জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় গত এক মাসে নিহত হয়েছে প্রায় দশ হাজার মানুষ। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজারই শিশু। বাকিদের বেশিরভাগই নারী।
গাজা ও ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৭ হাজার ২০০ জন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় প্রায় এক মাস ধরে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪ হাজার ৮ শিশু নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজারর ৭৭০ জনে।নিহতদের মধ্যে ৪ হাজার ৮ জনই শিশু ও ২৫৫০ জন নারী।
বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত) গাজায় ইসরায়েলি হামলা অন্তত ২৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে—গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে অন্তত ১৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও অন্তত ২ হাজার ২০০ জন। সব মিলিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে নিহতের মোট সংখ্যা ৯ হাজার ৯২৩ জন।
সবশেষ পাওয়া তথ্যমতে,সোমবার (৬ নভেম্বর) সকালে গাজার জাওয়াইদা এলাকায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন।
এর আগে, রোববার (৫ নভেম্বর) বিকেলে সেন্ট্রাল গাজায় অবস্থিত বুরেজি শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল আকসা হাসপাতাল।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ নিয়ে মোট তিনটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জাবালিয়া ও আল-মাগাজি শরণার্থী শিবিরের হামলায় অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে গাজা প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সালামা মারুফ বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় ৫৫টি মসজিদ, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি গির্জা ধ্বংস হয়েছে।’
সালামা মারুফ আরও জানান, গাজা প্রশাসনের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনের পাঁচটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৬টি হাসপাতাল, ৩২টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ২৭টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে। চিকিৎসা খাতসংক্রান্ত ১০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজার জনসংযোগ বিভাগের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসরায়েলি হামলায় ৮ হাজার ৫০০ ঘর, ৪০ হাজার আবাসন ইউনিট পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২ লাখ ২০ হাজার ইউনিট কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৮৮টি সরকারি প্রধান কার্যালয়, ২২০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্কুলের মধ্যে ৬০টি মেরামতের অযোগ্য।