# ৩ দিন সাগরে ভাসছে ফিসিং ভেসেল
জন্মভূমি ডেস্ক
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। এর ফলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। এখাধিক স্থানে মৎস্য ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজ রয়েছে অসংখ্য জেলে। এ পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। অপর দিকে ইঞ্জিন বিকল হওয়া সাগরে ভাসছে জাহাজ। সকল সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ছাড়াই ফিসিং বোর্ড ফিরে এসেছে লোকালয়ে।
শুক্রবার রাতে আবহায়া াধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নি¤œচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে। এটির কেন্দ্রের বাতাসের গতিবেগ ওঠে যাচ্ছে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ফলে উপক‚লে ঝড় ও জলোচ্ছ¡াসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন- উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নি¤œচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপক‚লের অদূরে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপক‚ল অতিক্রম করতে পারে। গভীর নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্ব্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা/ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমাদের শরণখোলা আঞ্চলিক অফিস থেকে শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঝড়ে ৫টি ফিসিংবোট ডুবে গেছে। নি¤œচাপের কারণে উত্তাল সাগরে টিকতে না পেরে দুই শতাধিক ফিসিংবোটবহর সুন্দরবনসহ উপক‚লের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর ৩নং সতর্ক সংকেত জারী করেছে।
পিরোজপুরের পাড়েরহাটের আনোয়ার ফিস ট্রেডার্সের মালিক মো: আনোয়ার হোসেন জানান, তার আড়তের ফিসিংবোট “এফবি মায়ের দোয়া” সুন্দরবনের কচিখালীর দক্ষিণে পক্ষিদিয়াচরের কাছে গভীর সাগরে শুক্রবার ভোররাত ৪টার দিকে ১৩ জেলেসহ ডুবে যায়। বোটের জেলেরা সাগরে চারঘন্টা ভেসে থাকার পরে শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে অপর একটি ফিসিংবোট ভাসমান ১৩ জেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। উদ্ধারকৃত জেলেদের বাড়ি তালতলীর নিদ্রাসখিনা।
বরগুনা জেলা ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার রাত এবং শুক্রবার সকালে পাথরঘাটা এলাকার বাদশা হাওলাদারের মালিকানাধীন ফিসিংবোট “এফবি হাওলাদার” সহ চারটি ফিসিংবোট সাগরে ডুবে যাওয়ার খবর তিনি শুনেছেন এবং কোন জেলে নিখোঁজ নেই বলে মোস্তফা চৌধুরী জানিয়েছেন।
দুবলারচরের মানিকখালী খালে আশ্রয় নেওয়া ফিসিংবোট এফবি সাব্বিরের মালিক বাগেরহাটের কচুয়া এলাকার মিজানুর রহমান শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে সাগরের আবহাওয়া খুব খারাপ হওয়ায় মাছ ধরা বন্ধ রেখে তারা সুন্দরবনের ভেদাখালী খালের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে কক্সবাজার চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের দুইশতাধিক ফিসিংবোট আশ্রয় নিয়েছে এবং এবছর এতবড় ঝড় আর হয়নি বলে ঐ মালিক জানান।
বাংলাদেশ ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সহ সভাপতি ও শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, শতাধিক ফিসিংবোট সুন্দরবনসহ বিভিন্নস্থানে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে বলে জানান।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার শুক্রবার দুপুরে মোবাইল ফোনে জানান, সাগরের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বড় বড় ঢেউ হচ্ছে। অনেক ফিসিংবোট দুবলারচরের ভেদাখালী, মানিকখালী, আমবাড়িয়াসহ বিভিন্ন খালের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আছে বলে ঐ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
\ হাতিয়ায় ট্রলারডুবি, ৩ জেলের লাশ উদ্ধার \
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনায় তিন জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও এক জেলের নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) উপজেলার জাহাজমারার কাছে মেঘনা নদীর দমারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শরিফ উদ্দিন, মাইনুদ্দিন ও বাবুলউদ্দিন। নিখোঁজ জেলের নাম বেলাল উদ্দিন। এদের সবার বাড়ি হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভোরে ১৬ জন জেলে নিয়ে হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী ঘাট থেকে ছেড়ে যায় এফ পি হাজী সিরাজ নামীয় একটি মাছের ট্রলার। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার দুপুরে নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় তিন জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, ট্রলারে থাকা ১২ জেলেকে জীবিত উদ্ধার ও এক জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন বলেন, এসব জেলের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
\ বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, ১১ জেলে নিখোঁজ \
বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজার নাজিরারটেক চ্যানেলে মাছ ধরার ট্রলার ডুবে ১১ জেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ট্রলারে থাকা ১৮ জন জেলের মধ্যে ৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রথমে জানান ট্রলার-মালিক জাকির হোসেনের বড় ভাই জামাল হোসেন।
জামাল আরও জানান, সাগর থেকে ফেরার পথে সাগর উত্তালের কারণে জাকির হোসেনের এফবি মায়ের দোয়া ফিসিং ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে ৭ জনের খোঁজ পেলেও এখন পর্যন্ত ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা খবর পেয়েছি। আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে। বিস্তারিত জেনে পরে জানানো হবে।
\ তিনদিন ধরে সাগরে ভাসছে ফিসিং ভেসেল \
আমাদের মোংলা প্রতিনিধি জানান, ইঞ্জিন বিকল হয়ে ৭ জন অফিসার ও ২৯ জন ক্রু নিয়ে তিনদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে ভাসছে ফিসিং ভেসেল এফভি জোয়ান ডেভার। সাগরে ভাসতে থাকা এ ফিসিং ভেসেলটি (মাছ ধরা বড় জাহাজ) উদ্ধারের চেষ্টা করছেন নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড।
চট্টগ্রামের কন্টিনেন্টাল গ্রæপের মেরিন ফিসারিজ লি: এর ইনচার্জ আ: সালাম মজুমদার জানান, বুধবার দুপুর ১টার দিকে চট্টগ্রামের সদর ঘাট থেকে ১৮০ মে: টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এফভি জোয়ান ডেভার গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর ওইদিনই ভেসেলটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে থাকে। ভেসেলটিতে ৭জন অফিসার ও ২৯ জন ক্রু রয়েছে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে থাকার খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুরে ওই জাহাজটি উদ্ধার মোংলা কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এ ফিসিং ভেসেলটি এখন মোংলা বন্দরের অদূরে ফেয়ারওয়েবয়া ও আউটারবার এলাকায় রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, ওই জাহাজটি হতে ভিএইচএফ’র মাধ্যমে মোংলা বন্দরের হিরণপয়েন্ট পাইলট ষ্টেশনেও যোগাযোগও করা হচ্ছে।
জাহাজটি বঙ্গোপসাগরের পায়রা বন্দর এলাকা থেকে ভাসতে ভাসতে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়েবয়া-আউটারবার এলাকায় চলে এসেছে। বর্তমানে জাহাজটিতে থাকা অফিসার ও ক্রুরা ভীষণ উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, জাহাজটি দ্রæত উদ্ধারের জন্য নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও মোংলা বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এদিকে এটিকে দ্রæত উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য নৌবাহিনীর একটি জাহাজও পাঠানো হয়েছে।
মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার দুপুরে খবর পাওয়ার পর বিষয়টি নৌবাহিনীকে জানানো হয়। এরপর নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সাগর প্রচন্ড উত্তাল রয়েছে, তারপরও ফিসিং ভেসেলটি উদ্ধারে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
\ দুবলার চরে প্রচÐ ঝড়-বৃষ্টি, মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামা বিঘিœত \
আমাদের মোংলা প্রতিনিধি মো: হাসান গাজী, আরো জানান, লঘুচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর প্রচন্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে। তাই গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা বনবিভাগের দুবলার চরের ভেদাখালী খালী নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার ভোর থেকে দুবলার চর এলাকাসহ সাগরে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি বইছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার বলেন, গত রাত থেকেই দুবলার চরে প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে। সেই সাথে প্রচুর বৃষ্টিপাতও রয়েছে। কিন্ত শুক্রবার ভোর থেকে ঝড়-বৃষ্টি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা দুবলার চরে আশ্রয় নিয়েছেন। চরের ভেদাখালী খালে ৫৪টি ট্রলার নিরাপদে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে শুক্রবারও মোংলা বন্দর, সাগর-সুন্দরবন উপক‚লীয় এলাকায় তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। এর প্রভাবে মোংলাসহ সংলগ্ন উপক‚লীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহণের কাজ বিঘিœত হচ্ছে।
মোংলা বন্দর বার্থ শিপ অপারেটর এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, বৃষ্টিপাত হলে জাহাজের পণ্যের সুরক্ষায় কাজ বন্ধ রাখা হয়। জাহাজের হ্যাচ/হ্যাজ (উপরের ঢাকনা) খোলা থাকলে বৃষ্টিতে মালামালের ক্ষয়ক্ষতিসহ জাহাজের অভ্যন্তরে পানি জমে। তাই বৃষ্টির সময় কাজ বন্ধ থাকছে, কমলে আবার শুরু হচ্ছে, এভাবেই কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, কাজ বন্ধ রাখার কোন নির্দেশনা বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এখনও দেয়নি। কারণ তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতে বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকেনা, তবে বিঘিœত হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) আ: ওয়াদুদ তরফদার বলেন, আমরা আবহাওয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, বন্দরের কাজ কর্মও চলছে। আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আমাদের পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকালের মধ্যেই পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর ও মহিপুর ঘাটে বেশিরভাগ ট্রলার এসে ভিড়েছে। তবে তিনদিন সাগরে থেকেও মাছ না পেয়ে হতাশ জেলেরা।
আলীপুর আড়তদার সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘তিনদিন আগে আবহাওয়া কিছুটা ভালো হলে জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে যায়। কিন্তু হঠাৎ বৃহস্পতিবার আবহাওয়া খারাপ হলে তারা আবার তীরে ফিরতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার দুটি ট্রলার ডুবির ঘটনাও ঘটে। তবে জেলেদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
\ বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত বহাল \
উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভ‚ত হয়ে নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া আবহাওয়ার ১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, লঘুচাপের কারণে বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেয়।
উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভ‚ত হয়ে শুক্রবার সকাল ৬টায় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভ‚ত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নি¤œচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সমুদ্রবন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নি¤œচাপ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপক‚লীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ল²ীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নি¤œাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ¡াসে প্লাবিত হতে পারে।
\ উত্তাল বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে গেলো আরও ২ ট্রলার \
বরগুনার তালতলী উপজেলার আশারচর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরে লালদিয়ার চর সংলগ্ন স্থানে ঝড়ের কবলে পড়ে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ভোরে একটি ও পায়রার মোহনায় আরেকটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারের ১৯ জেলেকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছে ট্রলার দুটি।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, নিদ্রা এলাকার জাফর মাঝির এফবি হাওলাদার নামের ট্রলারটি ১৩ জেলেসহ বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গোপসাগরে লালদিয়ার চরের কাছে মাছ ধরতে যায়। শুক্রবার ভোরে আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। পার্শ্ববর্তী একটি ট্রলারে সাহায্যে ডুবে যাওয়া ট্রলারটির ১৩ জেলেকে উদ্ধার করা গেলেও ট্রলারটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, মজনু মেম্বারের একটি ট্রলার ছয় জেলেসহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গোপসাগরের পায়রা নদীর মোহনায় জাল ফেলতে গেলে শুক্রবার ভোরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। খবর পেয়ে কিনার থেকে দুটি ট্রলার গিয়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ছয় জেলেকে উদ্ধার করলেও ট্রলারটি পাওয়া যায়নি।