেশে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক আগের চেয়ে আরও দুর্বল হয়েছে। রিজার্ভ কমে এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে। কমছে প্রবাসী আয়। ডলারের সংকট কাটেনি। স্থবিরতা এসেছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে। বাড়ছে খেলাপি ঋণও। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মূল্যস্ফীতি।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সুশাসন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদানের মান বৃদ্ধির বিষয়গুলোকে যদি এখনই আমরা গুরুত্ব না দিই, তাহলে কিন্তু এটা আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমাবে এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে।’
নির্বাচন সামনে রেখে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, সেটাও ভাবনার বিষয়। কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির প্রভাব প্রথম অর্থনীতিতেই পড়বে। তাই এ রকমটি যেন না হয়, সে দিকটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।