জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। সেখানে শিশু ও নারীদের নির্মমভাবে হত্যা করছে দখলদার বাহিনী। দীর্ঘ দেড় মাস পরও গাজায় হামলা বন্ধ করতে রাজি নয় ইসরায়েল। এমন অবস্থায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে ৫০ দেশের নেতাকে চিঠি দিয়েছে ইরান।
চিঠিতে বিশ্বের সব দেশকে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের পাশবিকতা বন্ধ করতে তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিকল্প নেই।
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সোমবার (২০ নভেম্বর) রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, কাজাখস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া ও জর্ডানসহ বিশ্বের ৫০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। এসব দেশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, গাজায় মৌলিক মানবিক নীতি, নৈতিকতা এবং অধিকার লঙ্ঘনের প্রতি ইসরায়েলি অপরাধের বিরুদ্ধে চোখ বন্ধ করে রেখেছে পশ্চিমারা।
গত ৪৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার হাজার হাজার মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা জানান ইরানের প্রেসিডেন্ট। তিনি এই অপরাধযজ্ঞে প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোরও কঠোর সমালোচনা করে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকার ও নৈতিকতার ব্যাপারে যে দ্বৈত নীতি গ্রহণ করেছে গাজা যুদ্ধ তার প্রমাণ।
ইব্রাহিম রাইসি বলেন, বিশ্বের স্বাধীনচেতা দেশগুলো বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে তাহলে গাজাবাসী নারী ও শিশুসহ নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যায় লাগাম টানা সম্ভব হবে। তিনি ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অকুতোভয় লড়াই করার জন্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, মধ্যরাতের ওই বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী এবং শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় গাজায় সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৫ হাজারের বেশি শিশু এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি নারী।
এদিকে জানা গেছে, দীর্ঘ দেড় মাস ধরে গাজায় হামলা চালানোর পর হামাসের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। তবে এখন অপেক্ষা শুধু হামাসের পক্ষ থেকে জবাব পাওয়ার। সোমবার (২১ নভেম্বর) ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে এই সমঝোতায় আসতে আগ্রহী ইসরায়েল।