আল্লাহতায়ালার কৃপায় আজ পবিত্র মাহে রমজানের নাজাতের দশকের ৪র্থ দিনের রোজা আমরা অতিবাহিত করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। অনেকেই শেষের এ দিনগুলোতে রোজার ইবাদতের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। আধ্যাত্মিক খাদ্য গ্রহণের পরিবর্তে বাহ্যিক খাদ্যের দিকেই যেন আমাদের আগ্রহ বেশি।
অথচ মুমিনের পরিবারের জন্য পবিত্র এ মাস বসন্তের মাস। এ মাসে প্রতিটি মুমিন হৃদয় যেমন লাভ করে আল্লাহপাকের জান্নাতের প্রশান্তি তেমনি তাদের পুরো পরিবারও হয়ে ওঠে জান্নাতি পরিবার। আমরা যদি আমাদের পরিবারগুলোকে জান্নাত সদৃশ বানাতে চাই তাহলে পবিত্র এ রমজান থেকে লাভবান হতে হবে। রমজানের পবিত্র শিক্ষা বছর জুড়ে জীবিত রাখতে হবে।
নাজাতের এদিনগুলোতে আমাদের ইবাদতে আনতে হবে বিশেষ পরিবর্তন। রাতগুলো নফল ইবাদতে অতিবাহিত করতে হবে। মূলত নিশী রাত্রে জেগে নামাজ, দোয়া ইত্যাদি আত্মশুদ্ধির কাজ করলে কুপ্রবৃত্তিসমূহ দমন হয় এবং নিজের আত্মাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরীভাবে সাহায্য করে।
আল্লাহর পবিত্র বান্দাদের সবার এই একই অভিজ্ঞতা যে, আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য গভীর রাতের দোয়া ও নামাজের মত এত কার্যকরী পন্থা আর কোনোকিছু নাই। কেননা গভীর রাতের নীরবতায় হৃদয়ের মাঝে এক প্রশান্তি বিরাজ করে। এছাড়া তাহাজ্জুদের সময়টা ব্যক্তির চারিত্রিক শক্তি অর্জনের পক্ষে এবং নিজের কথাবার্তায় প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে অনেক উপযোগী।
আর রমজান মাস হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে সন্তানদের যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে সন্তানরা কখনই ভুল পথে পা রাখবে না। আমরা যদি আল্লাহপাকের আদেশ নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রথমে নিজেরা পালন করে জীবন অতিবাহিত করি এবং সন্তানদের সেভাবে গড়ে তুলি তাহলে আমাদের ঘর জান্নাতি ঘরে পরিণত হতে পারে। নিজেদের পরিবারগুলোকে জান্নাতি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করাতে চাইলে পবিত্র রমজান মাসকে কাজে লাগাতে হবে।
নাজাতের এ দিনগুলোতে আমাদের অনেক বেশি পবিত্র কুরআন পাঠ ও অন্যান্য ইবাদতে রত হতে হবে। এই দিনগুলোকে শুধু কুরআন তেলাওয়াত নয় বরং এর মর্মার্থ অনুধাবনেরও চেষ্টা করতে হবে। মহানবী (সা.) রমজান মাসে অনেক বেশি কুরআন পাঠ করতেন। হজরত জিবরাইল (আ.) থেকে কুরআনের পাঠ গ্রহণ করতেন। হাদিসে আছে, ‘রমজানের প্রতি রাতে জিবরাইল (আ.) রাসুল (সা.) এর সাথে সাক্ষাত করতেন। কুরআন শুনিয়ে ও শুনে তারপর বিদায় গ্রহণ করতেন।’ (বুখারি)
তাই আসুন না, রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোর প্রতিটি সময়কে কাজে লাগিয়ে বিশেষ ইবাদত বন্দেগিতে রত থেকে অতিবাহিত করি। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করে তাঁর সন্তুষ্টির চাদরে জড়িয়ে নিন, আমিন।