জন্মভূমি ডেস্ক : পাকিস্তানের আসন্ন ১৬ তম পার্লামেন্ট নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মনোনয়ন আগেই বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। এবার তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) ‘প্রায় সব’ প্রার্থীর মনোনয়ও বাতিল করা হয়েছে।
পিটিআইয়ের মুখপাত্র রাউফ হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের দলের প্রায় সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পিটিআইয়ের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ প্রার্থী রয়েছেন এই তালিকায়।’
ইসিপির তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি হবে দেশটির পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন। আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইসলাবামাদ সেশন জজ আদালতের রায়ে ৩ বছর কারাবাস ও ৫ বছরের নির্বাচন নিষেধাজ্ঞার দণ্ডপ্রাপ্ত ইমরান খান বর্তমানে রয়েছেন আদিয়ালা কারাগারে। নিম্ন আদালতের রায়কে বাতিল চেয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) আপিল করেছিলেন ইমরান খানের আইনজীবীরা। পিটিআইয়ের প্রত্যাশা ছিল—নিম্ন আদালতের রায় বাতিল না করলেও অন্তত স্থগিত করবেন আইএইচসি।
কিন্তু সেই প্রত্যাশায় কার্যত পানি ঢেলে দিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর এক রায়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট সেশন জজ আদালতের রায়কেই বহাল রাখার ঘোষণা দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে তার পরের দিনই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন পিটিআইয়ের আইনজীবীরা। একই দিন লাহোর এবং মিনাওয়ালির দুটি আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ইমরান খানের প্রতিনিধিরা।
শনিবার সেই মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। তার পরের দিন রোববার বাতিল করা হলো পিটিআইয়ের অন্যান্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রও।
সাংবাদিকদের রাউফ হাসান জানান, নির্বাচন থেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফকে বাইরে রাখার এজেন্ডা নিয়েছে ইসিপি এবং এই এজেন্ডার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে লড়াই করবে পিটিআই।
‘নির্বাচন থেকে পিটিআইকে দূরে রাখতে তারা সব রকম কৌশল হাতে নিচ্ছে। কিন্তু কোনো পরিস্থিতিতেই আমরা রাজনীতি ছাড়বো না, নির্বাচনও বয়কট করব না। এসব অপকৌশলের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক লড়াই জারি থাকেব।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশও ইসিপির এই পদক্ষেপে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারি এ প্রসঙ্গে এএফপিকে বলেন, ‘ইসিপির এই পদক্ষেপ এক কথায় অভূতপূর্ব। পাকিস্তানের ইতিহাসে এর আগে এভাবে এত বড় মাত্রায় একটি গোটা রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া দেখা যায়নি।’