By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: উপকূলে বাঁধের ফাঁদ, কতকাল?
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > উপকূলে বাঁধের ফাঁদ, কতকাল?
তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলে বাঁধের ফাঁদ, কতকাল?

Last updated: 2025/10/25 at 4:11 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ‌: আম্পানে ভেসে গেল বাড়িঘর, চিংড়ি ঘের, ফসলি জমি—সবকিছু। মানুষগুলো আবার নিঃস্ব হয়ে পড়ল। একজন বললেন, কী দরকার ছিল তেল খরচ করে আমাদের কাছে এসে আশ্বাস বাণী শোনানোর! আরেকজন বললেন, বাঁধ সারানো হলে আমরা ঠিক বেঁচে যেতাম!
পশ্চিম উপকূলে খুলনার কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির জনপদে কান পাতলে এখন এসব কথা ভেসে আসে। মানুষজন অনেক সমস্যার কথাই বলেন; তার মাঝে ঘুরেফিরে একই কথা। অন্য যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে; তার নেপথ্য কারণ এই নাজুক বাঁধ। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রবল ধাক্কা থেকে বাঁধ রক্ষা করা গেলে তেমন কোন সমস্যা হতো না। বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম পানি ঢুকেছে। মানুষগুলোর পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। হাজার হাজার মানুষ নেমে গেছে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতে। আম্পানের প্রভাব শেষ হওয়ার পর গত সপ্তাহখানেক ধরে চলছে মেরামতের কাজ। খুলনার কয়রা, সাতক্ষীরার গাবুরা, বুড়িগোয়লিনী, কাশিমাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণের ছবি আসছে একের পর এক।
‘আমরা আর কতকাল আশ্বাস বাণী শুনে শুনে অপেক্ষা করবো? জীবন তো শেষ হয়ে গেল।’ -কথাগুলো বলছিলেন গাবুরার বাসিন্দা খান আবু হাসান। নিজ এলাকার বর্ণনা তুলে তিনি বলছিলেন, দেশের মানচিত্রে গাবুরা উপকূলীয় অবহেলিত অঞ্চল। চারিদিকে নদী বেষ্টিত ৩৩ বর্গ কিলোমিটারে দ্বীপ। এখানে ৪৫ হাজার মানুষ প্রতিবছর নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতার কবলে থাকে। মানুষজন জান ও মালের অনিশ্চয়তার মাঝে বসবাস করে আসছে বছরের পর বছর। উপর মহল এটা জানেন; তবুও কোন কাজ হয় না।
স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করছেন উপকূলের বাসিন্দারা
খান আবু হাসানের এই ক্ষোভ ঝরানো কথাগুলো কতটা সত্যি? তার কথার সূত্র ধরে খানিক পেছনে ফিরে গেলেই এর প্রমাণ মিলে। ২০০৯ সালের ২৫ মে। দিনটি ছিল সোমবার। সেদিন প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আইলা প্রলয়ে গাবুরার ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। আইলার পরে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এসেছিলেন। প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন- বাঁধ হবে; সাইক্লোন শেলটার হবে। কিন্তু হয়নি। গত বছর এই এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রলয়। তখন বাঁধ ছিঁড়েনি বটে; কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ একেবারে কম ছিল না। ফণী চলে গেল; এলেন মন্ত্রীদ্বয়। একইভাবে আশ্বাস দিলেন তারাও। এই আশ্বাসের ফলোআপও আছে; অক্টোবরে এলাকা ঘুরে এসেছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্যান্যরা। এতকিছুর পরেও আজ পর্যন্ত সে আশ্বাস গল্পই রয়ে গেছে। আর তারই ফল আম্পানের প্রলয়। এটা আম্পানের ছোট ধাক্কাই বলা যায়; কেননা ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি কমিয়েই পশ্চিম উপকূলে আঘাত হেনেছে।
আম্পানের আঘাতের আগে বহুবার এই দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ঘুরে দেখেছি নাজুক পরিস্থিতি। কোথাও বাঁধ আছে অর্ধেক; কোথাও মোটরবাইক তো দূরের কথা; পায়ে হেঁটে যাওয়াও কঠিন। কোথাও আবার দেখেছি স্থানীয় জনসাধারণ নিজেদের উদ্যোগে জোড়াতালি দিয়ে বাঁধ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। এই ইউনিয়নের ধ্বসে যাওয়া যে স্থানগুলোর নাম বার বার সংবাদ মাধ্যমে উচ্চারিত হচ্ছে, সেগুলো আমার চেনা পথ। পারশেমারী, চাঁদনিমুখা, নাপিতখালী, নেবুবুনিয়াসহ আশপাশের এলাকাগুলো কতটা নাজুক অবস্থায় রয়েছে বছরের পর বছর; তার ছবি আমার ফটোফোল্ডারে ঠাসা। স্বাভাবিক জোয়ারেও এসব স্থান জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়। কোথাও বাঁশের পাইলিং, তার ভেতরে আবার পুরানো টিনের টুকরো দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা। দৃশ্যমান সব ছবি। বলা যায় নাজুক বাঁধগুলোও টিকে আছে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ টিকানোর উদ্যোগের মধ্যদিয়ে। এলাকার মানুষেরা বছরের পর বছর প্রকৃতির সঙ্গে অনেকটা লড়াই করেই বাঁধ টিকিয়ে রেখেছে। কিন্তু আম্পান তাদের সর্বনাশ করে দিয়ে গেল।
এতো গেল শুধু গাবুরার কথা। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী, পদ্মপুকুর কাশিমাড়ী, আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া, শ্রীউলা, প্রতাপনগর, খাজরা, খুলনার কয়রা উপজেলার কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী, মহারাজপুর, পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর এবং বাগেরহাটের রামপাল ও শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় গ্রাম, জনপদ, চিংড়ির ঘের, ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। পশ্চিম উপকূল ছাড়াও দক্ষিণের পটুয়াখালী, ভোলা জেলায়ও বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এরফলে এই সময়ের সকল ফসল নষ্ট হয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে চিংড়ির ঘেরে।
সূত্র বলছে, ষাটের দশকে নির্মিত পশ্চিম উপকূলের বাঁধগুলো ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছিল। আশির দশকে এই এলাকায় চিংড়ি চাষের শুরুতে বাঁধ আরও নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এরসঙ্গে লবণপানির ধাক্কা, জোয়ারের পানির প্রবল চাপ এই বাঁধকে নাজুক করে তোলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে এইসব বাঁধ মেরামতের কাজ হলেও যথাযথভাবে কাজ না হওয়ায় বাঁধের এই বেহাল দশা।
সিইআইপি প্রকল্প এলাকার মানচিত্র
এ প্রসঙ্গে পানি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, উপকূল অঞ্চলের বেড়িবাঁধগুলো অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে। এর উচ্চতা অনেক কম। এক সময় ১৫ ফুট উচ্চতার বাঁধ করা হয়েছে। তখন ঘূর্ণিঝড়ের এই প্রভাবের চিন্তা বিবেচনায় ছিল না। আগামীতে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়বে কীনা বলা মুশকিল; তবে জলোচ্ছ্বাসের পানির উচ্চতা বাড়বে; এটা বলা যায়। সে কারণে বাঁধের উচ্চতা অন্তত তিন মিটার বাড়াতে হবে। সমুদ্রের দিকে বাঁধ করতে হবে। এক সময় বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে পানি কমিটি করা হয়েছিল। এখন তা সেভাবে কার্যকর নয়। একে কার্যকর করতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, উপকূলের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার বাঁধ আম্পানের মত ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য উপযুক্ত নয়। প্রতি অর্থ বছরে বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে যে অর্থ বরাদ্দ হয়; তা পর্যাপ্ত নয়। এজন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি বিদেশি সাহায্য নিয়ে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ার দাবি করেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজে যেসব দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ আছে; তা আগের চেয়ে অনেকটাই কমে এসেছে। দুর্নীতি রোধে নানামূখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন স্বচ্ছতার সঙ্গেই সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ের ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ‘কোস্টাল এমব্যাকমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ গ্রহন করে; যা সংক্ষেপে সিইআইপি নামে পরিচিত। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায় ২০১৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু জমি না পাওয়া, নদীর ভাঙন ইত্যাদি কারণে প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। এ প্রকল্পের আওতায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরে বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ব্যয় হচ্ছে ৬৯৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর চ্যালেঞ্জ
এ প্রসঙ্গে কোস্টাল এমব্যাকমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় এলাকায় যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে; তা কমিয়ে আনাই এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। আমরা কাজ করছি। কোন স্থানের কাজ শেষ হয়েছে, কোন স্থানের কাজ কিছু বাকি রয়েছে। বাগেরহাটের শরণখোলায় প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন একটি বাঁধ আম্পান আঘাতের আগেই ধ্বসে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নদীর ভাঙনের কারণে আগে থেকেই সেখানকার অবস্থা নাজুক ছিল। প্রকল্প প্রণয়নের সময়ে নদী শাসনের বিষয়টি বিবেচনায় ছিল না। সে কারণে প্রকল্পের কাজ শেষ হতে বিলম্বিত হচ্ছে। সময় এ বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে; আরও এক বছর বাড়াতে হতে পারে।
সরকারের ডেল্টা পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে দেশের দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় এলাকার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রম। ২৭ হাজার ৭৩৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা উপকূলীয় অঞ্চল দেশের অন্যান্য বিশেষায়িত এলাকা থেকে অনেক বড়। ডেল্টা পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলের বিদ্যমান পোল্ডারের কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঝড়বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ও লবনাক্ততার অনুপ্রবেশ মোকাবেলা করা হবে; পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বন্যার ঝুঁকি হ্রাস করা হবে ইত্যাদি। কিন্তু এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে উপকূলীয় বাঁধ শক্ত ও উঁচু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অথচ বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রকল্প পরিকল্পনা, আবেদন, অনুমোদন এবং বাস্তবায়নেই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাঁধ সংস্কার প্রকল্পগুলো ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
বাঁধের মালিকানা জনগণকে দেওয়ার দাবি তুলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও দুর্যোগ ফোরামের আহবায়ক গওহার নঈম ওয়ারা। তিনি বলেন, দেশের মালিকানা জনগণকে না দিলেও মানুষের জীবন বাঁচাতে অন্তত বাঁধের মালিকানা জনগণকে দিতে হবে। বাঁধ কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে; সেটা জনগণই ঠিক করবে। ভোলার চরফ্যাসনে জনঅংশগ্রহণে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে সুফল পাওয়া গেছে। আর এখন জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ ভেঙে যেসব স্থান দিয়ে পানি ঢুকেছে; অবিলম্বে সে পানি সরাতে হবে। তা না হলে বাঁধের ভেতরের কৃষি নষ্ট হয়ে যাবে। মানুষ চরম সংকটের মুখোমুখি হবে। কৃষিকে আমাদের মূল কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে।
উপকূল অঞ্চলে বিদ্যমান বাঁধগুলোর সংস্কার এবং নতুন বাঁধ তৈরিতে কমিউনিটির নেতৃত্বাধীন বাঁধ তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ক্লাইমেট ফিন্যান্স এনালিষ্ট এম. জাকির হোসেন খান।
তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে বাঁধ সুরক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলে একদিকে যেমন খরচ অনেক কমবে; একইসাথে মানুষের মালিকানা প্রতিষ্ঠা পাবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে তদারকির দায়িত্ব দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধুমাত্র বাঁধের ডিজাইন প্রণয়ন ও স্থানীয় নাগরিকদের কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। যেকোন দুর্যোগে স্থানীয় কমিউনিটিই পারে শত বছরের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কার্যকর প্রাণ ও প্রকৃতি বান্ধব দুর্যোগ সহিষ্ণু টেকসই উন্নয়ন তথা কার্যকর জলবায়ু অভিযোজন নিশ্চিত করতে।
বাঁধ বিপন্ন এলাকার মানুষেরা বলছেন, এ অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভর করে বাঁধের ওপর। বাঁধের ক্ষতি হলে তাদের সব ভেসে যায়। ফসল নষ্ট হয়, বাড়িঘর নষ্ট হয়। জরুরি খাবার না দিয়ে বাঁধটা শক্ত করে বানিয়ে দেওয়ার দাবিটাই তাদের কাছে প্রধান। বাঁধের ফাঁদ জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে।
আমরা উচ্চমানের পরিবেশগত সাংবাদিকতার মাধ্যমে পরিবেশের স্থিতিশীলতার স্থায়িত্ব নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আন্দোলন চলমান তা নিয়ে কাজ করি। আমাদের মিশন বাস্তবায়নে আমরা লেখনীর মাধ্যমে স্থানীয় কণ্ঠস্বরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার প্রয়াসে কাজ করে যাচ্ছি।
দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষার সর্বোত্তম উপায় নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন যে তাদের উভয় বিকল্পেরই প্রযোজ্য।

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার মথুরাপুর গ্রামে বাড়ি নটোবর মালোর। নদীর একেবারেই কাছে নিজের বাড়ি থাকায় খুবই বিপদের মুখে থাকতে হয় তাদের। নদীর ধারে বন্যা থেকে সুরক্ষার জন্য যে বাঁধ দেয়া হয়েছে সেটি প্রতিবছরই মারাত্বকভাবে ভাঙ্গন আর ক্ষয়ের শিকার হয়। তাই এই ক্ষয় রোধে নটোবর মালো প্রতি বছর তার বাড়ির পাশে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগান। কিছু চারা মারা যায়, কিন্তু কিছু চারা বেঁচে থাকে। ভাঙ্গনের হাত থেকে নিজের বাড়ি রক্ষা করতে তাকে ম্যানগ্রোভের যত্ন নিতে হয়।
নটোবরের বাড়ির ঠিক আরপাঙ্গাশিয়া নদীর তীরে। নদীটি এখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে জোয়ার বেশি হওয়ায় দিন দিন নটোবর মালোর বাড়িটি বাঁচানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। কিন্তু বাস্তুভিটা তো বাঁচাতেই হবে। তাই ক্রমাগত চেষ্টা  চালিয়ে যাচ্ছে মালো। তাদের বাড়ির আরেক দিকেই মালঞ্চ নদী – এটি গঙ্গার একটি শাখা নদী। মালঞ্চের তীরেই বিশ্বের  বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অবস্থান। তাই অতিরিক্ত কোনো চেষ্টা ছাড়াই নটোবর মালো জঙ্গল থেকে ম্যানগ্রোভের চারা সংগ্রহ করতে পারেন। তেমন বেগ পেতে হয়না।
সরকার অবশ্য উপকূল রক্ষায় ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। বাংলাদেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলায় ৫,৮১০ কিলোমিটার দীর্ঘ মাটির বেড়িবাঁধ নির্মান। এটি দীর্ঘ বাঁধ ১৯৬০ সালে উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্প (সিইপি) এর অংশ হিসাবে নির্মান করা হয় যা পরবর্তীতে  উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পে (সিইআইপি) রূপান্তরিত হয়।
কিন্তু বেড়িবাঁধে ফাটল বা ভাঙ্গন এখানে একটি নিত্য সমস্যা। পরিস্থিতি আরও খারাপ পর্যায়ে যায় যখন একটি বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের পরই বাঁধের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গে। ২০০৯ সালে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমের তিনটি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বাগেরহাট  ঘূর্ণিঝড় আইলার কারনে ৬৮৩ কিলোমিটার এবং২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় ৪৭৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মারাত্মকভাবে ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। ফলে উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বহু দিন ধরেই নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ এবং উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে এখানকার ভূমি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ বনাম ম্যানগ্রোভ সৃজন নিয়ে চলছে বিতর্ক। অনেকেই বলছেন  ম্যানগ্রোভ সৃজনের ফলে মাটি সুরক্ষিত হয়।
সিইআইপি প্রকল্পের আওতায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি) খুলনা ও বরিশালে বাঁধ মেরামত ও শক্তিশালী করতে ৩২.৮  বিলিয়ন টাকা (৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে।
পাশাপাশি সরকার সুন্দরবনের চারপাশের নদীর তীরবর্তী বাঁধ এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজনের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বিষয়টি এগিয়ে নিতে বেশ কিছু  বেসরকারি সংস্থাও ম্যানগ্রোভ রোপণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
এ অবস্থায় উপকূল রক্ষায় সরকারের বাঁধ, না বাদাবন (ম্যানগ্রোভ) কোনটি নিয়ে কাজ করা উচিত? কিংবা উপকূল এলাকার সম্পদ আর জনগনের নিরাপত্তার কথা ভেবে উভয় ব্যবস্থাই গ্রহন করা উচিত, এ নিয়ে তর্ক অনেক দিনের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ম্যানগ্রোভ গবেষক মাহমুদ হোসেন দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “ম্যানগ্রোভ মাটির বাঁধকে রক্ষা করে, বিশেষ করে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে।” “এই নদীগুলো উজান থেকে প্রচুর পরিমানে পলি বহন করে। ম্যানগ্রোভ গাছের শিকড়গ এই পলিকে আটকে রেখে  বাঁধগুলোকে শক্তিশালী করে। আমরা যদি সুশৃঙ্খলভাবে উপকূলজুড়ে ম্যানগ্রোভ রোপণ করতে পারি, তাহলে প্রতি বছর বাঁধ মেরামতে এত বেশি অর্থ খরচ করতে হতো না।”
একই অভিমত প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত। তিনি বলেন, “যদি আমরা এই পুরো এলাকায় বাঁধের পাশে ম্যানগ্রোভ বনায়ণ করতে পারি, তাহলে তা নদী তীরের বসতবাড়ি আরো ভালোভাবে রক্ষা করতে পারবে।” ““ভৌগলিকভাবে ব-দ্বীপ বাংলাদেশের প্রায় ৬,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের অবস্থান। গঙ্গা এবং এর উপনদীগুলো বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মেশার পথে নিজেদের প্রবাহের সাথে প্রচুর পরিমানে পলি  বহন করে এনে এই সমভূমির সৃষ্টি করেছে। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের সময় এই নদীর এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। পলি বেড়িবাঁধ অতিক্রম করতে পারে না, তাই সেগুলো নদীর তলদেশে জমা হচ্ছে। অন্যদিকে বাঁধের অন্যপাশে পানি আটকা পড়ছে কৃষি জমিতে। পাশাপাশি এই বাঁধগুলো চিংড়ি চাষ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৫,০০০ কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার বা তার বেশি জুড়ে ম্যানগ্রোভ সৃজন করা হয়েছে।
সিইআইপি প্রকল্পের অধীনে কিছু কিছু এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন শুরু হয়েছে, যেমন খুলনা জেলায় ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজন চলছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলায় বাঁধের পাশে রোপণের জন্য বন বিভাগ থেকে ৫০ হাজার চারা পেয়েছে বিডব্লিউডিবি।
“বাংলাদেশ সরকারের বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন বিভাগের (বাগেরহাট) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম সাজ্জাদ হোসেন দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “আমরা সিইআইপির অধীনে  বাঁধের উপরে ১০০ কিলোমিটারের বেশি ম্যানগ্রোভ বনায়ন করেছি। আমরা বাঁধ ও নদীর মাঝখানে ম্যানগ্রোভ এবং বাঁধের অন্য ঢালে অন্যান্য প্রজাতির গাছ লাগাচ্ছি।
উপকূলীয় এলাকায় বাঁধের নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের জন্য দায়িত্বে থাকে বিডব্লিউডিবি। এই বিভাগের  দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম বলেন, ম্যানগ্রোভ দিয়ে সমস্ত বাঁধ মজবুত করার আগে আসলে আমাদের আরো বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলিতে ৫,০০০  কিলোমিটারের বেশি বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে, ৩০০ কিলোমিটার বা তার বেশি জুড়ে ম্যানগ্রোভ রোপণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে ম্যানগ্রোভ রোপণ সমস্ত বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পের অংশ হিসেবে বলবৎ থাকবে। “নানা কারনে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে; আমরা তাদের মেরামত করে যাচ্ছি। শুধু খুলনা এলাকায়ই ১০০  কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭  কিলোমিটার অরক্ষিত এবং ১৭ কিলোমিটার এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো মেরামত করা জরুরি।”
সাতক্ষীরার শ্যামনগর শহরের আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয় কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী দ্য থার্ড পোলকে বলেন, “মানুষ প্রায় ৬০০ বছর ধরে এই অঞ্চলে কৃষিকাজ করে আসছে; বন্যা এবং অধিক জোয়ার সব সময় এখানকার প্রধান সমস্যা ছিল। [জুন থেকে সেপ্টেম্বর] বর্ষার আগে মানুষ তাদের খামারে বিশুদ্ধ পানি ধরে রাখার জন্য অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করত। এখানে ম্যানগ্রোভগুলি নিজেরাই বেড়ে উঠত তারা মাটিকে একত্রে ধরে রাখত।”
যেহেতু উপকূলের পানি এবং মাটি ক্রমশ লবণাক্ত হয়ে উঠছে এবং কৃষকদের জন্য প্রথাগত ফসল, বিশেষ করে ধান চাষ করা আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই সাম্প্রতিক দশকগুলিতে এই অঞ্চলে লোনা-পানিতে চিংড়ির চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বারবার অভিযোগ উঠেছে যে চিংড়ি চাষীরা বেড়িবাঁধ দিয়ে ড্রিল করে তাদের খামারে নোনা পানি বয়ে আনছে।
Tএই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরা জেলার মুন্সীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা পীযূষ বাউলিয়া। তিনি বলেন, চিংড়ি চাষের জন্য এই এলাকার বাঁধগুলো নির্বিচারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা কেবল বাড়ছেই। আর তাই বাঁধ টিকছে না।
খুলনা জেলার কয়রার বাসিন্দা ইমতিয়াজউদ্দিনও এ ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন। তিনি জাগ্রতো যুব সংঘ নামে স্থানীয় একটি বেসরকারী সংস্থার ২০০৭ সালে পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে বলেন, “শুধুমাত্র এই [কয়রা] উপ-জেলার মধ্যে ৫০০ টিরও বেশি জায়গা খুঁজে পেয়েছিল জাগ্রত যুব সংঘ যেখানে বাঁধ ভিতর দিয়ে পাইপ ড্রিল করে লবন পানি জমির ভিতরে নেয়া হয়।”
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে আরও শক্তিশালী এবং উচু বাঁধের দাবি করে আসছে। এই দাবী ২০২০ সালে ঘটা  ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং ২০২১ সালে ঘটা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর পরে আরো জোরদার হয়। এই ঘূর্ণিঝড়গুলোর পর বহু মানুষ যথােপযুক্ত বাঁধের অভাবে দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ে। কারন বহু বাসিন্দাকে ঘূর্ণিঝড়ের পর নিজেদের বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হতে হয়।  কয়রা এলাকার দক্ষিণ বেদকাশি গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, নদীগুলি এখানে প্রচুর পরিমানে পলি বহন করে, যা নদীর তলদেশে জমা হয়। তাই নদীর তল উঁচু, অন্যদিকে বাঁধের ওপারে বসতিও  কম। বন্যার পানি আটকে যায় এবং আমরা ডুবে মরি। বেড়িবাঁধ না উঠলে আমাদের বাঁচার কোনো উপায় নেই।
স্থানীয় সরকার কয়রায় এই বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছে, যা ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারনে ভেঙ্গে গিয়েছিল (ছবি: গৌরাঙ্গ নন্দী)
ঢাকার বেসরকারী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের ইমেরিটাস প্রফেসর এবং বাংলাদেশের অন্যতম পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত দ্য থার্ড পোলকে বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকাগুলো বেড়িবাঁধ ছাড়া বাঁচানো যাবে না। কিন্তু বেড়িবাঁধ খুব উঁচুতে তোলা যায় না। বাঁধগুলি অক্ষত রেখে  কিছু সমুদ্রের পানি উপকূলীয় অঞ্চলে আসতে দিতে হবে। এর জন্য ম্যানগ্রোভ বাগান সম্প্রসারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, যেখানে সম্ভব হয় কিছি কিছু স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে তাদের ভিতরের অংশে পলি ফেলে মাটির স্তর বাড়াতে যেতে পারে। একে বলা হয় জোয়ার-ভাটা নদী ব্যবস্থাপনা, যা একটি কার্যকর অভিযোজন কৌশল [জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য।
তবে উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ সৃজন বৃদ্ধি করা ভালো বলে মন্তব্য করেন ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক সুনন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কেবল ম্যানগ্রোভ বন্যার পানিকে দূরে রাখতে পারে না, বিশেষ করে যখন ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাত্রা বেশি থাকে, তখন।
অতএব, সার্বিক পর্যালোচনায় একটি বিষয়ে সকলেই একমত হয়েছেন, আর তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলােকে বাঁচাতে বাঁধ ও ম্যানগ্রোভ উভয়কেই আমলে নিয়ে কাজ করতে হবে – প্রয়োজন দু’টিরই।

জন্মভূমি ডেস্ক October 26, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ
Next Article সুন্দরবনের বাঘ কেড়ে নিয়েছে স্বামী, নদী দিয়েছে জুলেখার জীবিকা

দিনপঞ্জি

October 2025
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
« Sep    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি চাষে পিছিয়ে সাতক্ষীরার ‌কৃষকেরা

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 minutes ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবনের বাঘ কেড়ে নিয়েছে স্বামী, নদী দিয়েছে জুলেখার জীবিকা

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলে বাঁধের ফাঁদ, কতকাল?

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি চাষে পিছিয়ে সাতক্ষীরার ‌কৃষকেরা

By জন্মভূমি ডেস্ক 4 minutes ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবনের বাঘ কেড়ে নিয়েছে স্বামী, নদী দিয়েছে জুলেখার জীবিকা

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ

By করেস্পন্ডেন্ট 4 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?