
ডেস্ক রিপোর্ট : ইরান ও ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির সুনির্দিষ্ট সময় ও শর্ত নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রাথমিক ঘোষণায় বলেছিলেন, তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বার্তার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
এতে যুদ্ধবিরতির সময় দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলীয় সময় অনুযায়ী রাত ১২টার কাছাকাছি। এরপর ঠিক রাত ১২টার কিছু পর ইরান ও ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। খবর মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশনের অংশ প্রেস টিভি বলেছে, ইসরায়েল অধিকৃত এলাকায় ইরানের চার দফা হামলার পর যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম টেলিগ্রামে সংক্ষিপ্ত এক লাইনের খবরে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর হওয়ার পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ ও ওয়াইনেট নিউজ পোর্টালেও শিরোনাম এসেছে যে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
তবে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়নি।
ইসরায়েল হামলা বন্ধ করলে তবে ইরানও বন্ধ করবে বলে জানিয়েছেন সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি। মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, দখলদার ইসরায়ে যদি তাদের ‘অবৈধ হামলা বন্ধ করে’ তাহলে ইরানও আর হামলা চালাবে না।
তিনি দখলদারদের ইরানি সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোর ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। আরাঘচি জানিয়েছেন, এ সময়ের মধ্যে হামলা বন্ধ করতে হবে। তবে এ সময় ইতোমধ্যে পার হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ইরান যেমনটা বারবার স্পষ্ট করেছে- ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে, ইরান করেনি। এ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো চুক্তি এবং হামলা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি।
কিন্তু যদি বেধে দেওয়া সময় ভোর ৪টার মধ্যে ইরানের মানুষের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ হামলা বন্ধ হয়। তাহলে এরপর তেহরানের আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আমাদের সামরিক হামলা বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।
এদিকে, কাতারে অবস্থিত আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে সোমবার রাতে প্রতিশোধমূলক হামলা ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কাতারের বিরুদ্ধে নয় বলে জানিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদ।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কাতারের আবাসিক এলাকা থেকে দূরে পরিচালিত হয়েছে।
পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কাতার এবং এর সম্মানিত জনগণের জন্য কোনো হুমকি নয়।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কাতারের সঙ্গে উষ্ণ ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং তা চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার দিনগত রাতে ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি হামলা চালায়, তবে তার জবাব কঠিন হবে।
কাতারের পাশাপাশি মঙ্গলবার ভোরে ইরাকের ৩ মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালায় ইরান।