ক্রীড়া প্রতিবেদক : শেষ ভাগে এসে দারুণ রোমাঞ্চ উপহার দিচ্ছে ২০২৪ ইউরো। নকআউট পর্বে লড়াইটা হচ্ছে শেয়ানে শেয়ানে। কেউ কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিচ্ছে না। অতিরিক্ত সময়ের রোমাঞ্চ, টাইব্রেকার, পিছিয়ে পড়ে ম্যাচ জেতা—কী নেই এবারের ইউরোতে।
ইউরো শেষ হতে বাকি আর মাত্র তিন ম্যাচ। ৯ ও ১০ জুলাই দুটি সেমিফাইনালের পর জার্মানিতে চলমান মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট শেষ হবে ১৫ জুলাই।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনাতে পরশু রাতে প্রথম সেমিতে মুখোমুখি হবে স্পেন-ফ্রান্স। দ্বিতীয় সেমিতে সিগনাল ইদুনা পার্কে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস।
নকআউট পর্বের রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকেই ধরে নেওয়া যাক। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে বিদায় করে কোয়ার্টারের টিকিট কাটে সুইজারল্যান্ড। সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে তুরস্ক। অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে তুর্কিরা কেটেছে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।
কোয়ার্টার ফাইনালে লড়াইটা আরও জমে ওঠে। স্টুটগার্টে পরশু দুই হেভিওয়েট স্পেন-জার্মানির লড়াই যারা দেখেছেন, তারা বুঝতে পেরেছেন শেয়ানে শেয়ানে লড়াই কাকে বলে। স্কোরকার্ডে বলা থাকবে, আয়োজক জার্মানিকে কাঁদিয়ে সেমিতে উঠেছে স্পেন। তবে জার্মানি তো চেষ্টা কম করেননি। একের পর এক আক্রমণে স্পেনের রক্ষণদুর্গ কাঁপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ভাগ্য যেমন পক্ষে ছিল না জার্মানদের, তেমনি স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন হয়ে উঠেছিলেন সুপারম্যানের চেয়েও বেশি কিছু। বদলি হিসেবে নামা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো ১১৯ মিনিটে করেন জয়সূচক গোল। একই সঙ্গে ‘জার্মান স্নাইপার’ টনি ক্রুসের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়।
ফ্রান্স তো এবার সেমিফাইনালে উঠেছে ওপেন প্লে থেকে কোনো গোল না করেই। ৫ ম্যাচ খেলে ফরাসিরা করেছে ৩ গোল, যার দুটি এসেছে আত্মঘাতী গোলে। পেনাল্টি থেকে টুর্নামেন্টে দলের একমাত্র গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। হামবুর্গে পরশু রাতে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স-পর্তুগাল ম্যাচে ১২০ মিনিটের লড়াইয়েও কোনো গোল হয়নি। পেনাল্টি শুটআউটে পর্তুগিজদের ৫-৩ গোলে হারিয়ে সেমির টিকিট কাটে ফ্রান্স। ডুসেলডর্ফ অ্যারেনাতে গত রাতে ইংল্যান্ড-সুইজারল্যান্ড তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটাও গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। ১২০ মিনিটের লড়াই ১-১ গোলে হলেও কোনো পক্ষ আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে তেমন একটা খেলেনি। টাইব্রেকারে সুইসদের ৫-৩ গোলে হারিয়ে সেমির টিকিট কেটেছে ইংলিশরা।
বার্লিনে গতকাল ইউরোর চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে রূপকথার গল্প লেখার পথেই ছিল তুরস্ক। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩৫ মিনিটে গোল করেন তুর্কি ডিফেন্ডার সামেত আকায়দিন। তবে ডাচরা এবার তুর্কি রূপকথা হতে দেয়নি। ৭০ ও ৭৫ মিনিটে দুই গোলে ২-১ গোলে জিতে সেমিফাইনালের টিকিট কাটে নেদারল্যান্ডস। স্তেফান দে ভ্রিজ সমতাসূচক গোলটি করেছেন। অপর গোলটি উপহার দিয়েছেন তুর্কি ডিফেন্ডর মার্ত মুলদুর। শেষ তিন ম্যাচেও এমন রোমাঞ্চের আশাতেই নিশ্চিতভাবে থাকবেন ফুটবলপ্রেমীরা।