সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে প্রতিবছর একের পর এক ঘূর্ণিঝড় জালচ্ছাস । উপকূলীয় এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি তারা ত্রাণ চায় না চায় টেকসই মজবুত ভেরি বাদ। প্রায় প্রতিবছর বাংলাদেশের উপকূলে ছোট-বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ঘটনা ঘটে। রিমালের স্থায়িত্বের দিক থেকে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড় থেকে বেশ আলাদা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের ঘূর্ণিঝড় রিমাল বেশি সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। রিমাল তাণ্ডব চালিয়ে চলে যাওয়ার পরও এখনো রয়ে গেছে এর ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষত।
রিমালের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উপকূল অঞ্চলের বেড়িবাঁধ। খুলনা, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক লাখ মানুষ। খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনায় বাঁধ ভাঙে বেশি। খুলনা বিভাগে ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বরগুনায় ১২ কিলোমিটার, পটুয়াখালীতে ৯ কিলোমিটার এবং ভোলায় ১৩ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বরিশাল বিভাগে ৫০ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি হয়। এর আগেও সিডর, আইলা, আম্ফানসহ অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে দেখা গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাবে—এটিই হয়ে উঠেছে উপকূলের স্বাভাবিক ঘটনা। তবে টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি করা গেলে হয়তো কিছুদিন পরপর উপকূলের মানুষদের এমন পানিবন্দি হয়ে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হতো না।
খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট উপকূলের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি চিংড়িচাষ। ওই জেলাগুলোর উপকূলীয় অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে চিংড়ি চাষের ওপর নির্ভরশীল। যখন লোকালয়ে সমুদ্রের লোনা পানি প্রবেশ করে তখন এসব অঞ্চলের চিংড়ি ঘেরগুলো পানিতে ভেসে যায়। ফলে বেশ মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়তে হয় চিংড়ি চাষের সঙ্গে সম্পৃক্তদের। এ অঞ্চলের অর্থনীতি বেশ বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পূর্বেই দরজায় কড়া নাড়তে থাকে নতুন কোনো ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এসব ঘের ব্যবসায়ীর জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না, যার ফলে এই ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হন এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এ ছাড়া লোকালয়ে পানি ঢুকে ভেসে যায় মানুষের ঘরবাড়ি। ফলে মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ হয়ে পড়ে গৃহহীন। যদিও সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ঘূর্ণিঝড় কবলিতদের সাহায্য করা হয়, তবু এই সাহায্য যথেষ্ট নয়। এই সাহায্য প্রদান প্রক্রিয়ায় রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব। অনেক সময় দেখা যায়, এই সাহায্য কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছায়ই না।
উপকূলের মানুষের মধ্যে বেড়িবাঁধ ভাঙা বিষয়ে একটি কথা চালু আছে। জানি না সেটা কতটুকু সত্য। তারা বিশ্বাস করেন, এ অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা নিজেদের ঘেরে লোনা পানি তোলার জন্য বেড়িবাঁধে ছিদ্র করে দেন। আর এ ছিদ্রগুলো ধীরে ধীরে বৃদ্ধি বাঁধগুলো ভাঙায় কাজ করে। তবে বাঁধের ভঙ্গুরতায় শুধু চিংড়ি চাষিদের দোষারোপ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই যথাযথ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিও দায়ী। কর্তৃপক্ষের উচিত যে কোনো মূল্যে এসব বাঁধ রক্ষা করা। এ ক্ষেত্রে তাদের উচিত চিংড়ি চাষিদের সচেতন করা এবং চিংড়ি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পানির বিকল্প ব্যবস্থা করা।
বেড়িবাঁধগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিরও অভিযোগ রয়েছে। সবসময়ই দেখা যায় ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পরপরই পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কারের জন্য তোড়জোড় শুরু করে। অথচ সারাবছরই উপকূলের একটি বড় অংশ বাঁধ না থাকার কারণে অরক্ষিত থাকে। এভাবে সংস্কার করা বাঁধ টেকসই হয় না। যে কোনো সময় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বাঁধগুলো ভেঙে প্লাবিত হয়।
প্রতিবছর সরকারি বাজেটের একটি বড় অংশ বরাদ্দ করা হয় দেশের উপকূল রক্ষার জন্য। অথচ দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বরাদ্দকৃত অর্থের বেশিরভাগই লোপাট হয়ে যায়—এমন অভিযোগ গণমাধ্যমে হরহামেশায় প্রকাশিত হয়। ফলে উপকূলবাসী পায় না তাদের বহুল কাঙ্ক্ষিত বেড়িবাঁধ। তারপর নতুন একটি ঘূর্ণিঝড় আসে, আবার প্লাবিত হয় উপকূল। এভাবেই চলতে থাকে বছরের পর বছর।
বেড়িবাঁধ তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ হওয়ার বিষয়ে উপকুলের জনগণ থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চপর্যায় পর্যন্ত সকলেই কমবেশি অবগত থাকা স্বত্বেও কেন এটি বন্ধ হচ্ছে না, তা আমাদের অজানা। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপদস্থদের আন্তরিকতা কামনা করছি।
ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সময়ে টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরির আশ্বাস দেওয়া হলেও কিছুদিন পরই কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভুলে যায় সে আশ্বাসের কথা। অথচ টেকসই বেড়িবাঁধ উপকূলবাসীর প্রাণের দাবি। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য উপকূলের মানুষকে ত্রাণ বা সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে খুবই সামান্য। এ ছাড়া এ নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের মনে রয়েছে অসন্তোষ। ফলে মানুষ ত্রাণ চায় না, তারা চায় টেকসই বেড়িবাঁধ। টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি করা হলে তারা অন্তত ঘূর্ণিঝড়ে পানিবন্দি হওয়ার ভয় থেকে মুক্তি পাবে। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও অনেক কমে আসবে। হারাতে হবে না নিজেদের মাথা গোঁজার শেষ সম্বল।
ইয়াস, আম্ফান এর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ফের ঘূর্নিঝড় অশনি’র চোখ রাঙানীতে আতংকিত সাতক্ষীরার উপকূলের মানুষ। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দুর্বল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানতে পারে দক্ষিণ আন্দামান সাগরের বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস বছরে বারবার সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় এই সমস্ত ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের শঙ্কায় তাই আতংকিত হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর ও আশাশুনির নদী ভাঙ্গন এলাকায় বসাবাসরত সাধারণ জনগণ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় মোট ১ হাজার ৯১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে ২৪০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ষাটের দশকে মাটি দিয়ে তৈরি ওই বেড়িবাঁধ ছিল ১৪ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া। কিন্তু এখন ওই ২৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উচ্চতা ও চওড়ার অর্ধেকও অবশিষ্ট নেই। অর্থাভাবে দীর্ঘদিনেও প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার করতে না পারায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ষাটের দশকে তৈরি ওই বেড়িবাঁধের বেশিরভাগই দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা হারিয়েছে। ফলে বাঁধগুলো ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং নিম্নচাপ, লঘুচাপ, আমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে লোকালয়ে পানি ঢোকা ঠেকাতে পারছে না। দুর্বল এসব বেড়িবাঁধের কারণে বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। তাছাড়া নিম্নচাপ এবং অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারেও বাঁধ উপচিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে পারে। ফলে উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, দেশের উপকূলীয় তিন জেলার বেড়িবাঁধের উচ্চতা ও প্রশস্ততা কম এবং সেগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। তাছাড়া ওই বাঁধ দীর্ঘদিনেও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। লবণাক্ত মাটি দিয়ে উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো তৈরি। উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ নদ-নদীর পানিও লবণাক্ত। লবণাক্ত পানি বেড়িবাঁধের মাটির বন্ডিং দুর্বল করে ফেলে। অতিরিক্ত জোয়ারের পানির চাপে বাঁধের মাটি ধুয়ে যায়। তাছাড়া বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে চিংড়ি ঘেরে লবণপানি তোলার কারণেও বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে। যে কারনে যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াসে দুর্বল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। বাস্তহারা হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। বসতবাড়ি হারিয়ে এলাকা ছেড়েছে অনেকে। ফলে স¤প্রতি সব চেয়ে বড় দুর্যোগ বলে মনে করা হয় নদী ভাঙন। এ নদী ভাঙন যেন উপকূলের মানুষের পিছু ছাড়ছে না। গত বছর আম্পান ঝড়ের পরে উপকূলের মানুষের যে পরিমান ক্ষয় ক্ষতি হয়ে সে গুলো কাটিয়ে উঠতে পারিনি এখনো। তার পর আবার বড় ধারণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার পূবাস শোনা যাচ্ছে। যদি এ আর কোন ঘূর্ণিঝড়ঝড় এ এলাকা দিয়ে বয়ে যায় তাহলে উপকূলের মানুষের চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে।
উপকূলের মানুষের এধারনের দুর্যোগ থেকে পরিত্রান পাওয়ার একমাত্র উপায় হল টেকসই বেড়িবাঁধ নিমাণ করা। ইয়াসের পরে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে কাজ করলেও শুভংকরের ফাঁকি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারা প্রতিষ্ঠান। সঠিক তদারকির অভাবে পাউবো’র কোন কাজই ২৫ থেকে ৩০ শতাংমের বেশি হয় না। ফলে বার বার ভাঙে বেড়িবাঁধ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘূর্নিঝড় ইয়াসের পরে উপকূলের ১৪৯ কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধের ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান রয়েছে। ইয়াসের আগে বুলবুল ঝড়ের পরে ৪৩টা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ছিলো। ইয়াসের পরে ১৪টা পয়েন্টের কাজ হলেও এখনো ভালোভাবে কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। খুব দ্রুত যদি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো কাজ না করা যায় তাহলে সামনে যে ঝড়ের মৌসম আসছে তাতে উপকূলের মানুষ ফের তাদের সর্বস্ব হারাবে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থানের মধ্যে আশাশুনির বিছট, মনিপুর , বাগালি, কোলা-ঘোলা, প্রতাপনগরের একাধিক পয়েন্ট, শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ ৩টি, বুড়িগোয়ালীনি ৫টি, গাবুরায় ২টি, পদ্মপুকুর ৮টি, কাশিমাড়ী ১টি ও আটুলিয়ায় ১টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
মুন্সীগঞ্জ বড় ভেটখালী গ্রামের সাইফুল ও রবি সরদার বলেন, আম্পানের সময় বড় ভেটখালির গোড়া ভাঙন দেখা দেয়। তারপরে সেটা ঠিক করা হয়নি। সামনে যে ঝড় আসছে সে ঝড়ের আগে যদি এ ভাঙনে কাজ করা না হয় তাহলে বাঁধ ভেঙে যাবে। ক্ষতি এলাকার হাজার হাজার বিঘার জমির মৎস্য সম্পদ। হরিনগর সিংহড়তলী গ্রামের বিশ্বজিত রায় বলেন, ইয়াসের পরে সিংহড়তলীর ভাঙন দেখা দেয় পানি উন্নয় বোডের্র লোকদের বলার পরে কাজ করিনি।
বুড়িগোয়ালীনির দূর্গাবাটি গ্রামের দিনেশ মন্ডল ও রতি রাণী বলেন, ইয়াসের সময় বাঁধ ভেঙে ঘর বাড়ি সব পানি উঠে গাছ পালা নষ্ট হয়ে গেছে। আবার শুনছি আবার ঝড়ের মৌসুম শুরু বিভিন্ন নামের ঝড় আসবে। আমরা সরকারের কাছে ত্রাণ চাই না চাই টেকসই মজবুত ভেড়িবাঁধ এই ভেড়িবার না থাকলে আমরা বসবাস করবো কি করে সেজন্য টেকসই মজবুতাদের অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে আমাদের উপকূলীয় এলাকায়। আমাদের বেড়িবাঁধগুলো ঠিক করে দিলে আর পানিতে ভাসতাম না। এবার যদি পানি ঢোকে তাহলে কথায় যাব।
মুন্সীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত সিরাজুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, মুন্সীগঞ্জে ৩টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আমি বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বলার পরেও তারা কাজ করছে না। সামনে যে যে সমস্ত ঝড় আসছে এই ঝড়ে অনেক জায়গা ভাঙার আশঙ্কা আছে। এক্ষুনি সেই সমস্ত জায়গায় জিও বস্তা ডাম্পে না করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ডালিম ঘরামী বলেন, আম্পানের রেশ কাটতে না কাটতে আবার মৌসুমী নানা রকম ঘূর্ণিঝড়ের নামের এবং আভাস শোনা যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকা নদী বেষ্ঠিত। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সম্মূখিন হতে হয়। সরকারি মহল থেকে বারবার আশ্বাস প্রদান করলেও তা বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না। যে কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে সব সময় আতঙ্কিত থাকি।
বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট আছে। পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আমজাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নটা দ্বীপ ইউনিয়ন। এখানে ২৮ কিলোমিটারের মধ্যে ৮টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তাড়াতাড়ি কাজ না করলে সামনে ঝড়ে মৌসুম আবার ভেঙে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া আমাদের বড় সমস্যা হল বেড়িবাধের অংশ আশাশুনির মধ্যে। যে কারণে আমাদের দাবি সঠিক পূরুণ হয় না।
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য বিছট গ্রামের আব্দুল হাকিম মোড়ল বলেন, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুকিপূর্ন। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই এই বাঁধ চাপিয়ে ভিতরে পানি ঢুকবে। বাঁেধর পাশে বসবাসরত গ্রামবাসীরা সব সময় নদী ভাঙনের অতংকে থাকে। দ্রæত এই বাঁধ মেরামত করা না হলে যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুরো বাঁ ভেঙে যাবে। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিছট গ্রামের শতাধিক পরিবার বসতবাড়ি হারিয়ে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের পাশে টোঙ ঘর বেধে বসবাস করছে।
এ বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশলী সালাহউদ্দিন আহমেদ এই প্রতিবেদক কে বলেন, আমরা যেকোনো ঝড়ের জন্য সব সময় সম্পর্ণ প্রস্তুত থাকি। পর্যপ্ত জিআইও ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র রেডি আছে। অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ চলমান রয়েছে এবং অনেক কাজ হয়ে গেছে। বছরের ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম শুরু হয়েছে সে কারণে আমরা অগ্রিম জিও বস্তা ও বরাদ্দসে মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত